তালিকায় ৫০ মহিলা, বাংলার ‘নিজের মেয়ে’দের উপরেই আস্থা তৃণমূলের
জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ (Sayani Ghosh), কৌশানী থেকে শুরু করে সাবিত্রী, চন্দ্রিমা (Chandrima Bhattachrya) কিংবা মমতা নিজে। তালিকায় (TMC Candidate list) গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে মহিলাদের নাম।
কলকাতা: ‘বহিরাগত’-র পাল্টা ‘বাংলার মেয়ে’, ভোটের আবহে এভাবেই চলছে প্রচার। তৃণমূলি প্রচারে ২১-এর নতুন স্লোগান ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়।’ অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) সামনে রেখেই স্লোগান মেয়ে শব্দের উল্লেখ। কারণ তিনি নিজেই বলছেন তিনিই ২৯৪টি আসনে প্রার্থী। কিন্তু প্রার্থী তালিকা (TMC Candidate list) আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হতেই দেখা গেল ৫০টি আসনে মহিলা প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন একগুচ্ছ তারকা, রয়েছে চেনা মুখও।
শুক্রবার ২৯১টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তালিকায় ৫০টি আসনে রয়েছেন মহিলা প্রার্থী। তফশিলি জাতির ক্ষেত্রেও বাড়তি নজর দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিধানসভায় তফশিলি জনজাতির জন্য ৬৮টি আসন সংরক্ষিত থাকলেও তৃণমূল এবার তফশিলি প্রার্থী দিয়েছে ৭৯জন। তফশিলি উপজাতির ক্ষেত্রেও সংরক্ষিত আসনের থেকে ১৭ জন প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। ৪২টি আসনে তৃণমূল সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়েছে।
২০১১ সাল থেকে শুরু। তার পর প্রত্যেকবারই নিয়ম করে মহিলা ও মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা বাড়িয়েছে তৃণমূল। বছর দশক আগে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের যে নির্বাচন হয়েছিল, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ৩১ জন মহিলা প্রার্থী লড়েছিলেন। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫-এ। আর একুশের নির্বাচনের জন্য ৫০ জন মহিলাকে প্রার্থী করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে অনেকেই রীতিমতো পরিচিত।
রাজনীতির চেনা মুখের মধ্যে রয়েছেন মানিকচক থেকে সাবিত্রী মিত্র, দমদম উত্তর থেকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শ্যামপুকুর থেকে শশী পাঁজা প্রমুখ। অন্যদিকে প্রত্যাশিতভাবেই বেহালা-পূর্ব থেকে দাঁড়াচ্ছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। চৌরঙ্গী বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, মান্ডুয়া থেকে রত্না দে নাগ। এছাড়া রয়েছে তারকা মুখ। রয়েছেন, জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, অদিতি মুন্সিদের মতো প্রার্থী।
বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে প্রথম থেকেই বহিরাগত তকমা ব্যবহার করেছে তৃণমূল। একুশের ভোটে তৃণমূলের স্লোগানের সারমর্ম তাই, বাংলার ঘরের মেয়ে মমতা। বিজেপিকে রুখতে শুধুমাত্র বাংলা-সত্ত্বাই নয়, বাংলার মহিলাদেরও সামনে এগিয়ে এনেছে তৃণমূল। মহিলাকেন্দ্রিক একাধিক কর্মসূচি, দলে মহিলাদের গুরুত্ব বৃদ্ধির পর একুশের ভোটেও মহিলা প্রার্থীদের উপরই ভরসা রাখল তৃণমূল।
আরও পড়ুন: এক নজরে দেখে নিন, জোড়াফুল প্রতীকে লড়বেন কোন তারারা?
অনেকের মত, এই বৃদ্ধির পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইমেজই একটা বড় কারণ। তৃণমূল মানে অনেকের কাছে শুধুই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনিই এই মুহূর্তে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীও। দ্বিতীয়ত তাঁকে বাংলার অগ্নিকন্যা বলে থাকেন অনেকে। তার উপর তাঁর ভাবমূর্তি আটপৌরে। একেবারে যেন ঘরের মেয়ে। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধিতে অনেকেই তাই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রিত্ব লাভের সাফল্য,অগ্নিকন্যা এবং ঘরের মেয়ে, একজন মহিলার মধ্যে এই ভিন্ন ধরনের তিনটি গুণের মিশ্রণই মহিলা ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে তৃণমূলের বাজি।