Chinese Phone Ban: চিনা ফোন নিষিদ্ধ হলে ভারতীয় মোবাইল নির্মাতাদের ‘পৌষমাস’, কিন্তু ‘সর্বনাশ’ গ্রাহকদের

Chinese Phone Ban: ভারতে ১২,০০০ টাকার কম মূল্যের চিনা মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করতে চলেছে ভারত সরকার, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। ভারতীয় মোবাইল সংস্থাগুলির উপর এর কী প্রভাব পড়তে পারে?

Chinese Phone Ban: চিনা ফোন নিষিদ্ধ হলে ভারতীয় মোবাইল নির্মাতাদের 'পৌষমাস', কিন্তু 'সর্বনাশ' গ্রাহকদের
ভারতীয় সংস্থাগুলির মুখের হাসি চওড়া করবে এই নিষেধাজ্ঞা, তবে গ্রাহকদের দিতে হবে খেসারত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 12, 2022 | 1:15 PM

নয়া দিল্লি: ভারতে ব্যবসা করা চিনা মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির পুরো কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। সম্প্রতি, বেআইনি অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন বা পিএমএলএ এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট বা ফেমা-র অধীনে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের কঠোর তদন্তের মুখে পড়েছে তারা। প্রথমে ‘শাওমি’ (Xiaomi) তারপর ‘ভিভো’ (VIVO), একের পর এক চিনা সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে ইডি। তাদের দাবি, জনপ্রিয় চিনা মোবাইল ফোন সংস্থাগুলি ভারতের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে। এর উপর আবার খাঁড়ার ঘা হিসেবে, ভারতে ১২,০০০ টাকার কম মূল্যের চিনা মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করতে চলেছে ভারত সরকার, এমনটাই জানিয়েছে ‘ব্লুমবার্গ’। অথচ, বর্তমানে ভারতে মোট যত মোবাইল ফোন বিক্রি হয়, তার এক তৃতীয়াংশেরই দাম ১২,০০০ টাকার নিচে, আর এর মধ্যে চিনা সংস্থার ব্যবসা রয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। এই সকল নিষেধাজ্ঞা ভারতীয় মোবাইল সংস্থাগুলির উপর কী প্রভাব ফেলতে পারে? আসুন দেখে নেওয়া যাক –

নিঃসন্দেহে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে মাইক্রোম্যাক্স, কার্বন ইত্যাদির মতো ভারতীয় মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির মুখের হাসি দেখা যাবে। কারণ, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হলে, ভারতীয় মোবাইল সংস্থাগুলির প্রতিযোগিতা অনেকটা কমবে। ‘ডিক্সন টেকনোলজিস’-এর মতো ভারতের চুক্তি-ভিত্তিক মোবাইল নির্মাতারাও এতে উপকৃত হবে। ইতিমধ্যেই তারা শাওমি, স্যামসাং-এর মতো জনপ্রিয় সংস্থাগলির জন্য হ্যান্ডসেট তৈরি করে। ভারতীয় সংস্থার প্রযুক্তি পেলে তাদের মোবাইল তৈরি করতে সমস্যা হবে না। এর ফলে এই সংস্থাগুলির আয় এবং মুনাফা অনেক গুণে বাড়তে পারে।

মজার বিষয়, এই একই সময়ে ৫জি সক্ষম ফোন তৈরির পরিকল্পনা করছে ‘রিলায়েন্স জিও’। এর আগে টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিতে বিপ্লব এনেছিল রিলায়েন্স জিও। বিনামূল্যে ইনকামিং কল থেকে শুরু করে, প্রতিমাসে সস্তায় ইন্টারনেট ডেটা দানের মতো অনেক বদল এনেছে তারা। আবার একই ধরনের কাহিনির জন্ম দিতে পারে রিলায়েন্স। জিও খুব শীঘ্রই ভারতে ৫জি সক্ষম ফোন আনতে চলেছে। অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্যে ভরপুর এই ফোনটির দাম হতে পারে ৯০০০ থেকে ১২০০০ টাকার মধ্যে। যে দামের চিনা ফোনগুলি নিষিদ্ধ হতে চলেছে। অন্যান্য ভারতীয় ফোন নির্মাতাদেরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে রিলায়েন্স।

কাজেই, এই নিষেধাজ্ঞা ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পকে দারুণভাবে উৎসাহিত করতে পারে। পাশাপাশি এর ফলে ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ নীতিরও প্রসারণ ঘটবে। কারণ, ভারতীয় মোবাইল নির্মাতারা মোবাইল ফোনের বাজারে বড় প্রতিযোগিতা দিতে চলেছে। ভারতীয় সংস্থাগুলির পাশাপাশি অন্যান্য অ-চিনা মোবাইল নির্মাতাদের জন্যও এটি আশীর্বাদ হতে পারে। কারণ, বিশ্বের মধ্যে ভারত হল মোবাইল ফোনের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। চিনা মোবাইল সংস্থাগুলির সরে গেলে অন্যান্য ব্র্যান্ডের প্রবেশের জায়গা সাফ হয়ে যাবে। তবে একটি মুদ্রার তো দুটি দিক থাকে। এই নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতি হতে পারে গ্রাহকদের। চিনা মোবাইল ফোনগুলি যে সাশ্রয়ী দামে বিভিন্ন অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য যুক্ত ফোন দেয়, তা আর কোনও সংস্থা দেয় না। ভারতীয় সংস্থাগুলির তৈরি মোবাইলে এই বৈশিষ্টগুলির অভাব রয়েছে। অন্যদিকে আমেরিকান এবং কোরিয়ান সংস্থাগুলির ফোনে এই বৈশিষ্টগুলি থাকলেও, সেগুলির দাম অনেক বেশি।