কনটেন্ট ক্রিয়েটার কন্যার সাফল্য দেখেও ভয়ে কুঁকড়ে প্রেরণার বাবা, যা বলছেন…
Prerna Das: টানা দু'বছর ধরে লাগাতার কনটেন্ট তৈরি করেছেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার প্রেরণা দাস। তিনি কিন্তু খুবই জনপ্রিয়। বাবাকে নিয়ে গিয়েছিলেন একটি গেম শোতে অংশগ্রহণ করতে। সেই শোতে মেয়ের সাফল্যে খুশি প্রেরণার বাবা শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু কেন এক ভীত তিনি? কীসের এত দুশ্চিন্তা?

মেয়ে কতদূর সাফল্য পাবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর, তথা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সেরের বাবা। লেখাপড়ায় মেধাবী কন্যা পরীক্ষায় ভাল ফল করে ব্যাঙ্কের চাকরি পেয়েছিলেন। তারপর একদিন হঠাৎই অফিস থেকে ফোন করে বাবা আশিস দাসকে বলেছিলেন, “চাকরিটা আর আমি করব না বাবা শুনছ।” শঙ্কিত পিতাকে আস্বস্ত করেছিলেন এই বলে, “তুমি চিন্তা করো না বাবা। এর চেয়ে অনেক বেশি রোজগার করে তোমাকে দেখাব।” সেই কনটেন্ট ক্রিয়েটারের নাম প্রেরণা দাস। মেয়েকে সফল দেখেও কিন্তু তাঁর বাবা ভয়ে-ভয়ে থাকেন। কিন্তু কেন? গত দু’বছর ধরে নানা ধরনের রিলেটেবল কন্টেন্ট তৈরি করে জনপ্রিয় হয়েছেন প্রেরণা। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ গেম শোতে বাবাকে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর কনটেন্ট ক্রিয়েটার হয়ে ওঠার কাহিনি সঞ্চালিকা এবং অভিনেত্রী (বর্তমানে লোকসভা নির্বাচনে হুগলির তৃণমূল প্রার্থী) রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলেন প্রেরণা।
মেয়ে কী করে? কনটেন্ট ক্রিয়েটার বিষয়টা ঠিক কী, মধ্যবিত্ত বাবা তা জানতেন না, বুঝতেনও না। কিন্তু মেয়েকে তিনি কখনওই আটকে রাখেননি। নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে সাহায্য করেছিলেন মাত্র। ফলে অফিসের কোনও এক টিফিন ব্রেকে মেয়ে যখন বাবাকে ফোন করে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তিনি আর আপত্তি করেননি। কন্যাকে তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে সাহায্য করেছিলেন সম্মতি দিয়ে। বাবার কাছে সম্মতি পেয়ে শান্তিতে ভিডিয়ো তৈরিতে মন দিয়েছিলেন প্রেরণা। পোস্ট করতে শুরু করেছিলেন সামাজিক মাধ্যমে। এখন তাঁকে প্রায় সকলেই চেনেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর তৈরি নানা ধরনের কনটেন্ট।
প্রেরণার বাবার মতো বহু বাবা-মা কনটেন্ট ক্রিয়েটের বিষয়টা বোঝেন না আজও। প্রেরণার বাবা যখন দেখলেন মেয়ে বলিউড অভিনেত্রী সারা আলি খানের সঙ্গে ভিডিয়ো তৈরি করে ভাইরাল হয়েছেন, তখন তিনি বুঝলেন, মেয়ে একটা জায়গায় পৌঁছেছেন। তবে প্রেরণার বাবার মনে ভয় আর মিটছেই না। তিনি ভাবছেন, “এখন তো জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে, এরপরে কী হবে?” প্রেরণার উত্তর, “ব্যাঙ্কের চাকরি করে যা রোজগার করতাম, তার দশ গুণ এখন রোজগার করি। তা ছাড়া যে কোন আর্টের কাজেই অনিশ্চয়তা থাকে।” এই বলেই বাবাকে আস্বস্ত করছেন মেয়ে। তবে বাবার মন তো! মনতে চায় না। মেয়েকে নিয়ে তাঁর দুশ্চিন্তা দিনরাত।
খুব সুন্দর মেকআপ করতে পারেন প্রেরণা। মাত্র ৫ মিনিটে সারতে পারতেন রূপটান। সকলে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেন, কী করে এত সুন্দর করে এত কম সময়ে সাজেন। তাঁরা পারেন না। তা দেখেই প্রেরণা ঠিক করেছিলেন, এত লোকে তাঁর কাছে জানতে চাইছেন, ভিডিয়ো তৈরি করলে কেমন হয়। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। শুরু করেছিলেন মেকআপের ভিডিয়ো পোস্ট করে। ধীরে-ধীরে রিলেটেবল কন্টেন্ট, অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা চরিত্রে অভিনয় করে ভিডিয়ো পোস্ট করতে থাকেন প্রেরণা। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না তাঁকে।





