International Men’s Day: বিয়ে করে বেজায় চাপ! কী বলছেন টলিপাড়ার এই তিন নিউএজ ‘বর-পুরুষ’?

বীরপুরুষের গল্প বলেছিলেন কবিগুরু। আন্তর্জাতিক পুরষ দিবসে নীল ভট্টাচার্য, রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় ও গৌরব চট্টোপাধ্যায় শোনালেন 'বর-পুরুষ'দের আখ্যান। শুনল টিভিনাইন বাংলা।

International Men’s Day: বিয়ে করে বেজায় চাপ! কী বলছেন টলিপাড়ার এই তিন নিউএজ 'বর-পুরুষ'?
কী বলছেন টলিপাড়ার এই তিন নিউএজ 'বর-পুরুষ'?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 19, 2021 | 7:15 PM

বিহঙ্গী বিশ্বাস: বিয়ে করেছেন বছর গড়ায়নি তাঁদের। তিন জনেরই লাভ ম্যারেজ। মানে বিয়ের আগে থেকেই একে অপরকে চিনে নিয়েছেন ভাল ভাবেই। নচিকেতার জনপ্রিয় গান অনুযায়ী তাঁদের কাছেও কি জীবিতর বিপরীত বিবাহিত? নাকি ঠিক উল্টো? বিয়ের পর বাড়তি কী কী কাজ যোগ হল তাঁদের ডেইলি রুটিনে? ‘ছেলেদের কাঁদতে নেই’– জাতীয় কনসেপ্টে কতটা বিশ্বাস রাখেন তাঁরা? বীরপুরুষের গল্প বলেছিলেন কবিগুরু। আন্তর্জাতিক পুরষ দিবসে নীল ভট্টাচার্য, রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় ও গৌরব চট্টোপাধ্যায় শোনালেন ‘বর-পুরুষ’দের আখ্যান। শুনল টিভিনাইন বাংলা।

গৌরব চট্টোপাধ্যায় স্ত্রী- দেবলীনা কুমার বিয়ের তারিখ- ৯ ডিসেম্বর ২০২০

“আলাদা করে কিছু বুঝতে পারছি না। রাতে একসঙ্গে থাকা ছাড়া আর যে কিছু পরিবর্তন হয়েছে এমনটা কিন্তু মোটেও না। আগেও যেমন জীবন চলছিল এখনও ঠিক একই রকম। তবে বিয়ে করলে দায়িত্বের কিছু বোধ সবার আসে। আমার ক্ষেত্রে এই দায়িত্বের ব্যাপারটা অনেক ছোট থেকেই এসেছে। জীবনের এক দীর্ঘ সময় বোর্ডিং স্কুলে কাটিয়েছি। ছোটবেলা যে খুব বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছি এমনটা কিন্তু মোটেও নয়। তাই বিয়ে করেছি মানেই এক বছরে জীবন অনেক পাল্টে গিয়েছে এমনটা বলা যায় না। হয়তো পরবর্তীতে বাচ্চাটাচ্চা হলে কিছু পরিবর্তন এলেও আসতে পারে। আর ছেলেরা কাঁদেনা এই কনসেপ্ট আমার ক্ষেত্রে একেবারে খাটে না। আমি কাঁদি। কোনও ওয়েব সিরিজের ইমোশোনাল দৃশ্য দেখে কেঁদে ফেলি আবার বাবা যে আমার সবচেয়ে প্রিয়জন তিনি চলে যাওয়ার পর আমার চোখ থেকে এক ফোঁটাও জল বের হয়নি, হয়তো ভীষণ শকড হয়ে গিয়েছিলাম তাই”

Gourab_Devlina

গৌরব-দেবলীনা

নীল ভট্টাচার্য স্ত্রী- তৃণা সাহা বিয়ের তারিখ- ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

“আগে বাড়ি এসে বোর হয়ে যেতাম। এখন বাড়ি ফিরলে মনে হয় বউ আছে। রাত জেগে কথা হয়। সিনেমা নিয়ে আলোচনা হয়। একাকীত্ব কেটেছে বউয়ের জন্য। আর চাপ? না আমাকে অন্তত নিতে হচ্ছে না। ম্যানহুডে বদল আসেনি। জীবনযাত্রাও ঠিক আগের মতোই আছে। যারা বলে থাকেন বিয়ে মানেই হেব্বি চাপ, তাঁদের বলে রাখি বিয়ে করলে কোনও অতিরিক্ত চাপ হয় না। ওটা ভাবলেই চাপ, না ভাবলেই চাপ নেই। আর সত্যি কথা বলব একটা? আমি বাবা-মা’র সঙ্গে থাকি। তাই সাংসারিক কোনও দায়িত্বও সেভাবে নিতে হয় না। বরং বিয়ের আগে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হত। কারণ, আমার স্ত্রী মানে তৃণা আমার থেকে অনেক বেশি দায়িত্ববান। আর কান্নাকাটির কথা যদি আসে, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবাই কাঁদে। ইমোশনাল লেস মানুষ ছাড়া সবাই কাঁদে। আমার ইমোশন রয়েছে, তাই সেই তালিকাতে আমিও রয়েছি।”

নীল-তৃণা।

রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় স্ত্রী-প্রমিতা চক্রবর্তী বিয়ের তারিখ- ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

” বিয়ের আগে ও পরে দুই জীবনের দুই রকমের দায়িত্ব। বিয়ের আগের দায়িত্ব ঠিকমতো সময় বার করতে পারছি কিনা, বিয়ের পরের দায়িত্ব এটা এটা নিয়ে আসার কথা ছিল মনে করে আনতে পারছি কিনা। আমার মা’কে ঠিক রাখতে হবে, আমার বৌকে ঠিক রাখতে হবে গোটা পরিবারকেই ঠিক রাখতে হবে এমনটা মাথায় ঘোরে এখন। আগে ব্যাপারটা শুধু সময় দেওয়া আর সময় বার করে নেওয়ার মধ্যেও সীমাবদ্ধ ছিল। এখন কিন্তু ব্যাপারাটা খানিক আলাদা। চাপ বাড়েনি, তবে দায়িত্ব বেড়েছে। বাবাও মারা গিয়েছেন, মা এইখানে। এখন আনাজপাতি থেকে শুরু করে প্রমীতার ফেসওয়াশ– কিনে আনতে হয় মাঝেমধ্যেই। আবার উল্টোটাও রয়েছে, প্রমীতাও ঠিক সময় মতো মনে করিয়ে দেয়, এই জিনিসটা নিয়েছি কিনা, ওই জিনিসটা ফেলে আসছি কিনা। যেমন মা করত, এখনও করে। আজকে যদি বাবা বেঁচে থাকত তাহলে হয়তো আমার মধ্যে এতটা দায়িত্ববোধ আসত না, কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেক আলাদা। ব্যাচেলর জীবনে যেমন খেলা দেখছি, রেস্ট নিচ্ছি, বসে বসে পিৎজা খাচ্ছি…এখন পিৎজাও খাচ্ছি, খেলাও দেখছি একই সঙ্গে বাড়ির কাজগুলো ঠিকঠাক করছি না সে দিকেও নজর রাখছি। তবে এই নজর রাখা বা বাড়তি দায়িত্বকে বোঝা মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে না ভীষণ ভাবে জীবন পাল্টে গিয়েছে বা আমি খারাপ আছি। বরং ভাল লাগছে নতুন দায়িত্ব পেয়ে। উপভোগ করছি গোটা বিষয়টা।”

রুদ্রজিৎ-প্রমিতা।