Side Effects of Headphones: দিনের অনেকটা সময় কানে থাকে হেডফোন? ‘কালা’ তো হবেনই, নষ্ট হবে ব্রেন আর হার্টও

Wearing Headphones: আরও উদ্বেগে বিষয় হল, হেডফোনগুলি অনিয়ন্ত্রিতভালে ভলিউম বাড়ানো থাকায় কানের চরম ক্ষতি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে গোটা শরীরের উপর।

Side Effects of Headphones: দিনের অনেকটা সময় কানে থাকে হেডফোন? 'কালা' তো হবেনই, নষ্ট হবে ব্রেন আর হার্টও
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 07, 2023 | 8:30 AM

করোনার জেরে লকডাউন গোটা বিশ্ববাসীকে যেমন শিখিয়ে-পড়িয়ে মানুষ করে দিয়েছে,তেমনি এর কিছু কুফলও বিস্তার করেছে। রাস্তাঘাটে,বাসে-ট্রেনে, স্কুলে-কলেজে, অফিসে, বাড়িতে, সর্বত্র একটাই দৃশ্য। বাইরের অবাঞ্ছিত শব্দ থেকে মুক্তি পেতে নিজের কানে হেডফোন (Earphones) গুঁজে দিয়েই সকলের দায় সেরে ফেলছে। একান্তে গান শোনা, নিজের মতো করে থাকতে থাকতে এই দৃশ্যে এখন অচেনা নয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের অর্ধেক সময়টাই কানে ইয়ারফোন গুঁজে থাকার ফলে চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। শুধু গান শোনা বা নিজের মতো করে থাকাই নয়, ইয়ারফোন বর্তমানে ফ্যাশনেরও অংশ। ফলে কানের বারোটা তো বাজছেই, শরীরেরও ক্ষতি হচ্ছে মারাত্মক। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই কানে ইয়ারফোন ব্যবহার (Wearing Headphones) করার নয়া ট্রেন্ড চলে এসেছে। মোবাইল, ল্যাপটপ, আইপ্যাডের পর এবার হেডফোনের ব্যবহারেও আসক্ত হয়ে পড়েছে কিশোর থেকে প্রবীণরা। ইয়ারফোন থেকে আসা শব্দ কানের পর্দায় বড় প্রভাব ফেলে। যা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয়।

গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পোর্টেবল ইয়ারফোন থেকে জোরালো শব্দে থাকা মিউজিকের অত্যাধিক ব্যবহারের ফলে মনোযোগ হ্রাস পেয়েছে সর্বাধিক। শুধু তাই নয়, আরও উদ্বেগে বিষয় হল, হেডফোনগুলি অনিয়ন্ত্রিতভালে ভলিউম বাড়ানো থাকায় কানের চরম ক্ষতি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে গোটা শরীরের উপর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান, বিশ্বব্যাপী ১০ লক্ষেরও বেশি তরুণ-তরুণী অনিয়ন্ত্রিত শ্রবণ অনুশীলনের কারণের শ্রবণশক্তি হারানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহারের ফলে যে যে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে,তা জানলে শিউরে উঠবেন আপনি।

শ্রবণশক্তি হ্রাস

প্রতিদিন ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহার করে উচ্চস্বরে গান শুনলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে থাকে। কানের শ্রবণ ক্ষমতা মাত্র ৯০ ডেসিবল। নিয়মিত কানে গুঁজে জোরে জোরে গান শুনলে কানের শ্রবণশক্তি ৪০ থেকে ৫০ ডেসিবলে নেমে আসে। দূরের আওয়াজ শুনতে অসুবিধা হয়।

হৃদরোগের প্রবণতা

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, জোরে জোরে গান শুনলে কানের পাশাপাশি হার্টেরও ক্ষতি হয়। হৃদস্পন্দন দ্রুত যেমন করে, তেমনি হার্টের নানা অসুখেরও সৃষ্টি হয়।

মাথাব্যথা

হেডফোন ও ইয়ারফোন থেকে নির্গত ইলেক্টরোম্যাগনেটিক তরঙ্গ মস্তিষ্কে দারুণ প্রভাব ফেলে। যার ফলে মাঝে মাঝেই মাথাব্যথার শিকার হতে হয়। নতুন করে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, অনিদ্রার সমস্যা তৈরি করে। এমনকি স্লিপ অ্য়াপনিয়াতেও ভুগতে হতে পারে।

কানে সংক্রমণ

ইয়ারফোনগুলি সরাসরি কানের গর্তে প্লাগ করা থাকে, ফলে কানের ভিতর বায়ু চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। যার জেরে কানে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হলে বিভিন্ন ধরনের কানের সংক্রমণ দেখা যায়। নিয়মিত কানে ইয়ারফোন ব্যবহার করার ফলে এই সমস্যা পরবর্তীকালে গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কারোর সঙ্গে ইয়ারফোন শেয়ার করা এড়িয়ে চলুন। তাতে অন্যার ক্ষতিকারক ব্যাকেরিয়া এক কান থেকে অপর কানে সংক্রমিত করতে পারে।

মনোসংযোগের অভাব

ইয়ারবাডগুলি আকারে বেশ ছোট হলেও কানের পর্দায় এর ব্যপক প্রভাব পড়ে। শব্দ কান থেকে মস্তিষ্কে সঞ্চারিত হয়। তাতে স্নায়ুতন্ত্রকে দারুণ প্রভাবিত করে। কোনও কিছু কাজে ফোকাস করা বা মনোসংযোগ স্থাপন করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। অস্থিরতা বেড়ে যায়। দীর্ঘসময় ধরে ইয়ারফোনের ব্যবহার করা হলে মনোসংযোগ ও শ্রবণশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

মানসিক চাপ ও উদ্বেগ

হেডফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের জেরে ব্যক্তিজীবন থেকে সামাজিকতা, মানসিক স্বাস্থ্য ও সর্বস্তরে কাজ করার ক্ষমতাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে।

শোনার ও শেখার ধৈর্য হারায়

মনোসংযোগের অভাবে কোনও কিছু শেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলার পিছনে রয়েছে শ্রবণশক্তি হ্রাসের প্রভাব। একটি ক্লাসরুমে দীর্ঘক্ষণ ধরে ক্রমাগত শব্দের প্রকাশে একটি শিশুর পড়া, ক্ষমতা, বোধগম্যতা ও স্মৃতিশক্তির স্বাভিবক কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।

(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)