Ad Controversy: ‘গণধর্ষণ’-এ ইন্ধন জোগানো সুগন্ধীর বিজ্ঞাপন নিয়ে গর্জে উঠলেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, বললেন, ‘জঘন্য, কুৎসিত…’
Leena Gangopadhyay: আমার বিশ্বাস, যেদিন মহিলারা রুখে দাঁড়াবেন, সেদিনই এই ধরনের বিষয় নির্মূল হবে সমাজ থেকে। না হলে চলতেই থাকবে।
জনগণের রোষের মুখে পড়েছে এক সুগন্ধী প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘শট’। তাদের তরফে প্রকাশিত সাম্প্রতিক কিছু বিজ্ঞাপনকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিযোগ তুলেছেন নেটিজ়েনরা। তাঁদের বক্তব্য, গণধর্ষণের ইন্ধন জোগাচ্ছে তাদের বিজ্ঞাপন। ওই সংস্থার বিজ্ঞাপনগুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক যত দ্রুত সম্ভব ওই অ্যাড সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। বিজ্ঞাপন সরিয়েও ফেলা হয়েছে এর মধ্যে। এদিকে সুগন্ধীর বিজ্ঞাপনে মহিলাদের ‘পণ্য’ হিসেবে তুলে ধরার বিষয়টি আবারও ঘুরে-ফিরে এসেছে। এই ধরনের বিজ্ঞাপনে যৌনতার উদ্রেক ঘটানোই কি একপ্রকার মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে? কতখানি অসুরক্ষা তৈরি হচ্ছে মহিলাদের জন্য? বিষয়টি নিয়ে কিছু কথা উদাত্ত কণ্ঠে TV9 বাংলাকে বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন, লেখিকা ও প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।
রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় TV9 বাংলাকে যা বললেন:
খুব খারাপ। জঘন্য। খুব ভাল কাজ হয়েছে যে, বিজ্ঞাপনটিকে অবিলম্বে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের বিজ্ঞাপন সম্প্রচারের অনুমতি পায় কী করে, সেটাও একটা প্রশ্ন। এই বিজ্ঞাপনগুলো তৈরিই হয়েছে কেবলমাত্র মহিলাদের অসম্মান করার জন্য। এর নেপথ্যে রয়েছে দীর্ঘকালীন পুরুষতান্ত্রিত মানসিকতা ও মেয়েদের অসম্মান করার উদ্দেশ্য। এই যে সমাজে এত ধর্ষণ বাড়ছে, মহিলাদের উপর এতকিছু ঘটছে, এত নিন্দনীয় ঘটনা ঘটছে, তার জন্য এই বিজ্ঞাপনগুলি কিন্তু দায় এড়াতে পারে না কিছুতেই।
দেখা যায়, বেশির ভাগ বিজ্ঞাপনই মহিলাকেন্দ্রিক (ক্লায়েন্ট বা ক্রেতা বেশি)। কিছু সামগ্রী বিক্রি করার জন্য মহিলাদের সেখানে দেখানো হয় এবং নানাভাবে তাঁদের অসম্মান করা হয়। এই বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও সেটাই লক্ষ্য করা গিয়েছে। অতীতেও এই ধরনের বহু বিজ্ঞাপন তৈরি হয়েছে। আমরাও নজর রাখছি। ফের যদি এই ধরনের বিজ্ঞাপন তৈরি হয়, আমরা প্রতিবাদ করব।
যিনিই এই বিজ্ঞাপনের নির্মাতা হয়ে থাকুন না কেন, তিনি শিশু নন। তিনি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তাঁরও জীবনে নিশ্চয়ই নানাস্তরে নারীরা রয়েছেন। তাঁর মা রয়েছেন, স্ত্রী রয়েছেন, হয়তো তাঁর মেয়েও রয়েছেন। তাঁরও তো ভাবা উচিত ছিল। এই ধরনের বিষয় কিন্তু দিনের পর-দিন ঘটতে পারে না।
আমার বিশ্বাস, যেদিন মহিলারা রুখে দাঁড়াবেন, সেদিনই এই ধরনের বিষয় নির্মূল হবে সমাজ থেকে। না হলে চলতেই থাকবে।