১০ কোটি চেয়ে আইনি নোটিস রণদীপ হুডাকে, চরম বিপাকে অভিনেতা
মাস কয়েক আগেই টুইটারে হঠাৎই ট্রেন্ড করতে থাকে রণদীপকে গ্রেফতারের হ্যাশট্যাগ। রণদীপের নয় বছরের পুরনো একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় হঠাৎই ভাইরাল হয়।
চরম বিপাকে অভিনেতা রণদীপ হুডা। ফের একবার বিতর্কে জড়ালেন তিনি। এ বার গীতিকার ও চিত্রনাট্য লেখক প্রিয়াঙ্কা শর্মা ১০ কোটি মূল্যের আইনি নোটিস পাঠালেন অভিনেতাকে। হুডার বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর থেকে চিত্রনাট্য নিয়েও সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙেছেন রণদীপ।
যে নোটিস অভিনেতাকে পাঠানো হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দৌলতে রণদীপ হুডার সঙ্গে যোগাযোগ হয় প্রিয়াঙ্কার। রণদীপ তাঁকে স্ক্রিপ্ট ও গান পাঠাতে বললে সেই মতো ১২০০ টি গান ও ৪০টি গল্প তিনি পাঠান। প্রিয়াঙ্কার আরও অভিযোগ রণদীপের ম্যানেজার পাঞ্চালী চৌধুরী, মেকআপ আর্টিস্ট রেণুকা পিল্লাইকেও তিনি ইমেল ও হোয়াটসঅ্যাপ মারফৎ চিত্রনাট্য পাঠালেও বছর ঘুরতে চললেও তাঁরা সেই গল্প নিয়ে কোনও কাজ করেননি। নোটিসে লেখা রয়েছে, যে মুহূর্তে প্রিয়াঙ্কা তাঁর চিত্রনাট্য ও গান ফেরত পেতে চান তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। অকারণে এই হয়রানির জন্য রণদীপের থেকে দশ কোটি দাবি করেছেন ওই ব্যক্তি। যদিও রণদীপের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে মন্তব্য করা হয়নি।
মাস কয়েক আগেই টুইটারে হঠাৎই ট্রেন্ড করতে থাকে রণদীপকে গ্রেফতারের হ্যাশট্যাগ। রণদীপের নয় বছরের পুরনো একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় হঠাৎই ভাইরাল হয়। যেখানে রণদীপ একটি জোক শেয়ার করেন, যেখানে বহুজন সমাজবাদী পার্টির প্রধান মায়াবতীকে অপমান করা হয় বলে মনে করেন অনেকে। সে কারণেই ‘অ্যারেস্ট রণদীপ হুডা’ ট্রেন্ডিং। ৪৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়ো ২০১২-এ একটি মিডিয়া হাউজ আয়োজিত অনুষ্ঠানে তোলা হয়েছিল। সেখানে রণদীপ একজন মহিলার বিরুদ্ধে জাত এবং যৌনতা নিয়ে কৌতুক করেছিলেন বলে অভিযোগ। কৌতুক করার পর সামনে বসে থাকা দর্শকের সঙ্গে রণদীপকেও হাসতে দেখা যায়।
পুরনো ভিডিয়ো শেয়ার করে এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘একজন দলিত মহিলার বিরুদ্ধে যেভাবে বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা রণদীপ জাত এবং যৌনতা নিয়ে কৌতুক করেছেন, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সমাজ কতটা বর্ণবাদী এবং যৌনতাবাদী।’ সামনে বসে থাকা জনতারও সমালোচনা করেন তিনি।
হ্যাশট্যাগ ‘অ্যারেস্ট রণদীপ হুডা’ ভাইরাল হওয়ার পরই এই বিষয়ের উপর বেশ কিছু মিম সোশ্যাল ওয়ালে ভাইরাল হয়। সব জায়গাতেই কাঠগড়ায় ছিলেন রণদীপ। যদিও সে সময় এই নিয়ে মন্তব্য করেননি অভিনেতা। তবে শুধু অ্যারেস্ট ট্রেন্ডই নয়, এই কারণে কনভেনশন ফর দ্য কনসার্ভেশন অফ মাইগ্রেরিটি স্পিসিজ় অফ ওয়াইল্ড অর্থাৎ রাষ্ট্র সংঘের পরিযায়ী বন্য প্রাণীদের সংরক্ষণের জন্য প্রচারকের পদ থেকেও সরানো হয়েছিল অভিনেতাকে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রণদীপের এমন মন্তব্য নীতিগতভাবে রাষ্ট্রসংঘ বিরুদ্ধ। বর্ণবিদ্বেষী, লিঙ্গবৈষম্যকে মোটেই সংগঠন সমর্থন করে না। পাশাপাশি তিনি এও জানান যে, ২০১২ সালের ওই ভিডিও সম্পর্কে জানতেন না তাঁরা, তাই ২০২০ সালে তাঁকে মাইগ্রেটরি স্পিসিজ় অফ ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস-এর দূত হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গতবছর অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশবিদ সচা ডেঞ্চ এবং ব্রিটিশ আইএএন রেডমন্ডের সঙ্গে ওই একই পদে দূত হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন রণদীপ। ২০২৩ সাল অবধি কাজের চুক্তি ছিল। কিন্তু বর্ণবিদ্বেষী, লিঙ্গবৈষম্যমূলক মন্তব্য করায় সেই পদ থেকে সময়ের আগেই অব্যহতি দেওয়া হয় অভিনেতাকে। ফের বিতর্কে অভিনেতা। জল কতদূর গড়াবে সেটাই দেখার।