Dengue: ২০১৯-র ‘আউটব্রেক’কেও কি ছাড়িয়ে গেল এবারের ডেঙ্গি? যা বলছেন বিশিষ্টরা…

Kolkata: শীত এলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে শুরু করে। কিন্তু অগস্ট মাস থেকে যে হারে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে ডিসেম্বরেও নিস্তার নেই ডেঙ্গির হাত থেকে।

Dengue: ২০১৯-র 'আউটব্রেক'কেও কি ছাড়িয়ে গেল এবারের ডেঙ্গি? যা বলছেন বিশিষ্টরা...
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 29, 2022 | 4:46 PM

বঙ্গ থেকে বর্ষা বিদায় নিলেও ডেঙ্গির প্রকোপ আপাতত থাকছে। শীত না পড়া পর্যন্ত বাড়তেই থাকবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা—অন্তত এমনটাই ধারণা করছে স্বাস্থ্যকর্তারা। শুধু তাই-ই নয়, আগামী দু’মাস আরও মারাত্মক হতে পারে ডেঙ্গি পরিস্থিতি। শুক্রবার ডেঙ্গি নিয়ে স্বাস্থ্যভবনে আয়োজিত সাপ্তাহিক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। ডেঙ্গির প্রকোপের সঙ্গে বেড়ে চলেছে পজিটিভিটি রেট। সব মিলিয়ে উদ্বেগ তৈরি করছে মশাবাহিত রোগ।

রাজ্যে এ বার ডেঙ্গি পরিস্থিতি যে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, তাতে ২০২২ সাল বিগত পাঁচ-ছয় বছরের রিপোর্টকে অনায়াসে পিছনে ফেলে দেবে। ২০১৯ সালকে ডেঙ্গির ‘আউটব্রেক’ বছর হিসেবে ধরা হয়। ২০২২ সাল ২০১৯-কেও পিছনে ফেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। যেভাবে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, তাতে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাপিয়ে যেতে পারে।

শীত এলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে শুরু করে। কিন্তু অগস্ট মাস থেকে যে হারে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে ডিসেম্বরেও নিস্তার নেই ডেঙ্গির হাত থেকে। সাধারণত, শীত পড়লে ডেঙ্গির প্রকোপ কমে যায়। কিন্তু ২০২২-এর পরিস্থিতি সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে না। কেন এমন হচ্ছে? এ প্রসঙ্গে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মুখ্য উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

তপনবাবু জানান, দুর্গাপুজোর সময় প্যান্ডেল তৈরি করতে রাস্তায় গর্ত করা হয়েছে। তখন যে বৃষ্টি হয়েছিল, তার জল ওখানে জমেছে। ওই জমা জল থেকে যে ডেঙ্গির মশা জন্ম নিয়েছিল, তার প্রভাব এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কালীপুজোর রাতেও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর প্রভাবটা কিছুদিন পর দেখা যাবে। কারণ মশা ডিম পেড়ে সেখান থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা হতে ৭-১০ দিন সময় লাগে। আর ডেঙ্গি মশা যদি কোনও ব্যক্তিকে কামড়ায়, তার শরীরে ডেঙ্গি রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতেও আরও এক সপ্তাহ সময় লাগে। সুতরাং, এখনও বোঝা যাচ্ছে না ডেঙ্গি কী আকার ধারণ করতে পারে আরও দু’-তিন সপ্তাহ ধরে।

তাপমাত্রা কমলে ডেঙ্গির প্রকোপও ধীরে-ধীরে কমে যায়। শহরে শীত আসতে এখনও সময় রয়েছে। তবু বিশেষজ্ঞদের ধারণা ডিসেম্বর অবধি থাকতে পারে ডেঙ্গির প্রকোপ। এ প্রসঙ্গে TV9 বাংলাকে জেনারেল ফিজিশিয়ান ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “এখনও সেই ঠান্ডা পড়েনি যে ডেঙ্গির প্রকোপ কমে যাবে। মোটামুটি ১২-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা নামলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডায় ডেঙ্গির মশা বাঁচতে পারে না। কিন্তু ‘ওভার উইন্টারিং’ (অতিরিক্ত শীত)-এ কিছু-কিছু ডেঙ্গির মশা বেঁচে যায়।” সুতরাং, আগামী দিনে ডেঙ্গি কী রূপ ধারণ করতে চলেছে, কেউই সুস্পষ্টভাবে বলতে পারছেন না। এক্ষেত্রে সচেতনতাই ডেঙ্গির হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।

এ বছরের ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৪২,৬৬৬। গত এক সপ্তাহে ৫,৯৩৬ জন মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা উত্তর ২৪ পরগনা (৮,৮২৭), হাওড়া (৪,৮৬৪), কলকাতা (৪৭৪৭), হুগলি (৪৩৩৫), মুর্শিদাবাদ (৪২০৯)।