Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Indraneil Sengupta Exclusive: ‘দর্শক খাবে কি না, সেটা দেখা আমার কাজ নয়’, ইন্দ্রনীল ফেলুদা সেনগুপ্ত হঠাৎ কেন বললেন এ কথা?

Inside Story: যে কোনও সিস্টেমেই কিছু ভুল হয়ে থাকে, যেমন পলিটিক্যাল সিস্টেম। যে কোনও ক্ষেত্রেই রাজনীতি থাকে। আমি যে কমপ্লেক্স সোসাইটিতে থাকি, সেখানে যেমন আছে, ঠিক তেমনই আবার ছবির জগতেও থাকে।

Indraneil Sengupta Exclusive: 'দর্শক খাবে কি না, সেটা দেখা আমার কাজ নয়', ইন্দ্রনীল ফেলুদা সেনগুপ্ত হঠাৎ কেন বললেন এ কথা?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 29, 2023 | 9:10 AM

জয়িতা চন্দ্র

তিনি টলিউডের হানি আলকাদি। তিনি এখন টলিউড়ের ফেলুদা, একের পর এক দাপুটে চরিত্র যাঁর ঝুলিতে, সেই ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত এখন টলিউড নিয়ে কতটা ভাবিত? চরিত্রের স্বার্থে নিজের ১০০ শতাংশ উজাড় করে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টায় মরিয়া সন্দীপ রায়ের ফেলুদা ২.০। হয়েছেন কটাক্ষের শিকার, হয়েছেন বহু প্রশ্নের মুখোমুখি। তবুও নিজের আদর্শ থেকে সরে দাঁড়াননি ইন্দ্রনীল, তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি কোনও রাজনীতি। TV9 বাংলাকে আর যা-যা বললেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত…

প্রথম ফেলুদা মুক্তির পর কেমন ছিল দর্শকমহলে প্রতিক্রিয়া?

মোটেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল না। সকলেই বেশ পছন্দ করেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ক’টা পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছিল, ছবি মুক্তির পর বোঝাই গিয়েছে, তা সাজানো। এটা তো হতে পারে না, কাল কেউ পছন্দ করছিলেন না, আজ হঠাৎ করে সবাই পজিটিভ হয়ে গেলেন। তার মানেই তো বিষয়টা পরিস্কার হয়ে যায়, যে সবটাই ছিল প্ল্যানিং। তবে কিছু মানুষ তো এমন থাকবেনই, যাঁদের বেশ কিছু শর্ত থাকে কোনও চরিত্রকে কেন্দ্র করে। সেক্ষেত্রে পছন্দের তালিকায় না থাকাটা যুক্তিসঙ্গত। তবে আমার মনে হয় এই সংখ্যাটা নেহাতই হাতে গোনা।

প্রথম ফেলুদা সফল, এবার দায়িত্বটা তো অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে।

আমার মনে হয়, এটা অভিনেতার চেষ্টায় তো আর ছবি তৈরি হয় না। তাই দায়িত্ব সকলেরই বাড়ে। আর বাড়তি দায়িত্বের বিষয়টায় আমি বিশ্বাস রাখি না। কারণ একটাই, প্রতিটা ছবির ক্ষেত্রেই দায়িত্ববোধটা আমার সমান থাকে। ওটা ভাল হয়েছে বলে এটায় আরও ভাল করব, এমনটা নয়। প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমি আরও-আরও ভাল করার পক্ষপাতী। আর আমি কেন, বাবুদা (সন্দীপ রায়, ফেলুদা পরিচালক), আমরা তিনজন, আমরা সকলেই এই বিষয় সচেতন। বাড়তি নয়, বরং ফেলুদা যেমন, গল্পটা তেমনভাবেই বলা। দর্শকদের চাহিদা মেটানো, সেটাকে যদি লক্ষ্য বানিয়ে ফেলি, তাহলে আমাদের উদ্দেশ্যটা ভুল হবে। আমার লক্ষ্য চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তোলা, কারও মন রাখা নয়। একটা ভাল ছবি, একটা ভাল চরিত্র, সেটাকে ভালভাবে তৈরি করা… দর্শক খাবে কি না, সেটা দেখা আমার কাজ নয়।

এবার ছবির প্রযোজনার সঙ্গে দক্ষিণী যোগের খবর রটছে (ইন্দ্রনীলের পরবর্তী ফেলুদা সিরিজ়ের প্রস্তাবিত ছবি ‘নয়ন রহস্য’)… বিষয়টা কি সত্যি?

দেখুন, আমি প্রযোজনা সংস্থার সিদ্ধান্তে কোনওদিন মাথা ঘামাই না। আমি খবর রাখিও না। রাখলেও সেটা বলা আমার এক্তিয়ার নয়। আমি আমার চরিত্রটা ছাড়া ছবির অন্য বিষয়গুলোতে না ঢোকারই চেষ্টা করি বরাবর। তবে একটা কথা বলতে পারি, ‘হত্যাপুরী’র ক্ষেত্রেও প্রযোজনা সংস্থার কোনও খামতি ছিল না। দারুণ সাপোর্ট পেয়েছিলাম, এবারও তেমনটাই হচ্ছে, হবেও।

হানি আলকাদি, ফেলুদা…, টলিউডে কি বাছাই করে কাজ করার পক্ষপাতী ইন্দ্রনীল? 

দেখুন প্রথমত, আমি মনে করি না এখন আমি কেরিয়ারের এমন পর্যায় রয়েছি, যেখানে আমি নিজের চরিত্রের ব্যাপারে অন্যদের সঙ্গে কথা বলার দরকার আছে। দ্বিতীয়ত, আমি যে শুধু টলিউডে কাজ করছি এমনটা নয়। বলিউড আছে, দক্ষিণ আছে, ফলে বাংলাই তো আমার একমাত্র সম্বল নয়। তাই কখনও ভাবিনি যে, আমার আরও কাজ পাওয়া উচিত ছিল বা আমি আমার উপযুক্ত কাজ পাচ্ছি না। এই আক্ষেপগুলো আমি রাখি না। আমি চাই যে কোনও ভাষাতেই হোক, আমি ভাল-ভাল কাজ করে যাই। যেখানে আমার কদর বেশি, সেখানে কাজ বেশি। যেখানে কম, সেখানে কাজ কম… এটা তো সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে আমার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই যে, এখানে কাজ করব, এখানে করব না।

ছবির জন্য কোনওদিন কারও সঙ্গে উপযাজক হয়ে কথা বলেছেন?   

আমি ভীষণ বাস্তববাদী। কাজের বিষয়ে আমি ভীষণ সচেতনও। আমি মনে করি পরিচালক একজন অভিনেতাকে কাস্ট করেন। পরিচালকের যদি মনে হয়, এই চরিত্রে এই বিশেষ অভিনেতাকে ভাল লাগবে, অমুক অভিনেতাই সুবিচার করতে পারবেন চরিত্রের সঙ্গে, তিনি তাঁকেই বলবেন। এবার অভিনেতা স্থির করবেন, তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন কি না। এরপর প্রযোজকের সঙ্গে কথা বলা, ছবির বাজেট স্থির হওয়া… এভাবেই একটা ছবি তৈরি হয়। মানে এটাই সঠিক পথ। এবার এটা যদি উল্টে দেওয়া হয়, অভিনেতা সিদ্ধান্ত নেবেন যে, পরিচালক কে? প্রযোজক কে হবে? অভিনেতাই গল্প নিয়ে হাজির, এটা কিন্তু সঠিক পন্থা নয়। অনেক সময় প্রযোজক বলে বসেন, ‘একে নিয়ে হবে, ওকে নিতে হবে…’ আমি এগুলোকে সমর্থন করি না। যে ক’টা ছবি আমি আজ পর্যন্ত করেছি, সে হিন্দি হোক বা বাংলা হোক, প্রতিটা চরিত্রে আমায় বেছে নেওয়া হয়েছে। ফেলুদাতেও তাই। আমি আগেও আপনাকে বলেছিলাম, সন্দীপ রায়, যেহেতু রায় ঘরানা থেকে আমায় নির্বাচন করা হয়েছে, এটার জন্য সত্যিই আমি গর্বিত।

এই যে খামতিগুলোর কথা আপনি বলছেন, সেগুলোই তো যেন বর্তমানের সিস্টেম হয়ে দাঁড়িয়েছে…

না, এটা আমায় কখনও ভাবিয়ে তোলে না। যে কোনও সিস্টেমেই কিছু ভুল হয়ে থাকে, যেমন পলিটিক্যাল সিস্টেম। যে কোনও ক্ষেত্রেই রাজনীতি থাকে। আমি যে কমপ্লেক্স সোসাইটিতে থাকি, সেখানে যেমন আছে, ঠিক তেমনই আবার ছবির জগতেও থাকে। এই সিস্টেমটাকে দায়িত্ব নিয়ে আমি বদলাতে পারব না। একা মানুষ বদলাতে পারে না, একজন-দু’জন  বদলাতে পারে না। আমি যেটা করতে পারি, এই বিষয়টা থেকে দূরে থাকতে পারি, এটা এড়িয়ে যেতে পারি। তাতে আমি কিন্তু সুখী, আমি আমার মতো করে কাজ করে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস এখনও অনেক ভদ্রমানুষ রয়েছেন সমাজে, যাঁরা সোজা পথে কাজ করতে পছন্দ করেন। আর আমি যদি এমন মানুষের দেখা কেরিয়ারে পেয়ে যাই, সেটাই আমার কাছে আশীর্বাদ। কম পাই, তাতে কোনও আক্ষেপ নেই। আর আমি এই কোরাপশনে নেই, তাতেও আমি স্বস্তিতে থাকি।

ফেলুদা সফল হবে কি না, ছবি মুক্তিতে এই ভয় কাজ করত না? 

এই বিষয় আমি একটা কথা বলতে পারি, সবাই ব্যর্থতাকে ভয় পায়। আমি বলি ব্যর্থতা নয়, সিদ্ধান্তটা ভুল। আমার কিন্তু ভয় নয়, এই ছবিটা হিট হবে না ফ্লপ, আমার ভয় হয়, যদি ফ্লপ হয়, সবাই আমার এই সিদ্ধান্তের উপর হাসবেন যে, আমি ছবিটা করতে রাজি হয়েছি। তাই ছবির ফলাফল ভয় পাওয়ার বিষয় নয়। আমি ফেলুদার প্রসঙ্গ টেনেই বলি, আমাদের সবার ওপর মানসিক চাপটা ছিল, আমার ওপর, যিতি জটায়ু হয়েছিলেন তাঁর ওপর, তোপসের ওপর। তবে সবথেকে বেশি চাপটা যিনি নিয়েছিলেন, তিনি হলেন সন্দীপ রায়। কারণ আমাদের তিনজনকে কাস্ট করাটা তাঁর সিদ্ধান্ত ছিল। আর ইন্ডাস্ট্রির একটা স্ট্রং ফোর্স আমাদের বিরুদ্ধে ছিল। তাঁকে (সন্দীপ রায়) বোঝানোর চেষ্টাও চলেছে যে. তাঁর সিদ্ধান্ত হয়তো ভুল… কিন্তু তিনি ভরসা রেখেছিলেন। আত্মবিশ্বাসীও ছিলেন।                                                                                                                          পরবর্তী অংশ ২৯.০৮.২০২৩