খুব কাছ থেকে একজন মায়ের সান্নিধ্য পেয়েছি: ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত

Swatilekha Sengupta death news: মনে হয় অনেক ভাল কাজ করলে এমন মানুষের সঙ্গে কাজ করা যায়। কিছুদিন আগে সৌমিত্রজ্যেঠুকে হারালাম...আজ স্বাতীলেখা আন্টি...গোটা পরিবার যেন কানা হয়ে গেল। তবে, এই মানুষগুলো যা দিয়ে গেছেন তা যুগে-যুগে থেকে যাবে।

খুব কাছ থেকে একজন মায়ের সান্নিধ্য পেয়েছি: ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
স্বাতীলেখা-ঝতুপর্ণা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 16, 2021 | 5:18 PM

বাংলা চলচ্চিত্র এবং থিয়েটার জগতে ফের নক্ষত্রপতন। প্রয়াত স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত (Swatilekha Sengupta)। বুধবার দুপুর দু’টো পয়তাল্লিশ নাগাদ শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন দীর্ঘদিন। ছিল অন্যান্য বার্ধক্যজনিত সমস্যাও। বুধবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭১। তাঁর স্মৃতিচারণা করলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত

স্বাতীলেখা আন্টি চলে যাবে এটাঠিক মেনে নেওয়ার মতো নয়।  একটার পর একটা খারাপের খবর, নিজের মনকে কী করে বোঝাবো সেটাই বুঝে উঠে পারছি না। দীর্ঘদিন ধরে শরীর খারাপ ছিল আন্টির, সোহিনীর কাছ থেকে নিয়মিতও খবর নিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে এমন এক খবর এল। এত বড় যোদ্ধা ছিলেন স্বাতী আন্টি। এত বড়-বড় যুদ্ধ জিতে ফিরে এসেছেন বারবার। বিরল অভিনেত্রী। এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব। এক অদ্ভূত সুন্দর মানুষ। অনেক কিছুতে উনি নতুন কিছু সৃশ্টি করেছিলেন। নাটকের মঞ্চে তো উনি সম্রাজ্ঞী ছিলেন। স্বাতী আন্টির মধ্যে আরও বহু গুণ ছিল। অভিনেত্রী হিসেবে দেখেছি ছবির পর্দায়। এত সাবালীল,  এত অপূর্ব অভিব্যক্তি।

আমি নিজেকে খুব প্রিভিলেজড এবং ভাগ্যবান মনে করি যে ওঁর মতো সম্রাজ্ঞীর সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। ‘বেলাশেষে’ ও ‘বেলাশুরু’তে খুব কাছ থেকে একজন মায়ের সান্নিধ্য পেয়েছি। আমরা একেবারে পরিবার পেয়েছিলাম। বাবা-মা, ভাই, বোন মিলে এক পরিবার। হয়তো আমাদের প্রত্যেকের একটা পরিবার আছে, কিন্তু ‘বেলাশেষে’ ও ‘বেলাশুরু’র পরিবার যা শিবু এবং নন্দিতাদিরা সৃষ্টি করেছে, সেটা থেকে যাবে। আজীবন থেকে যাবে।

গোটা পরিবার।

আমার মনে হয় অনেক ভাল কাজ করলে এমন মানুষের সঙ্গে কাজ করা যায়। কিছুদিন আগে সৌমিত্রজ্যেঠুকে হারালাম…আজ স্বাতীলেখা আন্টি…গোটা পরিবার যেন কানা হয়ে গেল। তবে আমি মনে করি, এই মানুষগুলো যা দিয়ে গেছেন তা যুগে-যুগে থেকে যাবে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে ওঁদের যা অবদান তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম উপলব্ধি করবে। এত বড় এক লেগেসি রেখে গিয়েছেন,তাঁর ধারক-বাহক যাঁরা এটাকে এগিয়ে নিয়ে যবেন। অনেক ছোটবেলা থেকে মানুষটাকে দেখেছি-শুনেছি-জেনেছি। অনেক ছেলেমানুষি গল্প করেছি, অনেক সুন্দর-সুন্দর কথা আমাকে বলেছে আমার কাজ দেখে। সোহিনী প্রায়ই আমাকে বলত, “মা জানিস তো তোর সম্বন্ধে এটা বলেছে, ওটা বলেছে।” এটাই তো সবথেকে বড় পাওয়া। ওঁর মধ্যে একটা শিশুর সারল্য ছিল। একজন বিদুষী মহিলা ছিলেন স্বাতী আন্টি। এত সুন্দর ব্যবহার এবং প্রত্যেকের সঙ্গে তার আদান-প্রদান। আমি জানি না, আমরা এই দুঃখ ভুলতে পারব কি না। জানি না…

আরও পড়ুন “স্বাতী কাকিমাও চলে গেলেন…আদরগুলো কার কাছে পাব আর?” সৌমিত্র কন্যা পৌলমীর গলায় আক্ষেপের সুর