Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Valentines Day Special: পর্দায় তাঁরা স্বামী-স্ত্রী, বাস্তবে মনের মানুষকে প্রেমদিবসে কী বলতে চান মানালি-ইন্দ্রাশিস

Serial Hit Jodi: মানালি: কিছু-কিছু সম্পর্ক আমাদের জীবনে থেকে যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল ইন্দ্রাশিস।

Valentines Day Special: পর্দায় তাঁরা স্বামী-স্ত্রী, বাস্তবে মনের মানুষকে প্রেমদিবসে কী বলতে চান মানালি-ইন্দ্রাশিস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 14, 2023 | 8:30 AM

জয়িতা চন্দ্র

লালন-ফুলঝুরি, ২০২২ সালে বাংলা সিরিয়ালে রাজত্ব করেছে এই জুটি। অভিনেত্রী মানালি দে ও অভিনেতা ইন্দ্রাশিস রায়ের এই জুটি প্রথম দেখল দর্শক। এর আগে একে-অপরের সঙ্গে পরিচিতি থাকলেও তাঁরা কোনওদিন এক ফ্রেমে উপস্থিত হননি। প্রথম জুটিতেই বাজিমাত। পর্দায় হিট জুটির সিরিজ়ে তাই এবার ‘ধুলোকণা’ ধারাবাহিকের সেই হিট জুটি খোলামেলা আড্ডায়।

কোন সমীকরণে পর্দায় এই ম্যাজিক?

মানালি: এটা মোটেই আমার ক্রেডিট নয়, এটা দু’জনেরই প্রাপ্য। একটা জুটির মধ্যে যখন বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, সেটা সেই অভিনেতা বা অভিনেত্রীর কাছে সত্যিই খুব সুখকর। দেখুন, পর্দায় ম্যাজিকটা না একজন কিংবা দু’জনের ওপর নির্ভর করে না। এই বিষয়টা গোটা টিমের ক্রেডিট। সকলে মিলে এই চরিত্র দু’টোকে এতটা জনপ্রিয় করে তুলেছিল। আমি তো বলব লীনাদি (লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, চিত্রনাট্যকার) এত যত্নের সঙ্গে এই চরিত্র দু’টোকে সাজিয়েছিলেন, এটা তারই ফল। চরিত্র দু’টো ভীষণ সাধারণ, মানুষের খুব কাছের। খুব চেনা।

ইন্দ্রাশিস: আমারও ওই একই বক্তব্য। গোটা টিম যদি একযোগে কাজ করে, তখনই সেরাটা এইভাবে প্রকাশ পায়। আবার উল্টোদিকের মানুষটার সহযোগিতাটাও জরুরি। যেটা প্রতি পদে-পদে আমি মানালির থেকে পেয়েছি। ফলে অভিনয়টাও অনেক সহজ হয়ে যায়।

প্রথমে কি ভেবেছিলেন জুটিটা এত হিট হবে?

মানালি: ভেবে আমরা কাজ কখনওই করি না। আবার সব কাজের ক্ষেত্রে সেটা সেরা হবে, এটাই আশাটা রাখি। দর্শক ভালবাসা দিয়েছেন, এটা সত্যিই খুব বড় পাওয়া। আসলে ইন্দ্রাশিসের সঙ্গে প্রথম কাজ হলেও আমাদের পরিচিতি অনেক আগে থেকে। তা-ই খুব একটা অবাক হইনি, বরং কাজটা অনেক বেশি আনন্দের সঙ্গেই হয়েছে। সহজ হয়েছে। ন্যাচারাল হয়েছে। সহ-অভিনেতার সঙ্গে টিউনিংটা খুব জরুরি।

ইন্দ্রাশিস: মানালি যেমনটা বলল, আমিও ঠিক তা-ই বলব। বিপরীতে থাকা মানুষটার উপরও অনেকটা নির্ভর করে অভিনয়। মানালির সঙ্গে আমার সেই সহজ বন্ধুত্বটাই হয়তো পর্দায় ধরা পড়ত। পাশাপাশি ও এতটাই ন্যাচারাল অভিনয় করে যে, আবেগগুলো খুব সহজেই ধরা যায়।

প্রথম আলাপ কীভাবে? 

মানালি: ইন্দ্রাশিস আমার বন্ধুর বন্ধু। সেখান থেকেই বেশ কিছু পার্টিতে দেখা হওয়া। অল্প বিস্তর আড্ডা হওয়া। এখন তো বিষয়টা পাল্টে গিয়েছে, অনেক বেশি কাছের।

ইন্দ্রাশিস: আমাদের পরিচিতি অনেক আগে থেকে। তবে আমি যখন সেভাবে কাজ শুরুও করিনি, তখন থেকেই মানালি ভীষণ জনপ্রিয়। প্রথম ধারাবাহিক থেকেই সকলের নজরের কেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছিল। এরপর আমাদের যোগাযোগ তৈরি হয়। এখন কাজ করলে আর নতুন মনে হয় না, রিইউনিয়নের মতো লাগে বিষয়গুলো।

একে-অপরের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

মানালি: ‘ধুলোকণা’র সেটেই একে-অপরের সঙ্গে এত ভাল বন্ধু হয়ে ওঠা… ও খুব ডেডিকেটেড, পরিশ্রম করতে পারে ভীষণ। যে কাজটা হাতে নেয়, সেটা মন দিয়ে করার চেষ্টা করে। এমন না যে কাজটা শেষ করে বেরিয়ে যেতে পারলেই হল… উল্টে বিষয়টাকে নিয়ে চর্চা করা, আরও ভাল করার একটা জেদ, এই বিষয়গুলো খুব লক্ষ্য করতাম আমি ওর মধ্যে।

ইন্দ্রাশিস: দেখুন মানালি অনেক বড় অভিনেত্রী। ভীষণ ভাল কাজ করে, এটা আমার আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। প্রতিটা দর্শকের সেটা জানা। তবে অদ্ভুতভাবে আমি দেখি ওর পা-টা কিন্তু মাটিতেই থাকে। আমি মাঝেমধ্যে বলে ফেলতাম, একটু নায়িকা-নায়িকা ব্যাপারটা আনতে হবে। ও পাত্তাই দেয় না। সঠিক সময় সেটে এসে যেত। কোনওদিন ওকে দেরি করতে দেখিনি আমি। সবার আগে তৈরি হতো, খুব যত্ন নিয়ে সাজত। যাতে ওর জন্য কেউ অপেক্ষা না করে। এগুলো খুব একটা নায়িকাদের থেকে আশা করা যায় না। কিন্তু মানালি এমনই। আর অভিনয় নিয়ে আমি কিছুই বলব না। যাই-ই বলব, তাই-ই খুব কম…।

ধারাবাহিক তো শেষ, এখন যোগাযোগ হয়?

মানালি: কিছু-কিছু সম্পর্ক আমাদের জীবনে থেকে যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল ইন্দ্রাশিস। কাজ করতে গিয়ে তো কত মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়, কিন্তু ক’টা সম্পর্ক থেকে যায় বলুন? ইন্দ্রাশিস সেই থেকে যাওয়া বন্ধু। এখন আমাদের তো একটা গ্রুপই হয়ে গিয়েছে। ওর স্ত্রী, অভিমন্যু আমরা সুযোগ পেলেই আড্ডায় বসে যাই।

পর্দার চরিত্র নয়, ব্যক্তি জীবনে কার চোখে প্রেম কেমন?

মানালি: আমার কাছে না প্রেমের তেমন কোনও বাঁধাধরা সংজ্ঞা নেই। আমি নিজে ঠিক বুঝতে পারি না প্রেমটাকে কীভাবে বোঝাব। তবে একটা কথা বলতে পারি, প্রেমের মধ্যে একটা সহজ বন্ধুত্ব থাকা প্রয়োজন। যে মানুষটাকে ভালবাসি তাঁর সঙ্গেই থাকছি, এটাই বড় পাওয়া। আমার ও অভিমুন্যর (অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়, মানালির স্বামী) মধ্যে এই বন্ধুত্বের মোড়কে প্রেমটা লুকিয়ে।

ইন্দ্রাশিস: প্রথম কথা হল আমি প্রেমে ভীষণ বিশ্বাসী। আমি একজন প্রেমিক মানুষ। দেখুন, সমাজ তো খুব দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। তাই প্রেম বিষয়টাও খুব মেকি হয়ে যাচ্ছে। এটা বলতে আমার কোনও কিন্তু বোধ হয় না যে, আমরা ছোটবেলায় কিছুটা হলেও সেই ফ্লেভারটা পেয়েছিলাম। সরস্বতী পুজোয় প্রেম, মেয়েদের মন জয় করার চেষ্টা, প্রেমে পড়া, নয়তো হালকা ভাললাগা… এগুলো তো সত্যিই করেছি একটা সময়। এখন বিষয়গুলো খুব প্ল্যাস্টিক হয়ে গিয়েছে। পুরোটাই সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক।

পর্দায় জুটি তো হল, বাস্তবে মনের মানুষকে প্রেমদিবসে কী বলতে চান?

মানালি: আমার কাছে প্রেমদিবস বলে কিছু হয় না। প্রতিটা দিনই প্রেমের দিন। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি আমার আর অভিমন্যুর প্রথম দেখা হয়। ফলে দিনটা বিশেষ। তা-ও যদি কিছু বলতে বলেন, বলব: তুমি এমনই থেকো। যেমনটা দেখে ভাললাগা, ভালবাসা, চেনা মানুষটা পাল্টে যেন না যায়, তেমনটাই থাকুক। আমি এটাই চাই, এর বাইরে আমি খুব ভাল আছি ওর সঙ্গে।

ইন্দ্রাশিস: আমার ভিতর থেকে জোর করে প্রেমের প্রকাশটা হয় না। প্রেমটা কিন্তু আমি ‘তোমায় ভালবাসি’ বলে হয় না। সেটার জন্য ভালবাসার পাত্র হতে হয়, ভালবাসার যোগ্য হতে হয়। আমার স্ত্রীকে (সৌরভী তরফদার, ইন্দ্রাশিষের স্ত্রী) নিয়ে যদি বলতে হয়, বলব, আমাদের একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা। যেমনই পরিবারে বড় হই না কেন, আদরেই মানুষ হয়েছি আমরা। সেই আদর-আবদারটাই ওর মধ্যে রয়ে গিয়েছে। ও শিশুর মন নিয়ে বাঁচতে ভালবাসে। আমি যে এগুলো বলছি, ও দেখেই খুব অবাক হবে। আমি ওকে বারবার বলি, একটু বড় হতে। ইদানীং দেখছি, সেটা শুনেছে। বুঝতে শিখেছে। এটাতেই আমি খুব খুশি। ‘তোমার জন্য আমার এটা হচ্ছে না’ বলার চেয়ে ‘আমি আমারটা গুছিয়ে নিয়েছি, এবার তোমার জন্য কী করতে পারি বলো’, এটা বলার মধ্যে অনেক সুখ। আমি চাই আগামী একটা বছরে ও আরও অনেকটা বড় হয়ে উঠুক। আর পাঁচজনের মতো, আমাদের সম্পর্কটা খুব স্বাভাবিক, সাধারণ। দায়িত্বের জন্য ঋগড়া আর ভালবাসার দরুণ প্রেমটা বজায় থাকে। এটাই সম্পর্কের ভারসাম্য। এটা না থাকলে আমার মতে, বিয়ে করা উচিত নয়। এই মনোমালিন্যটা কিন্তু চলতে থাকবে ১০০ বছর ধরে।