Sandhya Mukherjee: সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির প্রোমোটিং নিয়ে, কী বললেন সংস্কৃতি গবেষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়?
Sandhya Mukherjee Home: পরিচালক মৃণাল সেনের বাড়ি বিক্রির পথে সেখবর তো আগেই হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই বাড়ি বিক্রি করতে চান পরিচালকের পুত্র কুণাল সেন। এবার আর এক বাঙালি কিংবদন্তী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিমেদুর বাড়িও এবার কালের অতলে।
বাঙালি আত্মবিস্মৃত জাতি, অভিযোগ এমনটাই। নিজের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার তাগিদ খুব কম। আগেই খবর হয়েছে পরিচালক মৃণাল সেনের বাড়ি বিক্রির খবর। এবার প্রোমোটিং হয়ে গেল গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি।
বাংলা গানের অন্যতম কিংবদন্তি হলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তিনি তাঁর গানের জাদু দিয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন সকলকে। কণ্ঠ দিয়েছেন একাধিক কালজয়ী গানে। তবে পরলোক গমনের বছর ঘুরতেই তাঁর লেক গার্ডেন্সের বাসভবন ভেঙে বহুতল তৈরি হচ্ছে। এই বাড়িতেই ‘গীতশ্রী’ নানা গানের সুরে ঘরকন্যা করতেন কবি শ্যামল গুপ্তের সঙ্গে। একের পর এক গানের সৃষ্টি হয়েছে এই বাড়িতেই। যেমন, ‘স্বপ্ন ভরা অন্ধকারে’, ‘মোর গানের এই বীণা’, ‘তার শেষ রাগিনী সুরে-সুরে এল ভেসে নয়ন ধারে,’, ‘চন্দন পালঙ্কে শুয়ে একা-একা কী হবে?’, ‘ঝরা-পাতা ঝড়কে ডাকে’… অসংখ্য গান আর বহু মানুষের দুর্মূল্য স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়ি আর নেই।
‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় বাঙালির মেলোডি কুইন। তাঁর রোম্যান্টিক গানে ভেসেছে বাঙালি। তবে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত এই বাসভবন আর নেই। এর আগেও বহু বিখ্যাত ব্যক্তির বাড়ি, যা হেরিটেজ সম্পদ হওয়ার কথা, তা ভেঙে এখন বহুতল হয়েছে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা এ ব্যাপারে অবশ্য কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন। তবে প্রতিবেশীদের মন খারাপ। এর আগেও দেখা গেছে বাংলার খ্যাতিমানদের বাসভবন ভেঙে উঠেছে বহুতল।
পরিচালক মৃণাল সেনের বাড়ি বিক্রির পথে সেখবর তো আগেই হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই বাড়ি বিক্রি করতে চান পরিচালকের পুত্র কুণাল সেন। এবার আর এক বাঙালি কিংবদন্তী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিমেদুর বাড়িও এবার কালের অতলে। এই বাড়িতেই এক সময়ে সব বিখ্যাত ব্যক্তিদের আনাগোনা ছিল। বহু কালজয়ী গান রচিত হয়েছিল এখানেই। আজ সবটাই স্মৃতির অতলে। বিশেষজ্ঞের মতে, বাঙালির এই কিংবদন্তীদের অবিস্মরণীয় কাজের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় তাঁদের বাসভবন বা কোনও স্মৃতির অস্তিত্বের খোঁজ না-পাওয়া যায়, তাহলে তা খুবই বেদনার।
এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি গবেষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। TV9 বাংলার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,”পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে যাঁর কণ্ঠে আমরা প্রেমের আকাশে ভেসে যেতাম, সেই অসম্মান্য কণ্ঠ আর থাকবে না। এটা আমাকে অবাক করে না। আমাদের স্মৃতির মাধবীলতা দুলে ওঠে, কিন্তু আমাদের সমাজে তাঁর কোনও চিহ্ন নেই। এই যে নেই, এটা তো জাতীয় অপরাধ।” এখানেই শেষ নয়, তাঁর কথায়, “বিলেতে শার্লক হোমসের মতো কল্পিত চরিত্রের জন্যও আলাদা মিউজিয়াম থাকে। কিন্তু এখানে মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, শচীন দেব বর্মণ এঁরা অবহেলিত থাকেন।”