Ratan Tata: অম্বানী-আদানিদের মতো ধনকুবেরদের তালিকায় কখনই ছিল না রতন টাটার নাম, কেন বলুন তো?
Ratan Tata: কমপক্ষে ২৯টি তালিকাভুক্ত এবং আরও বেশ কয়েকটি তালিকা বহির্ভুত সংস্থা রয়েছে তাদের। আর রতন টাটা ছিলেন ভারতের সবথেকে জনপ্রিয় এবং সম্মানীয় বিজনেস টাইকুন। ১৯৯০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তিনি। কিন্তু, তারপরও ফোর্বস-এর ধনকুবেরদের তালিকায় কখনও দেখা যায়নি তাঁর নাম। ভারতীয় ধনকুবেরদের আলোচনা হলে, আসে মুকেশ অম্বানি, গৌতম আদানিদের নাম। কেন বলুন তো?

মুম্বই: ভারতের শিল্প-বাণিজ্য জগতে মহীরুহ পতন। ৮৬ বছর বয়সে প্রয়াত রতন টাটা। ধাতু ও খনি, তথ্যপ্রযুক্তি, রিটেইলস, গাড়ি, হোটেল, রাসায়নিক, পরিবহন, ইউটিলিটির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে রয়েছে টাটা গোষ্ঠীর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য। কমপক্ষে ২৯টি তালিকাভুক্ত এবং আরও বেশ কয়েকটি তালিকা বহির্ভুত সংস্থা রয়েছে তাদের। আর রতন টাটা ছিলেন ভারতের সবথেকে জনপ্রিয় এবং সম্মানীয় বিজনেস টাইকুন। প্রখর ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তার পাশাপাশি, তাঁর জনহিতকর কর্মকাণ্ড, মানবতাবাদী কর্মকাণ্ডর জোরে ব্যবসা জগতে তিনি এক ব্যতিক্রমী জায়গা করে নিয়েছিলেন। ১৯৯০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদে ছিলেন রতন টাটা। ২০১৬-র অক্টোবর থেকে ২০১৭-র ফেব্রুয়ারি পর্যন্তও এই গোষ্ঠীর অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ২০১২-য় অবসরের পর, টাটা গোষ্ঠীর কোনও পদে না থাকলেও এই গোষ্ঠীর দাতব্য ট্রাস্টের প্রধান পদে ছিলেন তিনি। কিন্তু, তারপরও ফোর্বস বা অন্য কোনও সংস্খার ধনকুবেরদের তালিকায় কখনও দেখা যেত না তাঁর নাম। ভারতীয় ধনকুবেরদের নিয়ে আলোচনা হলে, শুধুই আসত মুকেশ অম্বানি, গৌতম আদানিদের নাম। রতন টাটার নাম কখনও উচ্চারিত হয়নি, কেন বলুন তো?
আইআইএফএল ওয়েলথ হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২২ অনুযায়ী, ভারতের ধনকুবেরদের তালিকায় ৪২১তম স্থানে ছিলেন রতন টাটা। তাঁদের হিসেব অনুসারে, রতন টাটার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল, ৩,৮০০ কোটি টাকা। ২০২১ সালে তিনি ছিলেন এই তালিকার ৪৩৩তম স্থানে। সেই সময় তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩,৫০০ কোটি টাকা। মুকেশ অম্বানি বা গৌতম আদানিদের সঙ্গে তুলনাতেই আসবেন না। তাঁদের সম্পদ গণনা হয় লক্ষ কোটি টাকায়। অথচ, ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত টাটা গোষ্ঠীর সামগ্রিক মূলধন ছিল ২৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে, টাটা সংস্থাগুলির সম্মিলিত আয় ছিল ৯.৬ লক্ষ কোটি টাকা। তাহলে কেন অম্বানী-আদানিদের সঙ্গে সম্পদের প্রতিযোগিতায় কেন এতটা পিছিয়ে ছিলেন রতন টাটা?
আসলে রতন টাটার সম্পদের সিংহভাগই এসেছিল ‘টাটা সন্স’ সংস্থা থেকে। টাটা সন্সের লাভের একটা বড় অংশ, টাটা ট্রাস্টের মাধ্যমে জনহিতকর কাজে লাগানো হয়। টাটা সন্সের মুনাফার ৬৬ শতাংশ বরাদ্দ করা হয় টাটা ট্রাস্টের জন্য। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে টাটা গোষ্ঠী শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকা এবং সংস্কৃতি ক্ষেত্রে তহবিল বরাদ্দ করে থাকে। মূলত এই কারণেই, কখনই তাদের নিজস্ব সংস্থার খুব বেশি শেয়ারের মালিকানা টাটাদের হাতে ছিল না। জামসেদজি টাটা নিজেই টাটা গোষ্ঠীর সংবিধানে বলেছিলেন, টাটা সন্স-এ তারা যা উপার্জন করবেন, তার বেশিরভাগই টাটা ট্রাস্টে দান করা হবে। আর এই কারণেই, ধনদৌলতের পরিমাণে কখনই অম্বানী-আদানিদের কাছাকাছি পৌঁছতে না পারলেও, ১৪০ কোটি ভারতীয়র হৃদয় জয় করেছিলেন রতন টাটা।





