“বাড়ির ছাদে বাবা তুলে আনতেন আস্ত প্রেক্ষাগৃহ”, জন্মদিনে বললেন সন্দীপ রায়

স্মৃতির সরণী দিয়ে হাঁটতে-হাঁটতে সন্দীপ বলেন, "এটাই ছিল আমার শৈশবের সেরা আকর্ষণ।"

বাড়ির ছাদে বাবা তুলে আনতেন আস্ত প্রেক্ষাগৃহ, জন্মদিনে বললেন সন্দীপ রায়
পরিচালক সন্দীপ রায়
Follow Us:
| Updated on: Sep 08, 2021 | 11:36 PM

৮ সেপ্টেম্বর সন্দীপ রায়ের জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবছরও বাড়িতে কিছু সেলিব্রেশন হচ্ছে। কিন্তু করোনার কারণে আয়োজন পরিশীলিত। নয়তো প্রতিবারই বিশেষ পদ রান্না হয়। বাড়িতে ভিড় করেন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা। বাবা সত্যজিৎ রায় যখন বেঁচে ছিলেন, একমাত্র সন্তানের জন্য আরও বড় আয়োজন করতেন তিনি। জন্মদিনে বাবাকে মিস করেন সন্দীপ। আসলে মিস করেন প্রতিদিনই। TV9 বাংলাকে ব্যক্ত করলেন সেই কথাই। স্মৃতির পাতা থেকে উঠে এল “পুরনো সেই দিনের কথা…”।

সন্দীপ রায় বলেন, “কাউকেই সেভাবে আমন্ত্রণ করা হয় না আর। কিন্তু অনেকেই আসেন বাড়িতে। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, ইউনিটের কয়েকজন প্রতিবারই আসেন বাড়িতে। রাতে একটু ভাল-মন্দ খাওয়াদাওয়া হয়। যদিও প্যান্ডেমিকে একটু অন্যরকম বিষয় হয়ে গিয়েছে। লোকের যাতায়াত এমনিতেই কমে গিয়েছে। কিন্তু বাবা থাকাকালীন আমার জন্মদিন বড় করে হত।”

তাঁদের লেক টেম্পল রোডের বাড়ির বৈশিষ্ট্য ছাদ। সেই বিরাট ছাদে প্রতিবছর লুকিয়ে থাকত কোনও না কোনও সারপ্রাইজ। সেই সারপ্রাইজের নাম সিনেমা। সন্দীপ বলেন, “ওই ছাদেই পালন করা হত আমার জন্মদিন। ম্যারাব বেঁধে খাওয়াদাওয়া হত। শুরুর দিকে একটা বিষয় ঘটত ঘটা করে। আমার প্রতি জন্মদিনে একটি করে ছবি দেখানো হত। মেট্রো, নিউ এম্পায়ারের মতো সিনেমা হলের ১৬ মিলিমিটারের লাইব্রেরি ছিল। সেখান থেকে ছবি আনা হত। সেগুলো ছাদে ১৬ মিলিমিটারের প্রোজেক্টারে দেখানো হত। প্রোজেক্টার ভাড়া করতেন বাবা। ছবিগুলোও ভাড়া করে আনতেন। সে সময় হলিউড কোম্পানির যে সব অফিস কলকাতায় ছিল, সে সব অফিস থেকে ক্যাটালগ পাঠানো হত বাবাকে। ক্যাটালগের ইন্টারেস্টিং ছবির পাশে দাগ দিতেন বাবা। কাজেই খুবই হইহই করার মতো ব্যাপার ঘটে যেত বাড়িতে।”

স্মৃতির সরণী দিয়ে হাঁটতে-হাঁটতে সন্দীপ বলতে থাকেন, “এটাই ছিল আমার শৈশবের সেরা আকর্ষণ। শুধু আমার নয়, আমার স্কুলের বন্ধুরাও তাকিয়ে থাকত এই দিনটার দিকে। ওরা আসত বাড়িতে। আত্মীয়-স্বজন আসতেন। সব শেষে ছবি দেখানো হত। এখনও ভাবলে মনটা ভাল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে মন খারাপও হয় বিস্তর। স্মৃতি সত্যিই মধুর। আমার শৈশবটা এই ভাবেই সাজিয়ে দিয়েছিলেন বাবা।”

এছাড়াও একমাত্র সন্তানের জন্য দিনটা স্পেশ্যাল করে তুলতেন সত্যজিৎ রায়। ছেলেকে দিতেন নানা ধরনের বই। সন্দীপ বলেন, “এই বাড়িতে সবচেয়ে বেশি পেয়েছি বাবা-মাকে। প্রতিটি ঘরেই স্মৃতি জড়িয়ে আছে। শুধু আজ নয়, প্রত্যেকদিনই বাবা-মাকে মিস করি। সেই অভাব খানিকটা হলেও এখন পূরণ করেন আমার স্ত্রী ও পুত্র।”

আরও পড়ুন: “এই জীবনে তোমার মতো অর্ধেকও যদি হতে পারি…”, আবেগতাড়িত পোস্ট অর্জুনের

আরও পড়ুনদুই ‘বার্থ ডে বয়’কে একসঙ্গে একফ্রেমে পেলেন সাহেব… আর কী বললেন?

আরও পড়ুন: “মনে রেখো না…”, কার উদ্দেশে বললেন অনুরাধা

গ্র্যাফিক্স: অভীক দেবনাথ