AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Duckback: রেইনকোট মানেই ‘ডাকব্যাক’, জানেন কী কারণে তৈরি হয়েছিল এই শতবর্ষ পুরনো সংস্থা? রয়েছে স্বাধীনতার সঙ্গে যোগও

Duckback: তিনি সুরেন্দ্রমোহন বসু। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হতে তৈরি করেছিলেন আজকের ডাকব্যাক কোম্পানি। ১৯২০ সালে এই সংস্থা তৈরি করেন তিনি।

Duckback: রেইনকোট মানেই 'ডাকব্যাক', জানেন কী কারণে তৈরি হয়েছিল এই শতবর্ষ পুরনো সংস্থা? রয়েছে স্বাধীনতার সঙ্গে যোগও
ডাকব্যাকের পুরনো বিজ্ঞাপন
| Updated on: Jan 14, 2025 | 11:08 PM
Share

কলকাতা: ব্রিটিশদের সঙ্গে লড়তে গান্ধীজীর হাতিয়ার ছিল অহিংসা। কিন্তু ভারতীয়দের নাকানিচোবানি খাওয়াতে তলে তলে কার্যত গোটা পণ্য বাজার দখল করে নিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। যেটাই কিনতে যাবেন, সেটাই বিদেশি। দেশীয় বাজারে তৈরি জিনিসপত্র হটিয়ে কার্যত গোটা বঙ্গ প্রদেশ তথা ভারতের বাজারে নিজেদের একাধিপত্য কায়েম করেছিলেন তারা। আর দাম? সে তো আকাশছোঁয়া। সামান্য জিনিস কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল সাধারণ মানুষকে।

এমতাবস্থায়, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নিভৃতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন একজন। পণ্য বাজার থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে হটাতে নেমে গিয়েছিলেন ব্যবসায়। দেশীয় পণ্যের মধ্যে দিয়ে মনও কেড়ে ছিলেন সাধারণের। জমি শক্ত করেছিলেন স্বদেশি আন্দোলনের।

তিনি সুরেন্দ্রমোহন বসু। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হতে তৈরি করেছিলেন আজকের ডাকব্যাক কোম্পানি। ১৯২০ সালে এই সংস্থা তৈরি করেন তিনি।

‘ওয়াটার অফ এ ডাক’স ব্যাক’, অতি প্রচলিত ইংরেজি বাগধারা থেকেই নিজের সংস্থার নাম ও স্লোগান তৈরি করেছিলেন সুরেন্দ্রমোহন। যার অর্থ, হাঁস শরীর থেকে জল ঝেড়ে ফেললেই পালকে আর জলের লেশমাত্র থাকে না।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আধিপত্য ঠেকাতে ওয়াটারপ্রুফের ব্যবসা খুলেছিলেন সুরেন্দ্রনাথ। বিক্রি করতেন রেইনকোট। কিন্তু সব ছেড়ে হঠাৎ কেন এই ওয়াটারপ্রুফের ব্যবসা? জানা যায়, ব্রিটিশদের পণ্য বাজার থেকে হটানোই মূল লক্ষ্য ছিল না সুরেন্দ্রমোহনের। ওয়াটারপ্রুফের ব্যবসা শুরুর পিছনে ছিল এক জাতীয়তাবাদী কারণও।

তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সবে শেষ হয়েছে। নানা রকম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এক দফা জেলও খেটে ফেলেছেন সুরেন্দ্রমোহন। গরাদের পিছনে থাকাকালীনই তিনি জানতে পারেন কীভাবে ভারী বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সেনাদের টহলদারি করে যেতে হয়। যুদ্ধে নামতে হয়। ব্রিটিশ শাসনকাল হলেও সেই সময় সেনার নিম্নপদে ভারতীয়দেরই রাখতেন তারা। বিপদে-আপদে কিংবা এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে এই ভারতীয়দেরই সম্মুখ সমরে কার্যত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দিত ব্রিটিশ উচ্চ পদাধিকারী সেনা আধিকারিকরা।

সেনাদের এই রকম নানা সমস্যার কথা জেনে অনেকটাই ভেঙে পড়েন সুরেন্দ্রমোহন। সিদ্ধান্ত নেন সেনাদের পাশে দাঁড়ানোর। আর তারপরই শুরু রেইনকোট সংস্থা ডাকব্যাক। পরবর্তীকালে কোম্পানির নাম বদলে হয় বেঙ্গল ওয়াটারপ্রুফ লিমিটেড। কিন্তু ততদিনে মানুষের মনে বসে গিয়েছে, রেইনকোট মানেই ডাকব্যাক।

কারামুক্তির পর ভাই অজিতমোহন, যোগেন্দ্রমোহন ও বিষ্ণপদকে নিয়ে নিজের বাড়িতেই কারখানা তৈরি করে রেইনকোট বানানো শুরু করেছিলেন সুরেন্দ্রমোহন। কয়েক মাসের মধ্যে বাংলার বাজারে শুরু হয় কম দামে, ভাল মানের বর্ষাতি বিক্রি। সেনা ছাড়াও সাধারণ মানুষের মনের মধ্যেও জায়গা তৈরি করে ফেলে ডাকব্যাক।

কিন্তু সময়ের দোলাচলে এখন অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে এই সংস্থা। বন্ধ হয়েছে একের পর এক কারখানা। এক কালে ডাকব্য়াকের বন্ধে পিছনে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাম সরকারের দিকেই আঙুল তুলতেন তৃণমূল বিধায়করা। সময় বদলেছে, সরকার বদলেছে, শুধু পিছনে পড়ে গিয়েছে স্বদেশি আন্দোলনের অন্যতম মুখ ‘ডাকব্যাক’।