Quantum Computer: ৬ মাসের কাজ শেষ ৬ সেকেন্ডে, হ্য়াক অসম্ভব! কেমন হবে ভারতের কোয়ান্টম কম্পিউটিংয়ের ভবিষ্যৎ?
National Quantum Project: কোয়ান্টাম কম্পিউটিং দুনিয়ায় ঢুকতে ‘জাতীয় কোয়ান্টাম মিশন’ ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। জাতীয় কোয়ান্টাম মিশনে বরাদ্দ করা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা।
নয়া দিল্লি: সাধারণ মানুষের জীবনে বিপ্লব এনেছিল কম্পিউটার। কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবন, সমস্ত ক্ষেত্রেই ব্যাপক পরিবর্তন এসেছিল কম্পিউটারের দৌলতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটারের প্রযুক্তিগত উন্নতির পাশাপাশি ভোলবদলও হয়েছে। আবিষ্কারের সময়ে কম্পিউটারের আকৃতি বিশালাকার ছিল। বর্তমানে তা ছোট হতে হতে ২৪ ইঞ্চিতে সীমাবদ্ধ হয়েছে। তবে উন্নয়নের গতি এখানেই থমকে নেই। আজ থেকে সাড়ে তিনশো বছর পর কেমন হবে কম্পিউটারের চেহারা? সেই কম্পিউটারের ক্ষমতাই বা কতটা থাকবে? সুপার কম্পিউটারের সবচেয়ে শক্তিশালী ভার্সনের থেকেও লক্ষ গুণ শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার। এই বিপুল ক্ষমতাযু্ক্ত কম্পিউটার তৈরির কর্মযজ্ঞে নামছে ভারত। এর জন্য লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে ২০৩০-৩১ সাল। অর্থাত্ আগামী ৬ থেকে ৭ বছরের মধ্যে উচ্চক্ষমতার কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে নামছেন দেশের বিজ্ঞানীরা।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং দুনিয়ায় ঢুকতে ‘জাতীয় কোয়ান্টাম মিশন’ ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। জাতীয় কোয়ান্টাম মিশনে বরাদ্দ করা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। লক্ষ্য, ১০০ কিউবিটেক কম্পিউটার তৈরি করা। এবার প্রশ্ন, কোয়ান্টাম মিশনে হবে টা কী? সহজ কথায় বলতে গেলে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি হবে। তবে সেই কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারের থেকে অনেক আলাদা। গান শোনা, সিনেমা দেখা বা অফিসের কাজ করার জন্য এই কম্পিউটার তৈরি করা হবে না। যে সমস্ত সমস্যার সমাধান এখনও করা যায়নি, সেই সব সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাবে, সমাধান করবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার।
কোয়ান্টাম কম্পিউটারে তিনটি বৈশিষ্ট্য থাকতেই হবে-
১. অনেক দ্রুত যে কোনও তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারবে ২. যে কোনও সমস্যাকে চিহ্নিত করে সমাধান করবে ৩. কোনওভাবেই হ্যাক করা সম্ভব হবে না
উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, স্যাটেলাইটের পাঠানো যে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এখন ৬ মাস লাগে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার সেটাই করে ফেলবে ৬ সেকেন্ডের কম সময়ে। রোবটের প্রোগ্রামিং করতে সময় নেবে ২৫ সেকেন্ডেরও কম। রকেট পাঠানোর আগে তথ্য বিশ্লেষণ করে বলে দেবে, মহাকাশের পথে কী বিপদ আসতে পারে, কীভাবে তা এড়ানো যাবে।
এই প্রযুক্তির সাহায্যে এমন যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব, যা হ্যাক করতে তিন লক্ষ বছর সময় লেগে যাবে। চিকিত্সা, অনলাইন জালিয়াতি, পরিচয়পত্র জাল হওয়ার মতো সমস্যাতেও স্থায়ী সমাধান বের করতে পারবে কোয়ান্টম কম্পিউটার।
এই মুহূর্তে আমেরিকা, চিন, কানাডা, ফ্রান্সের পাশাপাশি অস্ট্রিয়া ও ফিনল্যান্ডে কোয়ান্টাম প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে। আমেরিকার দাবি, তারা কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। তবে তার চেহারা বা ক্ষমতা কেমন হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ভারতেও কোয়ান্টাম কম্পিউটার নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। বিগত ৪ -৫ বছর ধরেই বিষয়টি নিয়ে পড়ে রয়েছেন বিজ্ঞানীদের একটি অংশ। কোন কোন ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম কম্পিউটার কাজে লাগানো সম্ভব, তা চিহ্নিত করার কাজ অনেকটা এগিয়েছে। ২৭টি প্রয়োগ ক্ষেত্র নিয়ে গবেষণার জন্য ইজ়রায়েলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই চুক্তি করেছে কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রক। অর্থাত্ ভিত শক্ত করেই কোয়ান্টামের অসীম, অনন্ত জগতে পা রাখছে ভারত।