Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bengali Movies: হিন্দি ‘আধিপত্যে’ হল হারাচ্ছে বাংলা ছবি? কী বলছেন পরিচালক থেকে হল মালিকেরা

Bengali Movies: মানুষ কি বাংলা ছবি দেখছেন না, নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও কারণ! বাংলার ডিস্ট্রিবিউটার থেকে শুরু করে প্রযোজক-পরিচালক... টিভিনাইন বাংলার কাছে উঠে এল দুই পক্ষেরই নানা যুক্তি।

Bengali Movies: হিন্দি 'আধিপত্যে' হল হারাচ্ছে বাংলা ছবি? কী বলছেন পরিচালক থেকে হল মালিকেরা
হিন্দি 'আগ্রাসনে' হল পাচ্ছে না বাংলা ছবি!
Follow Us:
| Updated on: Mar 12, 2022 | 1:37 AM

রোহন সেন, তরুণ পরিচালক– এই শুক্রবারই মুক্তি পেয়েছে তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘অপরাজিতা’। মুক্তির আগে নাকি হন্যে হয়ে হল খুঁজেছেন তিনি ও তাঁর টিম। মনের মতো হল মেলেনি তাঁর। মাল্টিপ্লেক্স দখল করেছে গাঙ্গুবাই, রাধেশ্যামেরা। ওদিকে নন্দনে হইহই করে চলা ‘আবার বছর কুড়ি পরে’ ছবির ক্ষেত্রেও অনেকটা একই চিত্র। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে শো টাইমিং, দাবি প্রযোজক অনিমেষ গঙ্গোপাধ্যায়ের। কিংবা ধরুণ ‘রসগোল্লা’ ছবির পরিচালক পাভেল তাঁর নতুন ছবি বৈশাখের প্রথম দিনেই হলে আনবেন ঠিক করেও প্রেক্ষাগৃহ না পাওয়ার দৌলতে সেই প্ল্যানও আপাতত স্থগিত। কেন হাই বাজেট হিন্দি ছবি মুক্তি পেলেই কমছে বাংলায় কমছে বাংলা ছবির শো-সংখ্যা? বাংলার ডিস্ট্রিবিউটার থেকে শুরু করে প্রযোজক-পরিচালক… টিভিনাইন বাংলার কাছে উঠে এল নানা যুক্তি।

পরিচালক রোহনের বক্তব্য অনুযায়ী বাইপাসের ধারের এক মাল্টিপ্লেক্সে তাঁর ছবি স্লট পেয়েছে। কিন্তু প্রাইম টাইম মানে সন্ধের পর থেকে শো পাননি তাঁরা। শত চেষ্টাতেও নাকি সুরাহা হয়নি। তাঁর কথায়, “ভিক্ষে করতে হচ্ছে হল মালিকদের কাছে। আইনক্সে যেখানে পাঁচটা ছবি রাধেশ্যামের সেখানে আমার ছবি একটাও স্লট পায়নি। আমায় বলা হয়েছে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেবে। কিন্তু কেন? কেন বাংলায় বাংলা ছবিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে না ‘? অন্যদিকে অর্পিতা-আবীর অভিনীত ‘আবার বছর কুড়ি পরে’র প্রযোজক অনিমেষের বক্তব্য, “রাধেশ্যামকে এতটা প্রেফারেন্স দেওয়া হচ্ছে যে আমাদের হল ধরে রাখতে অসুবিধে হচ্ছে।’ তাঁর সরাসরি অসন্তোষ, “বাংলা সিনেমা হাউজফুল হওয়া সত্ত্বেও সেই প্রায়োরিটি দেওয়া হচ্ছে না।”

তবে সব জায়গায় যে চিত্রটা এমন তা কিন্তু নয়। কিছুদিন আগেও সিনেমা হলে একই সময়ে মুক্তি পেয়েছিল উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার ছবি ‘বাবা বেবি ও’ ও এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থার ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। হিসেব বলছে, শহরের বিভিন্ন হলে সেই ছবি মুক্তি পেয়েছিল। ব্যবসা খুব একটা মন্দ হয়নি। আতসকাচে কি তবে ‘স্বাধীন ছবি নির্মাতা’রা?

এ প্রসঙ্গে অজন্তা সিনেমার কর্ণধার ও ডিস্ট্রিবিউটার শতদীপ সাহা আবার তুলে ধরেছেন ‘বাণিজ্যিক সফলতা’র দৃঢ় সত্য। তাঁর কথায়, “গোলন্দাজ আর টনিক বাদে করোনা উত্তর কালে আর কোনও বাংলা ছবিই প্রবল ভাবে ব্যবসা করতে পারেনি। আমরা যারা সিনেমা হল চালাই আমাদের তো একটা খরচা আছে। এখন কার সময়ে পুরোপুরি বাংলা ছবিকে ভর করে যদি চলি তাহলে পারব না। ভিড়ের মধ্যে প্রযোজক ছবি রিলিজ করে দিল … আগে-পরে কী আছে জানল না, তাহলে কী করে হবে?”

 

শতদীপের কথাকেই প্রামাণ্যতা দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনেমা হল মালিকের বক্তব্য, “বাংলা ছবি এখন হাতে গোনা হিট। বাঙালি সেন্টিমেন্ট আমারও রয়েছে। কিন্তু আরআরআর যেখানে আমার দর্শক টানবেই আমি জানি সেখানে কী করে স্রেফ বাংলা ছবি বলে স্লট দিয়ে দিই বলুন তো?”

ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পেয়েছিল উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার ‘বাবা বেবি ও’। সেই ছবিও গাঙ্গু-রাধের ভিড়ে বেশ কয়েকটি হল হারিয়েছে। বাণিজ্যিক লাভ ওই ছবির মোটের উপর মন্দ নয়। তাও কেন সরাতে হল? ওই ছবির প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সাফ বক্তব্য, “রসগোল্লা যখন মুক্তি পায় তখন জিরো ছবির জন্য দক্ষিণ কলকাতার ৪৫টি হলে ছবিটির কোনও শো ছিল না। ভিক্ষাবৃত্তি করে সিনেমা করিনি। করতে পারব না। শো দিলে দেবে, না দিলে না দেবে। তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমাদের সংস্থার ছবি হিট হয়, সুপারহিট হয়… এর পরেও মাল্টিপ্লেক্স আমাদের শো রাখবেন কি রাখবেন না তাঁদের ব্যাপার।”

রসগোল্লার পরিচালক ছিলেন পাভেল। তাঁর আগামী ছবি ‘কলকাতা চলন্তিকা’ মনের মতো হল না পাওয়ায় এপ্রিল মাসে মুক্তি পাচ্ছে না। তাঁর মনে কি ক্ষোভ? পাভেলের উত্তর, “হল মালিকরাও দু’বছর হল বন্ধ করে রেখে দিয়েছিলেন। কোনও বাংলা ছবির প্রযোজক তাঁদের টাকা দেয়নি। হিন্দি ছবিরও দেয়নি। এবার ওদের টাকা কামাতে হবে। তাই সেই দিকটা ওরা দেখছেন। তবে হিন্দি ছবি হাউজফুল হলে যা লাভ হলে বাংলা ছবি হাউজফুলেও তো সেই একই লাভ হবে।”

কিন্তু প্রশ্ন কোভিড পরবর্তীকালে ঝুঁকি নিতেও কতটা রাজি হল মালিকেরা? সে কারণেই কি নতুন পরিচালক বা স্বাধীন প্রযোজকদের উপর পড়ছে ‘কোপ’? এ তো গেল মাল্টিপ্লেক্স তথা শহুরে আখ্যান। মফঃস্বলেও  কি ওই একই চিত্র? বাণীরূপা সিনেমার কর্ণধার সুভাষ সেনের বক্তব্য, “মফঃস্বলে হিন্দি ছবির থেকে বাংলা ছবিই মানুষ বেশি দেখে। এখন প্যান্থার বলে জিতের পুরনো ছবি চালাচ্ছি। বাংলা ছবির কমার্শিয়াল এলিমেন্ট না থাকলে মফঃস্বলের মানুষ খুব একটা দেখে না সিঙ্গল স্ক্রিনে। টনিক চলেছিল কারণ দেব ছিল। আর তা ছাড়া ভাল কাস্টিং না থাকলে সেই বাংলা ছবি মানুষ দেখবে কেন? কোভিডে সিঙ্গল স্ক্রিন টিকে আছে অতিকষ্টে। সেখানে এমন ছবিই তো দেখানো হবে যা ব্যবসায় লাভের মুখ দেখাবে।”

কোভিডে ধসে যাওয়া ইন্ডাস্ট্রি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে একটু একটু করে। এরই মধ্যে স্বাধীন প্রযোজক অথবা পরিচালকের একটা অংশের এই ক্ষোভ কি পুরনো বিতর্ক আবারও উস্কে দিতে চলেছে? নাকি বিকল্প পন্থায় ভর করে একজোট হয় সুখী পরিবারের মতো আবারও ক্ষততে প্রলেপ লাগাতে সক্ষম হবেন হল মালিক থেকে প্রযোজক? উত্তর দেবে সময়, তবে পথটা সুগম নয়।

 

 

 

 

 

 

আরও পড়ুন: Salman Khan-Mother Teresa: নারী দিবসে সলমন খানের মাদার টেরেজাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

আরও পড়ুন: Lara Dutta-The Matrix: ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ ছবির কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন লারা দত্তা, কিন্তু কেন?

আরও পড়ুন: Amrita Rao-RJ Anmol: কেন অমৃতা রাও নিজের বিয়ের খবর লুকিয়ে রেখেছিলেন ?