‘সন্দেশখালির দিদিরা কি দিদি নন?’ বিস্ফোরক রুদ্রনীল, রচনা যা বললেন…
Rudranil-Rachana: অবশেষে রাজনীতির ময়দানে পা রাখলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে নানাজনের নানা মত। কেউ খুশি, কেউ আবার তাঁর এই সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন তুলছেন। TV9 বাংলার কাছে বিরোধী দল বিজেপি-র কর্মী রুদ্রনীল ঘোষ করে বসলেন বিস্ফোরক মন্তব্য।
রবিবার, ১০ মার্চ, ব্রিগেডের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সবথেকে বড় চমক ছিল রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই জল্পনা উঠেছিল তুঙ্গে। অবশেষে রাজনীতির ময়দানে পা রাখলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে হুলগি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে লড়বেন তিনি। যা নিয়ে নানাজনের নানা মত। কেউ খুশি, কেউ আবার তাঁর এই সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন তুলছেন। TV9 বাংলার কাছে বিরোধী দল বিজেপি-র কর্মী রুদ্রনীল ঘোষ করে বসলেন বিস্ফোরক মন্তব্য।
TV9 বাংলাকে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগদান প্রসঙ্গে কী বললেন তিনি ? রুদ্রনীলের কথায়, ”রচনাদেবী আমার সিনিয়র কলিগ। তবে তিনি চোর বা চুরিকে সমর্থন করেন বলে তো মনে হয় না। না, আমিও কোনওদিন খবর পাইনি যে, কোনও চোর রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গামছা চুরি করতে এসেছে অথবা তিনি কখনও বলেছেন, ‘হাই হ্যালো, ইউ আর চোর, হোয়াট আ থ্রিলিং কেস, প্লিজ় কাম, হ্যাভ আ কাপ অফ টি’ (হাই, হ্যালো! এসো, তুমি চোর, কী দারুণ ব্যাপার, দয়া করে এসো, এক কাপ চা খাও) বলেছেন। তিনি যে চোর অনুরাগী, তা-ও কোনওদিন প্রমাণ করেননি।” এরপরই বিস্ফোরক রুদ্রনীল, “পশ্চিমবঙ্গের মা-বোনেদের সম্ভ্রম যারা চুরি করছেন, নষ্ট করছেন চোখের সামনে, তাদের হয়ে তিনি (রচনা) কেন দাঁড়াতে গেলেন? সেই ব্যক্তিগত কারণ তিনি বা দল ছাড়া আর কেউ জানে না। এবার যিনি মানুষের দুঃখ-যন্ত্রণায় একটাও কথা বলেননি, তিনি কী ভাবছেন, হুগলির ভোটাররা এটা বুঝতে পারছেন না…? বাংলার নিপীড়িত মা-বোনেদের সময় তিনি চুপ করে ছিলেন, অথচ তিনি মহিলাদের নিয়ে একটা শো করেন। সন্দেশখালির দিদিরা কি দিদি নন? বোনেরা কি বোন নন?”
এখানেই শেষ নয়, তারকা-প্রার্থী রচনা প্রসঙ্গে রুদ্রনীল TV9 বাংলাকে আরও বলেছেন, ”সেলেবদের একটা ফেস ভ্যালু তো থাকেই। সে খেলার জগত থেকেই হোক কিংবা অভিনয় জগত থেকেই আসা কেউ হোক। তবে দলের এই বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত যে প্রার্থী নির্বাচনের আগে, তিনি (তারকা ব্য়ক্তিত্ব) সমাজ সম্পর্কে সচেতন কি না? আসলে এক্ষেত্রে দেখতে হবে দলের কী অভিমুখ? জিতলেন একজন আর এলাকা ছেড়ে দিলেন আরেকজনের হাতে, যেমন বহরমপুর উঠে গেল নুসরতের বদলে সেখ শাহজানের হাতে? অন্যদিকে যাদবপুর মিমি চক্রবর্তীর এলাকা হলেও উঠে গেল আরাবুলদের হাতে। দেখে আসুন হয়তো হুগলিতেও তেমনই কোনও ক্রিমিনাল তৈরি হয়ে গিয়েছে।” এরপর রুদ্রনীলের সংযোজন, “জেতার পর রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলবেন, ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ কেন? আপনি ‘দিদি নম্বর ১০০’ , ‘দিদি নম্বর ১১১’ করুন। বাকিটা আমরা সামলে নিচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছিলেন, আমাদের একটা অনুব্রত গেলে কী হবে, আমাদের আরও অনেক অনুব্রত রয়েছে। পুরোটাই মা-বোনেদের সিদ্ধান্ত, আর তাঁরা কেউ চোখ বন্ধ করে নেই।”
এ দিকে, রাজনীতিতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় TV9 বাংলাকে বললেন, ”আমার সব সময় মনে হত যে, আমি শুধু শুনছি। বলি, বোঝাচ্ছি। কিছু তো করে উঠতে পারব না। সেটা করতে গেলে এমন একটা জায়গা দরকার, এমন একটা প্ল্যাটফর্ম দরকার, যেখানে তোমাকে সেই পাওয়ার (ক্ষমতা)-টা দেওয়া হবে, তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে মানুষের জন্য কিছু করবে। আর সেটা রাজনীতি ছাড়া অন্যকিছু হতেই পারে না। অন্যান্য সেলিব্রিটি কতটা কী করছেন, সেই বিষয়ে আমি মন্তব্য করব না, কারণ আমি তো দেখেছি তাঁরা কাজ করছেন, বক্তব্য রাখছেন। আমি আমারটুকু বলতে পারি, আমি মানুষের পাশে থাকার সম্পূর্ণ চেষ্টা করব।”
যদিও শাসক দলে যোগ দিয়ে সন্দেশখালি প্রসঙ্গে মোটেই চুপ থাকলেন না রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। TV9 বাংলার প্রশ্নে স্পষ্ট বলেন, “নিঃসন্দেহে খারাপ লেগেছে। সবাই তো জানেন, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় মানেই তিনি মহিলাদের পাশে রয়েছেন। আমি এ-ও বলেছিলাম, আমায় যদি প্রচারে যেতে হয়, সব জায়গাতেই তো যেতে হবে, যদি কখনও আমায় সন্দেশখালিতে যেতে হয়, খুশি মনে যাব, সবার পাশে গিয়ে দাঁড়াব। সকলের সঙ্গে গিয়ে কথা বলব।” রচনা আরও বলেছেন, “আমি এতেও খুশি যে, রাজ্য সরকার প্রত্যেকের বয়ান নিচ্ছেন, প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলছেন। সমসস্যাগুলো জানছেন, শুনছেন। নারীদের পাশে আমাদের থাকতে হবে, আমি আছি। নারীরা দুঃখ পেলে আমি দুঃখ পাই। আমি মণিপুরের জন্য কষ্ট পেয়েছি। হাথরাসও আমায় দুঃখ দিয়েছে। ভারতের যেখানে-যেখানে নারীদের ওপর অত্যাচার হবে, প্রত্যেকটার জন্যই আমি দুঃখিত।”