Sudipta Chakraborty: বড় পর্দায় তাঁর প্রথম পরিচালকের মৃত্যু প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে সুদীপ্তা লিখলেন, ‘বাংলা সিনেমা দোলনদিকে ঠিকমত ব্যবহারই করতে পারেনি’
Pinaki Chowdhury-Dolon Roy: পিনাকী চৌধুরীর কাছে সুদীপ্তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন দোলনই। পরিচালকের 'সংঘাত' ছবিতে অভিনয় করেন তাঁরা দু'জনেই
জীবনের প্রথম সবকিছুই মনের মধ্যে দাগ কেটে যায়। ঠিক যেমন দাগ কেটে রয়েছে অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর মনে। সম্প্রতি তিনি হারিয়েছেন জীবনের প্রথম পরিচালককে – পিনাকী চৌধুরী। যে পরিচালকের নির্দেশনায় বড় পর্দায় অভিনয় করেছিলেন ‘সংঘাত’ ছবিতে। সুদীপ্তাকে তাঁর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন আরও এক অভিনেত্রী দোলন রায়। পিনাকীর চলে যাওয়ায় ফেসবুকে লম্বা খোলা চিঠি লিখেছেন সুদীপ্তা।
কী লিখেছেন সুদীপ্তা:
আপনার আত্মার শান্তি কামনা করি পিনাকীদা। আলোর উৎসবের মাঝে দুঃসংবাদ ! আজ খবর পেলাম পিনাকীদা আর নেই। গতকাল দেহত্যাগ করেছেন। আমার সিনেমার কেরিয়ারে প্রথম পরিচালক হিসেবে পেয়েছি পিনাকীদাকে। বলা ভাল, বড় পর্দায় আমাকে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ দেন পিনাকীদা। সালটা বোধ হয় ১৯৯৫, কী ৯৬। আমি তখন নাটক করি আর চুটিয়ে টিভি সিরিয়াল, টেলিফিল্মে অভিনয় করি। একাধিক সিরিয়ালে আমার সহ-অভিনেত্রী, আমার দিদি-সম দোলনদি (দোলন রায়) আমাকে নিয়ে গেলেন পিনাকীদার কাছে। তাঁর আগামী সিনেমা ‘সংঘাত’-এর জন্য দোলনদি অভিনীত চরিত্রের বোনের চরিত্রের জন্য অভিনেত্রী খুঁজছিলেন। আমার সঙ্গে কথা বলে সম্ভবত পছন্দ হল তাঁর। আমাকে নিয়ে নিলেন। সেই প্রথম সিনেমায় অভিনয়। দোলনদি তো ছিলেনই, সঙ্গে এক ফ্রেমে অভিনয় করার সুযোগ হল চিত্রা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, তাপস পালের মত স্টলওয়ার্টদের সঙ্গে। আরও অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছি এ যাবৎ। তবে নিজেকে বড় পর্দায় দেখার সুযোগ প্রথম পিনাকীদাই করে দিয়েছিলেন। সে অভিজ্ঞতা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। তাঁর জন্য চিরকৃতজ্ঞ থাকব। শান্তি তে ঘুমোন পিনাকীদা। এই সিনেমায় অভিনয় করেই দোলনদি সে বছর জাতীয় পুরস্কার ‘স্পেশ্যাল জুরি মেনশন’ পান। আজকের প্রচার সর্বস্ব পৃথিবীতে সে কথা আর কেউ মনে রেখেছেন কি না, বা আদৌ কতজন জানেন, আমার জানা নেই। আমার প্রায়ই মনে হয়, বাংলা সিনেমা দোলনদিকে ঠিকমত ব্যবহারই করতে পারেনি…আজও। পিনাকীদা ও যথেষ্ট সম্মান বা নিজের মত করে ছবি তৈরি করার আরও সুযোগ পেলেন না বলেই আমার ধারণা।”
কালীপুজোর দিন লেক গার্ডেন্সে নিজের বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন পিনাকী চৌধুরী। ক্য়ান্সারে আক্রান্ত হয়ে অনেকদিন ভুগেছেন। তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল। বাড়িতে ফিরেই রবিবার ভোররাতে মারা যান পরিচালক। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।