Asansol Municipal Election: চা-ওয়ালা থেকে মুদি দোকানদার, ‘আম আদমি’কে প্রার্থী করে চমক বিজেপির
Asansol Municipal Election: বিজেপির দাবি, তৃণমূল সরকার মা-মাটি -মানুষের থেকে দূরে সরে গিয়েছে। আর বিজেপির প্রার্থী তালিকায় যাঁরা আছেন, তাঁরাই মাটির মানুষ।
আসানসোল : একসময় চা বিক্রি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই বিজেপি বরাবরই দাবি করে এসেছে তাদের দলে কোনও ছুৎমার্গ নেই। আর এবার আসন্ন পুরভোটে (Municipal Corporation Election) সেরকমই এক চা বিক্রেতা প্রার্থী করে চমক দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি (BJP)। শুধু চা বিক্রেতাই নয়, আসানসোল (Asansol) পুর নির্বাচনে এবার বিজেপির তরফে টিকিট দেওয়া হয়েছে, মুদি দোকানদার, টোটো চালককেও। বিজেপির দাবি, নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মানুষকেই এবার নির্বাচনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক বিজেপি নেতার কথায়, একজন চা বিক্রেতা যদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তাহলে কাউন্সিলর নয় কেন! সাধারণ দলীয় কর্মীরাই এবার পুরলড়াইয়ে বিজেপির অন্যতম যোদ্ধা। এবার এই টিকিট তাঁদের কাছে কার্যত অপ্রত্যাশিত ছিল। তবে টিকিট পেয়ে এলাকার উন্নয়নের আশ্বাস শোনা যাচ্ছে তাঁদের মুখে।
ক্রেতাদের ভোটের আবেদন জানাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী সন্তু
আসানসোল পুরনিগমের ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের বড় ছেলে তিনি। তাঁর ওপরেই সংসার চালানোর দায়। কুলটির মিঠানিতে তিনি মুদিখানা দোকান চালান। বাবা, মা ও ভাইকে নিয়ে তাঁর সংসার। দশ বছর ধরে বিজেপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন বছর তিরিশের সন্তু। দলীয় মণ্ডলের দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন। তবে টিকিট পাবেন, তা প্রত্যাশিত ছিল না। এবার কঠিন লড়াই তাঁর।
ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। ১৫ বছরের বিধায়ক ও ২০ বছরের পুরচেয়ারম্যান তিনি। সিপিআইএমের প্রার্থীও ১৫ বছরে ধরে কাউন্সিলর ছিলেন পাশের ওয়ার্ডে। তবু বিজেপি প্রার্থী সন্তু জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ী। ওয়ার্ডের অনুন্নয়নই তাঁর প্রচারের হাতিয়ার। মুদিখানা দোকান চালানোর ফাঁকেই গ্রাহকদের কাছে ভোটের আবেদন করছেন তিনি।
সারা বছর ধরে মানুষের সঙ্গে থাকেন চা-বিক্রেতা কাঞ্চন
অন্যদিকে পুরনিগমের ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন কাঞ্চন সিনহা। পেশায় তিনি চা বিক্রেতা। নিয়ামতপুর ইস্কো বাইপাশের ধারে ছোট্ট চায়ের দোকান রয়েছে তাঁর। দলের সঙ্গে তিনি যুক্ত ৮ বছর ধরে। মণ্ডলের সহ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। চায়ের দোকান চালানোর ফাঁকেই চালাচ্ছেন প্রচার।
কাঞ্চনের দাবি সারা বছর ধরে মানুষের সঙ্গে থাকেন। তিনি জানান, বহু মানুষের বিধবা ভাতা থেকে অন্যান্য ভাতা পাওয়ার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র জমা দিতে হয়, তাতে সাহায্য করেন তিনি। তাঁর প্রতিপক্ষ ১৫ বছরের কাউন্সিলর অভিজ্ঞ বাদল পুইতণ্ডি।
কাঞ্চনের অভিযোগ নস্যাৎ করে বাদল পুইতণ্ডি বলেন, ‘ও আমার ছোট ভাইয়ের মতো। ও জানে কী কাজ হয়েছে।’ তবে কিছু কাজ যে বাকি রয়েছে, সে কথাও স্বীকার করেন নেন তিনি। একসময়, তৃণমূলে ছিলেন কাঞ্চন। বাদল পুইতণ্ডির হাত ধরে সক্রিয় রাজনীতিও করেছেন তিনি।
কাঞ্চন চা বিক্রেতা হলেও তিনি তাইকুণ্ডুতে রাজ্যস্তরে স্বর্ণপদক পেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি মগধ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন নিয়ে পাশ করেছেন তিনি। বছর ৪০-এর তরুণই এখন বিজেপির অন্যতম যোদ্ধা।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি মোদীজি চা-ওয়ালা থেকে প্রধানমন্ত্রী হলে, কাঞ্চন কেন কাউন্সিলর হতে পারবে না! কুলটির বিজেপি মণ্ডল সভাপতি অমিত গড়াই জানান, ১০৩ নম্বরে যিনি প্রার্থী হয়েছেন তিনি টোটো চালান, আর একজন প্রার্থী কাপড়ের দোকানে কাজ করেন, এরাই মাটির কাছাকাছির মানুষ। তিনি বলেন, ‘যাঁরা নিজেদের মা-মাটি-মানুষ বলে দাবি করত, তাঁরা সেই জায়গা থেকে সরে এসেছে।’