Monami Ghosh Exclusive: চরিত্রটার কথা আগে থেকে জানতাম না… গিয়ে শুনলাম মৃণাল সেনের বায়োপিক: ‘পদাতিক’ প্রসঙ্গে মনামী

Monami Ghosh: যখন প্রথম শুনি তখন দায়িত্ববোধটা মাথায় আসেনি। যত দিন যাচ্ছে, তত মানুষের এই উত্তেজনা, হইচই, এত আশা, এগুলো যেন কোথাও একটা আরও বেশি সিরিয়াস করে তুলছে আমায়।

Monami Ghosh Exclusive: চরিত্রটার কথা আগে থেকে জানতাম না... গিয়ে শুনলাম মৃণাল সেনের বায়োপিক: 'পদাতিক' প্রসঙ্গে মনামী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 03, 2023 | 6:21 PM

জয়িতা চন্দ্র

সত্যজিৎ রায়ের পর এবার পর্দায় মৃণাল সেন। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের কালজয়ী পরিচালকের বায়োপিক নিয়ে আসছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। মৃণাল সেনের ভূমিকায় রয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। আর বিপরীতে, অর্থাৎ মৃণাল-জায়া গীতা সেনের চরিত্রে মনামী ঘোষ। বছর শেষে এই খবর পেয়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন মনামী। মৃণাল-পত্নীর ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়ার মুহূর্তটা কেমন ছিল, TV9 বাংলাকে জানালেন মনামী ঘোষ।

খবর পাওয়ার মুহূর্তের অনুভুতিটা কেমন ছিল?

পরিশ্রম কখনও বৃথা যায় না। সেটারই হয়তো ফল এটা। শুধু এই চরিত্রটা পাওয়া নয়, গত কয়েকবছর ধরেই বেশ ভাল কাজ হচ্ছে। নতুন বছরটা শুরুই হল একটা বড় খবর দিয়ে। আমি নিজেও যে এই কাজটা সম্পর্কে খুব আগে জেনেছি, এমনটা নয়। এক সপ্তাহ আগেই আমার কাছে এই খবরটা আসে। এমন না যে আগে থেকে জানতাম, এখন সেটা প্রকাশ্যে এসেছে।

কীভাবে প্রস্তাবটা পেলেন?

মাঝে ছিলাম না অনেকদিন, বেড়াতে গিয়েছিলাম। ফিরেই দু’-একদিনের মধ্যে সৃজিতদার (সৃজিত মুখোপাধ্যায়) কাছ থেকে ফোনটা পাই। তখনও জানি না কী হতে চলেছে। সৃজিতদা বললেন, ‘একবার অফিসে আয়’। আমি স্থির করি এক-দু’দিনের মধ্যে যাব (২০২২-এর শেষ সপ্তাহ)। ওই দিনই আবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলবেন, ‘না আজই আসতে হবে। কারণ যে চরিত্রটার জন্য ডাকা হচ্ছে, আগামীকালই তার লুক টেস্ট।’ তখনও চরিত্রটা কি জানি না, অফিসে গিয়ে শুনলাম মৃণাল সেনের বায়োপিক। তখন আমার অনুভূতিটা ঠিক কেমন ছিল বলে বোঝাতে পারব না, কারণ এখন তা অনেকটা সয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই মুহূর্তে খবরটা আমার কাছেও চমক ছিল।

কীভাবে শুরু হচ্ছে কাজ? শুটিংই বা কবে থেকে?

যেদিন কাজের প্রস্তাব আসে, সেদিন গীতাদির একটা সাক্ষাৎকারের ক্লিপও দেখলাম। মৃণাল সেনের পাশে দাঁড়িয়ে ইন্টারভিউ দিচ্ছিলেন। এরপর শুরু হয় লুকটেস্ট। অনেকগুলো লুক ছিল, বিভিন্ন বয়সের লুক, এখনও তা নিয়েই কাজ চলছে। চরিত্রটার মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করছি। এখনও স্ক্রিপ্ট রিডিং বাকি, ওয়ার্কশপ হবে। সৃজিতদা যেভাবে গাইড করছেন, সেভাবে চলছি এখন। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শুটিং শুরু হবে। আমারটা আরও একটু পরে শুরু হবে। আমার দায়িত্ব চরিত্রটার সঙ্গে সুবিচার করা। এটা কেবল আমার নয়, প্রত্যেক অভিনেতারই প্রধান ধর্ম। আমিও তাই-ই করর চেষ্টা করব।

কেরিয়ার গ্রাফ মনামীর এখন তুঙ্গে, একের পর এক ভাল কাজ এখন মনামীর ঝুলিতে…

শেষ কয়েকবছর ধরে আমি আমার স্বপ্নগুলোকে সত্যি হতে দেখছি। একটু-একটু করে স্বপ্নে বাঁচা। সবটাই হঠাৎ করে যেন হয়ে যাচ্ছে। আপনি জানলে অবাক হবেন, যখন আমি ‘বেলাশেষে’ ছবির প্রস্তাব পেয়েছিলাম, তখন আমি ‘বেলাশেষে’ করতে চাইনি। এত বাঘাবাঘা স্টারকাস্টের মাঝে ছোট্ট একটা চরিত্র…। অথচ দেখুন, তার জন্যই কিন্তু আজ ‘বেলাশুরু’ হল। ‘বেলাশুরু’ হল বলেই ‘টাপাটিনি’ হল, আর ২০২২ জুড়ে সকলে আমায় ‘টাপাটিনি গার্ল’-এর তকমা দিলেন। এগুলো না আমার বিশ্বাস, ভগবান অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখেন। একের পর এক কাজ হবে, এই ম্যাজিকটা যার সঙ্গে ঘটে সেই-ই বুঝতে পারে। এটার জন্যই হয়তো আমার কখনও কোনও কাজ করা হয়নি। সব কিছু হওয়া বা না-হওয়ার পিছনে কারণ থাকে। এখন এগুলো বুঝিতে পারি। সেই ভগবানই শেষ কয়েক বছর ধরে একের পর এক পরিকল্পনা করে চলেছেন আমার জন্য, এই ‘মেয়েটার স্বপ্ন একটু একটু করে পূরণ করি’। আমি সকলের মাঝে ছিলাম বরাবরই, তবে এটা একটা-একটা করে স্বপ্নকে পার করা, তবে এর কোনও শেষ নেই। এটা একটা সুন্দর সফর, কালই ভাবছিলাম, এটা-এটা করে ফেললাম, আমার স্বপ্নপূরণ হয়ে গেল, তা নয়। এটা একটা জার্নি, প্রতিটা একটা স্টপেজ, আর প্রতিটা স্টপেজই একটা বিশেষ অনুভূতি। তেমনই একটা স্টপেজ ‘পদাতিক’।

মৃণাল সেনের স্ত্রী চরিত্রে অভিনয়, ছকভাঙা মনামী বড় চ্যালেঞ্জ?

যখন প্রথম শুনি তখন দায়িত্ববোধটা মাথায় আসেনি। যত দিন যাচ্ছে, তত মানুষের এই উত্তেজনা, হইচই, এত আশা, এগুলো যেন কোথাও একটা আরও বেশি সিরিয়াস করে তুলছে আমায়। অবশ্যই সৃজিতদার সঙ্গে আমি বহুদিন ধরে কাজ করতে চাইছি। এবার একে-একে খোলস ছাড়ার মতো অবাক থাকা ‘আমি’, প্রথমত, সৃজিতদার সঙ্গে কাজ করছি। তারপর জানতে পারি, মৃণাল সেনের বায়োপিকে তাঁর স্ত্রীর চরিত্রে আমি। এরপর আসে মৃণাল সেনের চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়ের খবর, এত ভাল অভিনেতা উনি…। আমার মনে হয় সেটে একটা সুন্দর মুহূর্ত তৈরি হতে চলেছে। একটা অন্য পরিবেশ পেতে চলেছি। এবার আসি আমার প্রসঙ্গে। গীতা সেনের চরিত্র মানে একেবারে অন্য মনামী। একেবারে সাধারণ, এভাবে আমায় কখনও কেউ দেখেনি। ছকভাঙা লুকে নিজেকে তৈরি করা। যে ক’টা দিন সেটে থাকব, সে ক’টা দিন এই চরিত্রে বাঁচা। ফলে এই সমস্তটাই একটা চমক। যে শব্দটা বারে বারে সকলে আমার ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে, তবে আমার জন্য শুধু চমক নয়। আমার জন্য এটা বড় দায়িত্ব। আমি চেষ্টা করব আমার পক্ষে যতটা সম্ভব ততটাই এই চরিত্রের জন্য উজাড় করে দেওয়া। নিজের ১০০ নয়, ১০০০ শতাংশ দিয়ে চরিত্রটার সঙ্গে সুবিচার করা।