Rupankar Bagchi Controvery: ‘গান চুরি’-র অভিযোগ রূপঙ্করের বিরুদ্ধে, নিউটাউন থানার দ্বারস্থ গায়িকা
Rupankar Bagchi: নিউটাউনের বাসিন্দা এক গায়িকার অভিযোগের তদন্ত করছে পুলিশ। এ ব্যাপারে কী বলেছেন রূপঙ্কর বাগচী?
বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রূপঙ্কর বাগচীর। ‘হু ইজ় কেকে’ বিতর্কের পর এবার ‘গান চুরি’-র অভিযোগ বিদ্ধ হলেন রূপঙ্কর। নিউটাউন থানায় বৃহস্পতিবার রূপঙ্কর ও সুরকার পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গান চুরির অভিযোগ দায়ের করেছেন মনোরমা ঘোষাল নামে এক গায়িকা। ইউটিউবে ‘মনোরমা মিউজ়িক’ নামে ওই গায়িকার একটি চ্যানেল রয়েছে। নিউটাউনের বাসিন্দা ওই গায়িকার অভিযোগের তদন্ত করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিউটাউন থানায় রূপঙ্কর ও পার্থর নামে একটি জেনারেল ডায়েরি (জিডি) করেছেন মনোরমা। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “আমার গান চুরি করে একজন গেয়েছেন। আমার কম্পোজ়ার পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এর সঙ্গে যুক্ত। যিনি গেয়েছেন, তিনি রূপঙ্কর বাগচী। এই গানটি ৬ মাস আগে আমার চ্যানেলে আপলোড করা হয়। গানটির ভিডিয়ো তৈরি করে আমি নিজেই আপলোড করেছিলাম ইউটিউবে।” মনোরমার আরও অভিযোগ, পার্থ তাঁর কাছ থেকে সম্পূর্ণ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গানটিতে সুর দিয়েছিলেন। মনোরমার কথায়, “ওকে জানিয়েছিলাম এটা আমার নিজের গান। অনেক আশা করে বলেছিলাম, গানটা যেন সকলের কাছে পৌঁছয়। ও গানটা প্রচার করতে বলেছিলাম। এক সপ্তাহ আগে পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে মেসেজ করে বলেন, আমি যেন গানটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘প্রাইভেট’ করে দিই।” মনোরমার অভিযোগ, পার্থ তাঁকে জানান রূপঙ্কর এই গানটি গাইবেন। তাঁর প্রশ্ন, “আমার গান, আমার অনুমতি ছাড়া কীভাবে অন্য কাউকে দিলেন পার্থ?”
মনোরমা জিডিতে লিখেছেন, পার্থকে গত ১০ নভেম্বর উল্লিখিত গানটির জন্য ২৮ হাজার টাকা দিয়েছিলেন পারিশ্রমিক হিসেবে। ২১ ডিসেম্বর থেকে তাঁর গানটি ইউটিউবে প্লে হতে থাকে (ইউটিউবে গানটি আপলোড-ও করেন পার্থ, এমনই অভিযোগ মনোরমার)। ২৫ জুন পার্থ মনোরমাকে কল করেন (হোয়াটসঅ্যাপ-এও টেক্সট করেন)। মনোরমার অভিযোগ, এর চার দিন পর, অর্থাৎ ২৯ জুন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিনি লক্ষ্য করেন ইউটিউবে তাঁর আপলোড করা গানটি আর নেই। মনোরমার অভিযোগ, এরপর তিনি দেখেন রূপঙ্কর তাঁর গাওয়া গানটি গেয়েছেন। মনোরমা অভিযোগপত্রে লিখেছেন, ২৫ জুন পার্থ যখন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন রূপঙ্করের গান গাওয়ার বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়। মনোরমা সংবাদমাধ্যমের কাছে এ দিন দাবি করেছেন, “সে দিন পার্থ আমাকে কল করে বলেন, তিনি ফেঁসে গিয়েছেন, ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন। আমাকে আপোস করতে অনুরোধ করেছিলেন পার্থ। আমি জানিয়ে দিই নিজের ভালবাসা, প্যাশন নিয়ে আপোস করতে পারব না কিছুতেই। আমি ভাবিইনি ইউটিউবে গানটার ৮,০০০ ভিউজ় হবে। নিজের খুশির জন্য গানটা গেয়েছিলাম। তা-ই নিজের চ্যানেলে আপলোড করেছিলাম। সেটাকে নিয়ে তো আমি ছেলেখেলা করব না। এই ঘটনার পর পার্থ আমাকে মেসেজ করা বন্ধ করে দেন। ওর সমস্ত মেসেজ আমার কাছে রয়েছে।”
মনোরমা অভিযোগ করেছেন, ২৫ জুন রূপঙ্করকে ইউটিউবে আপলোড হওয়া তাঁর গানটির লিঙ্কও পাঠানো হয়। তাঁর অভিযোগ, রূপঙ্করকে জানানো হয়েছিল, গানটি একবার গাওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই দ্বিতীয়বার সেই একই গান গাওয়া যেতে পারে না। মনোরমার প্রশ্ন, “এরপরও তিনি কীভাবে এই গান রিলিজ় করলেন? পার্থ তো ভুল করেইছেন। ওকে আমি ছাড়ব না। রূপঙ্কর বাগচীকেও আমি ছাড়ব না… সব জেনেশুনে বদমায়েসি করেছেন তিনি।”
কিছুদিন আগেই গায়ক কেকে-কে নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্কে ফেঁসেছিলেন রূপঙ্কর। পরে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষমাও চাইতে হয়েছিল তাঁকে। মনোরমার অভিযোগ, তাঁকে না জানিয়ে পার্থ রূপঙ্করকেও গানটি বিক্রি করেছেন। এ প্রসঙ্গে রূপঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি যখন এই গানটি রেকর্ড করেছিলাম, তখন আমাকে জানানো হয়নি যে অভিযোগকারণীকে এই একই গান বিক্রি করা হয়েছিল। আমি পার্থ বন্দ্য়োপাধ্যায়কে ভালভাবে চিনিও না। গানটি আমি রেকর্ড করেছিলাম আসানসোলে। বিশ্বজিৎ বলে একজন গানটি রেকর্ড করিয়েছিলেন আমাকে দিয়ে।” রূপঙ্কর TV9কে জানিয়েছেন, মনোরমার স্বামী তাঁকে তাঁর স্ত্রীর গাওয়া গানটির ইউটিউব লিঙ্ক তাঁকে পাঠিয়েছিলেন। রূপঙ্কর তাঁর কাছে পার্থর নম্বর চেয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন এ দিন। যদিও মনোরমার স্বামী তাঁকে পার্থর নম্বর দেননি। রূপঙ্করের আরও দাবি, তিনি গানটি রেকর্ড করেছিলেন তিন-চার মাস আগে। কী করবেন এখন তিনি? রূপঙ্করের অসহায় উত্তর, “আমি সত্য়িই জানি না কী করব।”