Online Fraud: অনলাইন জালিয়াতি সব থেকে বেশি হয় এই সময়ে, চোখ-কান খোলা না রাখলেই বিপদ

Fraudsters prefer banking hours: অনেকক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সময়ে জালিয়াতির ছক কষলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের মনে সন্দেহের অবকাশও কম হয়। আর যতক্ষণে তিনি বুঝতে পারবেন কী হয়েছে, ততক্ষণে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব।

Online Fraud: অনলাইন জালিয়াতি সব থেকে বেশি হয় এই সময়ে, চোখ-কান খোলা না রাখলেই বিপদ
নেতামন্ত্রিদের নাম করে টাকা হাতানোর অভিযোগ। প্রতীকী চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2021 | 4:14 PM

নয়া দিল্লি: করোনা অতিমারির প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর থেকেই ফের অনেকটা চাঙ্গা হয়েছে অর্থনীতি। তাল মিলিয়ে পরিষেবা বাড়িয়েছে ব্যাঙ্কগুলিও। অনেক ব্যাঙ্কই তাদের গ্রাহক পরিষেবার সময়সীমা বাড়িয়ে সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত করেছে। বেড়েছে অনলাইন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। আর এই সবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অনলাইন জালিয়াতিও।

আর এই অনলাইন ব্যাঙ্ক জালিয়াতির সঙ্গে যারা যুক্ত তারাও নিজেদের পছন্দের সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সময়কেই। অর্থাৎ, সকাল ৭ টা থেকে সন্ধে ৭ টা। এই সময়ের মধ্যেইও বেশিরভাগ মানুষ অনলাইন জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। অনেকক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সময়ে জালিয়াতির ছক কষলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের মনে সন্দেহের অবকাশও কম হয়। আর যতক্ষণে তিনি বুঝতে পারবেন কী হয়েছে, ততক্ষণে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব।

সম্প্রতি ভারতের প্রথম সারির এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের সমীক্ষায় এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, মোট অনলাইন জালিয়াতির ৭০ শতাংশই ঘটেছে এই ১২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে। মূলত করোনা অতিমারির প্রাদুর্ভাবের সময় থেকেই নিজেদের দাঁত – নখ বের করতে শুরু করেছিল অনলাইন জালিয়াতরা। তারপর থেকে যত সময় এগিয়েছে, তত নিজের চরিত্র বদল করেছে অনলাইন জালিয়াতি। আর এখন তো এমন নতুন নতুন কৌশলে কুকর্ম করা হচ্ছে, যাতে যিনি শিকার হচ্ছেন তাঁর মনে কোনওরকম সন্দেহের অবকাশই জাগছে না।

সাম্প্রতিককালে, টাকা লেনদেনের জন্য ব্যাঙ্কের শাখাগুলির উপর নির্ভরশীলতা অনেকটাই কমেছে। নেহাৎ খুব প্রয়োজন না পড়লে ব্যাঙ্কমুখী হচ্ছেন না গ্রাহকরা। বরং, টানা লেনদেনের জন্য ডিজিটাল বা অনলাইন মাধ্যমগুলিই এখন সবার প্রথম পছন্দ। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, তড়তড়িয়ে বাড়ছে ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবহার। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে ৪৪.২ শতাংশ বেড়েছিল ডিজিটাল পেমেন্ট। আর ২০২০-২১ আর্থিক বছরে তা আরও ২৬.২ শতাংশ বেড়েছে। আর একইসঙ্গে বাড়তি ঝুঁকিও।

এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের রিস্ক ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগের প্রধান মনীশ আগরওয়ালের মতে, এই ধরনের জালিয়াতরা খুব বেশি প্রযুক্তির উপর খুব একটা নির্ভর করে থাকে না। হ্যাকিংও তুলনামূলকভাবে কম। আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমেই অনলাইন জালিয়াতি হচ্ছে। আর এই ধরনের কুকর্মের সঙ্গ যারা যুক্ত, তারা দৈনন্দিন ঘটনাপ্রবাহ এবং কখন কী নতুন নিয়ম কানুনের কথা বলা হচ্ছে, সেই সব সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। আর এগুলিকে হাতিয়ার করেই নিজেদের শিকারের জন্য টোপ ফেলে তারা।

তিনি আরও জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ধরনের জালিয়াতির শিকার হন মেট্রো শহর এবং তাঁর আশেপাশের এলাকাগুলির মানুষরা। আর এদের টাকা হাতানোর ‘মোডাস অপারেন্ডি’ হল সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যিনি শিকার হচ্ছেন, তাঁকে কোনওরকম লটারি জেতার প্রলোভন দেখানো হয়, আবার কখনও ‘রিডিম পয়েন্টেস’ লোভ দেখানো হয়। আর সবথেকে আকছাড় যে বিষয়টি হয়, তা হল গ্রাহককে কেওয়াইসি আপডেটের জন্য তাড়া দেওয়া। কেওয়াইসি আপডেট না হলেই নাকি অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। আবার অনেক সময় আনভেরিফায়েড ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে কোনও কিছু লেনদেন করলেও একইরকমভাবে অনলাইন প্রতারণার শিকার হতে হয়েছে অনেককে।

আর যত এই ধরনের অনলাইন প্রতারণা হয়, তার ৬৫-৭০ শতাংশ হয়ে থাকে সকাল ৭ টা থেকে সন্ধে ৭ টার মধ্যে। কারণ, এই সময়টা হল ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সময়। আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিশ্বাস আদায় করে নেয় প্রতারকরা। আর কাজের সময়ে ফোন করলে, সেই কথা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য বলেও মনে করেন অনেকে। আর ব্যাস, তখনও ঝোপ বুঝে কোপ মারে প্রতারক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই অ্যাকাউন্ট ফাঁকা।

আর অনলাইন জালিয়াতির শিকার সবথেকে বেশি হন ২২ থেকে ৫০ বছর বয়সি ব্যক্তিরা। মূলত এই বয়সের মানুষরাই প্রযুক্তিগত, বিশেষ করে অনলাইন মাধ্যমকে বেশি করে ব্যবহার করেন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতারিতদের প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ মানুষ এই বয়সের। আর ৮০-৯০ শতাংশ প্রতারণা হয় গ্রাহকদের অসতর্কতার জন্য। অনেক সময় কোনওরকম তথ্য প্রতারককে না জানিয়েও টাকা খুইয়ে ফেলছেন গ্রাহকরা। অনেকক্ষেত্রে কোনওরকম সাহায্য করার অছিলায় গ্রাহককে মোবাইলে একটি অ্যাপ ইনস্টল করতে বলছে প্রতারক। আর সেই অ্যাপটি ইনস্টল করলেই মোবাইলের যাবতীয় তথ্য চলে যাচ্ছে প্রতারকের হাতের মুঠোয়।

আরও পড়ুন: Air India Disinvestment: নিলাম সংক্রান্ত তথ্য ভুল! এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে কি ‘ঘর-ওয়াপসি’ হচ্ছে না এয়ার ইন্ডিয়ার?