রক্তাল্পতা একটি মারাত্মক সমস্যা! ঘরোয়া উপায়ে রোগের প্রতিকার পেতে কী কী করবেন

রক্তাল্পতার বিষয়টি যদি প্রথম দিন থেকে গুরুত্ব না দেওয়া হয়, তাহলে তা হার্ট ও ফুসফুসে প্রভাবিত করে জটিলতা বাডিয়ে দিতে পারে।

রক্তাল্পতা একটি মারাত্মক সমস্যা! ঘরোয়া উপায়ে রোগের প্রতিকার পেতে কী কী করবেন
রক্তে লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে, তাকে অ্যানিমিয়া বলা হয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 01, 2021 | 2:59 PM

করোনাকালে ক্যানসার, ডায়াবেটিসের মতো তলে তলে মারাত্মক আকার ধারণ করছে রক্তাল্পতার সমস্যা। সাধারণত এই রোগের শিকার হোন মহিলারা। রক্তে লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে, তাকে অ্যানিমিয়া বলা হয়। হিমোগ্লোবিন হল রক্তকণিকায় অবস্থিত একপ্রকার প্রোটিন যার মধ্যে আয়রন ও ট্রান্সপোর্টস অক্সিজেন থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিংশ শতাব্দীতে পৌঁছেও গ্রামের মহিলাদের মধ্যে এখনও অ্যানিমিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি হয়নি। অপুষ্টির কারণে এই রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে নীচে নেমে গেলে সেটাই রক্তাল্পতায় পরিণত হয়।

রক্তাল্পতার বিষয়টি যদি প্রথম দিন থেকে গুরুত্ব না দেওয়া হয়, তাহলে তা হার্ট ও ফুসফুসে প্রবাবিত করে জটিলতা বাডিয়ে দিতে পারে। তবে রক্তাল্পতা রোধের জন্য নিয়মিত আমলার জুস ও লাল বিটরুটের জুস খাওয়ার অভ্যেস গড়তে পারেন। এই উপকারী জুসের কারণে রক্তের মধ্যে তাজা অক্সিজেন সরবরাহ হয়। এছাড়া প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

তবে ঘরোয়া উপায়ে যেমন রক্তাল্পতা রোগের নিরাময় করা সম্ভব, তেমন আয়ুর্বেদের মাধ্যমেও এই রোগের উপশম করা সম্ভব। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে রক্তাল্পতাকে পান্ডু বলা হয়। শরীরের অগ্নির সামঞ্জস্য হ্রাস হলে অ্যানিমিয়ার ইঙ্গিত দেখা যায়। শরীরে স্বাভাবিকভাবে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ হল, পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩.৮ থেকে ১৭.২ গ্রাম/ ডেসিলিটার ও মহিলাদের ১২.১ থেকে ১৫.১ গ্রাম/ ডেসিলিটার। এই পরিমাপ থেকে লোহিত রক্তকণিকা হ্রাস পেলে ক্লান্তি, দুর্বলতার মতো উপসর্গ দেখা যায়শরীরে স্বাভাবিকভাবে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ হল— পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩.৮ থেকে ১৭.২ গ্রাম/ ডেসিলিটার। মহিলাদের ১২.১ থেকে ১৫.১ গ্রাম/ ডেসিলিটার। শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, ফ্যাকাসে চামড়া, বুকে ব্যথা রক্তল্পতার লক্ষণ।

আরও পড়ুন: প্রতিদিন সকালে হোয়াইট ব্রেড খাচ্ছেন? ডায়াবেটিস থেকে ওবেসিটি, এর প্রভাব কিন্তু মারাত্মক!

ঘরোয়া উপায়ে রক্তাল্পতা রোগের প্রতিকার করতে কী কী করবেন , তা দেখে নিন একঝলকে…

১. সারারাত ২-৩ চা চামচ মেথি জলে ভিজিয়ে রাখুন। এবার একটি প্রেসারকুকারে একমুঠো চাল নিয়ে রান্না করুন। স্বাদমতো নুন দিন। জলে ভেজানো মেথিগুলি দিয়ে রান্না করুন। একমাস ধরে নিয়মিত এই মেথি রাইস খেলে রক্তাল্পতার প্রবণতা কমে যায়।

২. একটি মিক্সচারে এক কাপ অ্যাপেল জুস ও আধ কাপ বিটরুট দিন। ব্লেন্ড করা হলে তাতে মধু বা গুড় দিয়ে ফের একবার ব্লেন্ড করে একটি থকথকে জুস বানান। দিনে দুবার এই জুস খেলে উপকার পাওয়া যায়।

৩. ২ ঘণ্টা ধরে গরম জলে কালো তিল ভিজিয়ে রাখুন। এবার সেটি পেস্ট বানিয়ে তাতে মধু বা গুড় দিয়ে ফের একবার ব্লেন্ড করুন। নিয়মিত এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এই উপকারী পেস্টই ব্যবহার করতে পারেন।

৪. দেহে রক্তকোষ বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন একটি করে বেদানা খান।

৫. প্রতিদিন ২টি করে কলা খাওয়ার অভ্যেস করুন। কলাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৬. নিয়মিত আমলা ও বিটরুটের জুস পান করলে রক্তে লাল লোহিত রক্তকণিকা কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়। দেহে শক্তি বাড়ায় ও পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরের অন্দরে অক্সিজেনের মাত্রা প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।