Tripura: সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপুরা নির্বাচনের ফল, কেন জানেন?
উত্তর-পূর্ব ভারতের এই ছোট রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলই সর্বভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
আগরতলা: আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে, ত্রিপুরা দ্বিতীয়বারের জন্য বিজেপিকে ক্ষমতায় ফেরাচ্ছে কিনা। নির্বাচন কমিশন বলেছে, দুপুরের মধ্যেই প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ৬০ বিধানসভা আসনের ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরা, ভোটার ২৮ লক্ষের একটু বেশি। যেখানে বাংলার ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত কোটি! অথচ, আজ বৃহস্পতিবার এই ছোট্ট রাজ্যের দিকেই তাকিয়ে গোটা ভারতের রাজনৈতিক মহল। কারণ, উত্তর-পূর্ব ভারতের এই ছোট রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলই সর্বভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
বর্তমান ভারতে ত্রিপুরাই একমাত্র রাজ্য, যেখানে দুটি সরাসরি বাম বনাম ডানের প্রতিদ্বন্দিতা দেখা যাচ্ছে। কেরালায় বামপন্থীদের প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস, বিজেপি নয়। অধিকাংশ সমীক্ষাই ত্রিপুরায় বিজেপির ক্ষমতায় ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছে। কিন্তু যদি তিপ্রা মোথার সমর্থনেও বাম-কংগ্রেস জোট বিজেপিকে পরাস্ত করে সরকার গঠন করতে পারে, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। সামগ্রিকভাবে তা বিরোধী জোটের মনোবল বাড়িয়ে দিতে পারে। হাওয়া লাগতে পারে জোটের পালে।
তবে, বাম-কং জোট যে এই প্রথম দেখা যাচ্ছে তা তো নয়। এখনও জোট অবশ্য কাজের কাজ কিছু করে উঠতে পারেনি। ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২১ তো বিধানসভা থেকেই মুছে গিয়েছে। বস্তুত শুধু বামেরা নয়, একের পর এক রাজ্যে কংগ্রেসের হাত ধরে বিপদে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ত্রিপুরাতেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটা মানে, ভারত জোড়ো যাত্রা থেকে কংগ্রেস যতটা অক্সিজেন সংগ্রহ করতে পেরেছিল, সবটাই উবে যেতে পারে। সম্ভবত সেই কারণেই, এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের খুব একটা দেখা যায়নি।
তবে, যদি কোনও ভাবে বাম-কংগ্রেস জোট সরকার গঠন করে ফেলতে পারে, তাহলে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে একটা ভিন্ন বার্তা দিতে পারে কংগ্রেস। বুধবারই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে জানিয়েছেন, তাঁদের দল চায় বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করুক। নেতৃত্ব কে দেবে, সেটা আসল প্রশ্ন নয়। ত্রিপুরায় জোট শরিক বামফ্রন্ট, কংগ্রেসকে ৬০টির মধ্যে মাত্র ১৩টি আসন ছেড়েছে। কংগ্রেস কিন্তু সেটা মেনে নিয়েই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। সরকার গড়তে পারলে কংগ্রেস বিরোধী দলগুলিকে বুঝিয়ে দিতে পারবে যে, বিজেপিকে পরাস্ত করার প্রশ্নে ছোট শরিক হতেও তাদের দ্বিধা নেই। তারা এই নমনীয়তা দেখাতে পারে।
এবার আসা যাক তিপ্রা মোথা কথায়। মাত্র দুই বছর আগে জন্ম, তারপর থেকে এই দলটির উল্কার বেগে উত্থান ঘটেছে। সেই অগ্রগতির রথ যদি বিধানসভা নির্বাচনেও চলতে থাকে, তাহলে কিন্তু অন্য এক সম্ভাবনার উদ্ভব ঘটতে পারে। ত্রিপুরার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসনে তাদের জোরালো সমর্থন রয়েছে। যদি সত্যি ‘কিংমেকার’ হয়ে ওঠে তিপ্রা, সেই ক্ষেত্রে কিন্তু পৃথক তিপ্রাল্যান্ডের গঠনের দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠবে।