AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

KMC Election 2021: নির্বাচনে বাধা দেখলেই ফোন করুন ওসির নম্বরে, ভোটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হোর্ডিং শহরে

Kolkata Municipal Corporation Election 2021: আপাতভাবে তারক সিংয়ের এই উদ্যোগ বেশ অভিনব হলেও, একটু অতীতে গেলেই দেখা যাবে... তৃণমূলের এক গভীর ক্ষত রয়েছে, এক তিক্ত ইতিহাস রয়েছে।

KMC Election 2021: নির্বাচনে বাধা দেখলেই ফোন করুন ওসির নম্বরে, ভোটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হোর্ডিং শহরে
তারক সিংয়ের অভিনব হোর্ডিং (নিজস্ব চিত্র)
| Edited By: | Updated on: Dec 17, 2021 | 5:37 PM
Share

সা য় ন্ত ভ ট্টা চা র্য

ভোটের আগে হাতে আর একেবারেই সময় বাকি নেই। স্লগ ওভারে ছক্কা হাঁকানোর পালা। কার পাল্লা বেশি ভারী, সেই পরীক্ষা রয়েছে দু’দিন বাদেই। কলকাতা পৌরনিগমের ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের (TMC) টিকিটে ফের একবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুঁদে তারক সিং (Tarak Singh)। এই এলাকা তাঁর একেবারে শক্ত ঘাঁটি হলেও প্রচারে কোনও খামতি রাখেননি। শুরুর দিন থেকেই বেহালার বুড়োশিবতলা সহ অন্যান্য এলাকাগুলি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছেন। জনসংযোগ বাড়িয়েছেন। আর শেষ বেলায় অভিনব কায়দায় ছক্কা হাঁকিয়ে বসেছেন। নিজের ওয়ার্ডের বাসিন্দারা যাতে নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তার আশ্বাস দিয়েছেন বিদায়ি মেয়র পারিষদ। বলছেন, কেউ ভোটে বাঁধা দিতে এলেই যোগাযোগ করতে। এমন বেশ কিছু হোর্ডিংও পড়েছে এলাকা। আপাতভাবে তারক সিংয়ের এই উদ্যোগ বেশ অভিনব হলেও, একটু অতীতে গেলেই দেখা যাবে… তৃণমূলের এক গভীর ক্ষত রয়েছে, এক তিক্ত ইতিহাস রয়েছে।

ভোটার নিরাপত্তার তিক্ত অতীত

কলকাতায় পৌরনিগম নির্বাচনে নিকাশি ব্যবস্থা, জল-যন্ত্রণা এসব সমস্যা তো রয়েছেই, তার সঙ্গে একটি বড় ইস্যু হল নিরাপত্তা। বিশেষ করে, নির্বাচনের সময়ে ভোটারদের নিরাপত্তা। বঙ্গ রাজনীতির এ এক তিক্ত অভিজ্ঞতা। কলকাতার বুকেও নির্বাচনে রক্ত ঝড়েছে অতীতে। বার বার বিরোধীদের থেকে অভিযোগ এসেছে, শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভোটারদের নিরাপত্তা বার বার উঠে এসেছে বিতর্কের শীর্ষে।

KMC Election 2021 - Tarak Singh

তারক সিংয়ের অভিনব হোর্ডিং শহরে ( নিজস্ব চিত্র)

পূর্বের ক্ষত থেকে অভিজ্ঞতা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি বড় অংশ মনে করেন, বাংলার ভোট মানেই রক্তারক্তি। ছাপ্পা, রিগিং এর অভিযোগ। বাম আমলে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই অভিযোগ তোলা হত। বর্তমানে তৃণমূল এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন। এখন পাল্টা বামেরা বা বিজেপি বা কংগ্রেসের তরফে এই অভিযোগ তোলা হয় শাসকদলের বিরুদ্ধে। গত পঞ্চায়েত ভোটে যে কাণ্ড ঘটিয়েছিল শাসক দল, তা কার্যত হতভম্ব করে দিয়েছিল রাজ্যবাসীকে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তার জন্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছেন মানুষ যাতে শান্তিতে ভোট দিতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে হবে। রিগিং বা ছাপ্পা করে ভোট করলে যে প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

কীসের ভয় শাসক দলের?

কয়েক মাস আগেই বিজেপির ২০০ পার করার গর্জনকে কার্যত দুরমুশ করে দিয়ে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। বিজেপি সেখানে ২০০ পার করা তো দূরে থাক, ১০০-র গণ্ডিও পেরোতে পারেনি। কিন্তু তারপরেও ভুঁরি ভুঁরি অভিযোগ জমা পড়েছে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের। বিজেপির তরফে বার বার অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদের কর্মীরা ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের অন্দরেই একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন। এত বিশাল অঙ্কের ব্যবধানে জিতে আসার পরেও কেন ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হবে? আর সেই কারণেই এবার নড়েচড়ে বসেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রত্যেকের মুখে একটাই কথা – ভোট হতে হবে নির্বিঘ্ন।

সরাসরি ফোন করুন থানার ওসিকে

সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন কলকাতা পৌরনিগমের বিদায়ী মেয়র পরিষদ তথা হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থী তারক সিং। ১১৬, ১১৭, ১১৮, ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৮০ টি হোর্ডিং বোর্ড বসিয়ে দিয়েছেন তিনি। তার মধ্যে ১০০টি হোর্ডিং রয়েছে বাংলা ভাষায় এবং ৮০টি হোডিং রয়েছে হিন্দি ভাষায়। সংশ্লিষ্ট চারটি ওয়ার্ডে প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ হিন্দি ভাষাভাষী মানুষের বসবাস। যে কারণে হিন্দিতে হোডিং বোর্ড রাখতে হয়েছে।

হোর্ডিংয়ে রয়েছে নিউ আলিপুর থানার ওসি এবং বেহালা থানার ওসির ব্যক্তিগত নম্বর। কেউ যদি কোনও সমস্যা করে বা ভোট দিতে বাধা দেয় তাহলে ওসির নম্বরে জানাতে বলা হয়েছে ওই হোডিং বোর্ডে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাবতীয় বক্তব্য ওই হোর্ডিং বোর্ডে লিখে দেওয়া হয়েছে। কোনও প্রার্থী বা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী যদি ভোট দিতে বাধা দেয় তাহলে সোজা পুলিশের কাছে ফোন করে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে।

কী বলছেন এলাকাবাসীরা

এলাকার বাসিন্দাদের কেউ বলছেন, এটা খুব ভাল হয়েছে। মানুষ নিজের ভোট নিজে দেবেন। নির্ভয় দেবেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু ভোটের দিন এলেই বোঝা যাবে মানুষ কতটা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারছেন।

দক্ষিণ শহরতলির টালিগঞ্জ, নিউ আলিপুর সংলগ্ন এই ৪ টি ওয়ার্ডের গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পিছিয়ে ছিল। যদিও বিধানসভা ভোটে এই চারটি ওয়ার্ড তৃণমূল লিড পায়। কিন্তু তারপরেও কোনওরকম ভুল উপায়ে ভোট লড়তে নারাজ তৃণমূল প্রার্থী। যে কারণে বিভিন্ন এলাকায় এই হোর্ডিং বোর্ড দিয়ে মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছেন। মানুষ যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেটাই এখন তৃণমূলে লক্ষ্য। বিষটিকে অনেকটা ভাবমূর্তি পুরনুদ্ধারের চেষ্টা হিসেবেও দেখছেন অনেকে।

বিধানসভা ভোটে যেভাবে বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল, তাতে রীতিমতো কলকাতা দখলে আত্মবিশ্বাসী শাসক দল। যে কারণে মানুষের কাছে কাছে পৌঁছে অন্তত পরিষেবা দেখিয়ে ভোট চাইছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। এমন অবস্থায় আলিপুর থানা এবং বেহালা থানার ওসির নম্বর দিয়ে হোর্ডিং বোর্ড তৈরি করা রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে।

‘কী কয় কলকাতা’ আর খবর পড়ুন

আরও পড়ুন- কে সাবধান? বাড়ির মালিক! ভাড়াটে! পথচারী! সরকার! না খোদ বিপজ্জনক বাড়িই!

আরও পড়ুন-  মুখ্যমন্ত্রীর ‘দুয়ারের’ আদিগঙ্গা আছে সেই আদিতেই, মশার কামড়-কটূ গন্ধে অতিষ্ঠ তিলোত্তমাবাসী