Google Doodle: চিকেনপক্সের টিকা আবিষ্কার করে লক্ষাধিকের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন এই জাপানি ভাইরোলজিস্ট, জন্মদিনে শ্রদ্ধা গুগলের
চিকেনপক্সের মতো মারাত্মক সংক্রামককে ঠেকাতে ১৯৭৪ সালে ভেরিসেলা ভাইরাসকে লক্ষ্য করে প্রথম গুটি বসন্ত বা চিকেন পক্সের ভ্যাকসিন তৈরি করেন ডাঃ মিচিয়াকি তাকাহাশি। আজ এই বিশিষ্ট জাপানি ভাইরোলজিস্টের ৯৪ তম জন্মবার্ষিকী।
আকাশে-বাতাসে বসন্তের নেশাই এখন মারাত্মক। করোনার থেকেও বেশি ছোয়াচেঁ হল জলবসন্তের সংক্রমণ। বর্তমানে করোনাভাইরাস নিয়ে যেমন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, ১০-১৫ বছর আগে জলবসন্তের মত অত্যন্ত সংক্রামকের ভয় মানুষ ভয়ে সিঁটিয়ে থাকত। বসন্তের সঙ্গে সঙ্গে ভ্যারিসেল্লা ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে। চিকিত্সকদের মতে, আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে এই ভাইরাস বেশি মাত্রায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। উত্তুরে হাওয়া আবার ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এই সময়। এছাড়া রোগের সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকে মানুষের কুসংস্কারও।
চিকেন পক্স ‘ভ্যারিসেলা ভাইরাস’-এর কারণে হওয়া একটি ছোঁয়াচে রোগ। শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগটি বেশি হয়। তবে বয়স্করাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কাশি, কফ, ব্যবহৃত জামাকাপড় ইত্যাদি থেকেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তখনকার দিনে বসন্ত হওয়া মানেই মানুষের বেঁচে থাকার আশঙ্কা কমে যাওয়া। বসন্তের ছোঁয়ায় কত যে মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, তার কোনও এয়ত্তা নেই। চিকেনপক্সের মতো মারাত্মক সংক্রামককে ঠেকাতে ১৯৭৪ সালে ভেরিসেলা ভাইরাসকে লক্ষ্য করে প্রথম গুটি বসন্ত বা চিকেন পক্সের ভ্যাকসিন তৈরি করেন ডাঃ মিচিয়াকি তাকাহাশি। আজ এই বিশিষ্ট জাপানি ভাইরোলজিস্টের ৯৪ তম জন্মবার্ষিকী। ১৭ ফেব্রুয়ারি, জাপানি ভাইরোলজিস্টের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সুন্দর ডুডল প্রকাশ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছে গুগল। ডুডলটি এঁকেছেন জাপানি শিল্পী তাতসুরো কিউচি। যেখানে দেখা গিয়েছে চিকেন পক্সের ভ্যাকসিনের আবিষ্কারের নেশায় মাইক্রোস্কোপের মধ্যে ডুবে রয়েছেন ডক্টর মিচিয়াকি তাকাহাশি, পাশে একটি শিশুর হাতে একচি ব্যান্ড-এড দিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
আজ সারা বিশ্বের মানুষ তার অবদানের জন্য কৃতজ্ঞ। ১৯২৮ সালের এই দিনে জাপানের ওসাকায় জন্মগ্রহণ করেন ডাঃ মিচিয়াকি তাকাহাশি। বড় হতেই তিনি মেডিকেল ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৯ সালে ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবিয়াল ডিজিজের গবেষণা ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন। তাকাহাশি ইনস্টিটিউটে পোলিও ভাইরাস এবং হাম নিয়ে গবেষণা করেছেন। ১৯৬৩ সালে, তিনি বেইলর কলেজে গবেষণা ফেলোশিপের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। দেশ ও পরিবার থেকে অনেক দূরে থাকার সময় তাঁর ছেলের চিকেনপক্সে আক্রান্ত হয়। ছেলের অবস্থা গুরুতর হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তারপর মানুষের এবং প্রাণীর টিস্যুতে দুর্বল চিকেনপক্স ভাইরাসের সংস্কৃতির মাধ্যমে তার গবেষণা শুরু করেন। ১৯৭৪ সালে, তাকাহাশি ভ্যারিসেলা ভাইরাসকে লক্ষ্য করার জন্য প্রথম ভ্যাকসিন তৈরি করেছিলেন। ইমিউনোকম্প্রোমাইজড রোগীদের নিয়ে কঠোর গবেষণার পর, ভ্যাকসিনটি অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা ভ্যাকসিনটি অনুমোদিত হওয়ার পরে, মাইক্রোবিয়াল রোগের জন্য গবেষণা ফাউন্ডেশন ১৯৮৬ সালে এটি চালু করা শুরু করে। এই ভ্যাকসিনটি ৮০ টিরও বেশি দেশে ব্যবহার করা হয়েছিল। তারপর থেকে, বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
ভাইরোলজিস্টের প্রচেষ্টা প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ চিকেনপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করেছে। ১৯৯৫ সালে, তাকাহাশি ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবিয়াল ডিজিজ স্টাডি গ্রুপের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত তিনি এই পদেই অধিষ্ঠিত ছিলেন। ২০১৩ সালে ওসাকায় মারা যান এই বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট।
আরও পড়ুন: Diaper Rash: ডায়াপার র্যাশে ছোট্ট শিশু কষ্ট পাচ্ছে! এই ৪ ঘরোয়া উপায়েই কমবে সংক্রমণ ও জ্বালাভাব