Expired Water: সকালে উঠে টাটকা না বাসি জল খান? জলেরও কি এক্সপায়ারি ডেট আছে?

Drinking Water: দীর্ঘদিন ধরে জলকে পেয় রাখতে হলে সংরক্ষণের নিয়মগুলি মানতে হবে। তাই ঠিক কতখানি জল সংরক্ষণ করতে চান তা আগে বুঝে নিন। তারপর তা ঠান্ডা এবং শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করুন।

Expired Water: সকালে উঠে টাটকা না বাসি জল খান? জলেরও কি এক্সপায়ারি ডেট আছে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 13, 2022 | 9:57 AM

সারাদিন ঘোরাঘুরির পর ক্লান্ত হয়ে এক বোতল জল তুলে নিলেন হাতে। তারপর একী দেখলেন! জলের বোতলের গায়ে সেঁটে রাখা লেবেল-এ দেখাচ্ছে জল আর আর পানযোগ্য নেই। পেরিয়ে গিয়েছে এক্সপায়ারি ডেট! অবশ্য এভাবে এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়ার পিছনে মূল কারণ জল নয়, দায়ী বরং প্লাস্টিক বোতল! শুদ্ধ অবস্থায় জল নষ্ট হয় না। কারণ জল তৈরি হয় প্রাকৃতিকভাবে। তবে হ্যাঁ, জলে অপদ্রব্য মিশলে তা জলের গুণগত মানকে নষ্ট করতে পারে। বিশেষ করে পুরনো প্লাস্টিক বোতলে রাখা জল পান না করাই উচিত। কারণ প্লাস্টিক থেকে একাধিক অপদ্রব্য মেশে জলে। উদাহরণ হিসেবে ‘অ্যান্টিমনি’ এবং ‘বিসফেনল এ’-এর মতো কেমিক্যালের কথা বলা যায়।

এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে যাওয়ার অর্থ

হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা এক সমীক্ষায় দেখেছেন, স্টাডিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তির মধ্যে যারা এক সপ্তাহ ধরে জনপ্রিয়, শক্তপোক্ত প্লাস্টিকের বোতল বা বেবি বোতল কিংবা বলা ভালো পলিকার্বনেটের বোতল থেকে জল পান করেছে তাদের ইউরিনে অধিক মাত্রায় বিসফেনল এ রাসায়নিকটির অস্তিত্ব লক্ষ করা গিয়েছে।

সমীক্ষা অনুসারে, শোধন করা ট্যাপের জল ভালোভাবে সংরক্ষণ করা হলে তা ৬ মাস অবধি পান করা যায়। ‘স্পার্কলিং ওয়াটার (কার্বন ডাই অক্সাইড মেশানো পানীয়)’ সুরক্ষিত থাকে ১ থেকে ২ বছর অবধি। শোধিত ট্যাপের জলের স্বাদ নষ্ট হতে পারে যদি তা বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইডের সংস্পর্শে আসে। অন্যদিকে স্পার্কলিং ওয়াটার ধীরে ধীরে স্বাদহীন হতে শুরু করে। কারণ স্পার্কলিং ওয়াটারে মেশানো গ্যাস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাষ্পীভূত হতে থাকে। তবে মোদ্দা বিষয়টা হল ৬ মাস অবধি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হলে ট্যাপ ওয়াটার ও স্পার্কলিং ওয়াটার নিশ্চিন্তে পান করা যায়।

কীভাবে করবেন জল সংরক্ষণ?

দীর্ঘদিন ধরে জলকে পেয় রাখতে হলে সংরক্ষণের নিয়মগুলি মানতে হবে। তাই ঠিক কতখানি জল সংরক্ষণ করতে চান তা আগে বুঝে নিন। তারপর তা ঠান্ডা এবং শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করুন। মনে রাখবেন, দীর্ঘদিন জল সংরক্ষণে তামা ও স্টিলের বোতল বা পাত্রই হল উপযুক্ত। রোজকার ব্যবহারের জন্য অবশ্য বিপিএ মুক্ত প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা যায়। অবশ্য প্লাস্টিক ব্যবহার যতখানি কমানো যায় ততই ভালো।

পাত্রে জল ভরার সময় কোনও পাইপের ব্যবহার করবেন না। জল শোধনের পর সরাসরি কলের মুখ থেকে জল ভরুন। এর ফলে জলে অপদ্রব্য মেশা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

তবে বৃহৎ পাত্রে বা ড্রামে জল পোরার প্রয়োজনীয়তা থাকলে সেই জল যাতে বাতাসের সংস্পর্শে না আসে তার ব্যবস্থা করতে হবে।

পাত্র ও পাত্রের ঢাকনা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। না হলে অসংখ্য জীবাণু পাত্রের অন্দরে নিজের কলোনি স্থাপন করবে ও জল নষ্ট হয়ে যাবে।

জল শোধনের সেরা উপায়

দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্য জল শোধনের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাই জল সংগ্রহের পর অন্তত ১৫ মিনিট ধরে জল ফোটান। এরপর জল ঠান্ডা হতে দিন। শহরাঞ্চলে আজকাল ওয়াটার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা হয়। ওয়াটার পিউরিফায়ারে রিভার্স অসমোসিস প্রযুক্তিও যোগ করা হয়েছে। এই প্রযুক্তিতে আর্সেনিক ও জীবাণুমুক্ত জল পাওয়া সম্ভব। তবে নিয়মিত ওই ওয়াটার পিউরিফায়ারের পরিচর্যা করতে হবে। ক্যান্ডেল পরিবর্তনও করতে হবে নিয়মিত সময়ের অন্তরে।

কেন প্লাস্টিকের বোতল খারাপ

প্লাস্টিকের যে কোনও বোতল ও পাত্রে থাকে ক্ষতিকর রাসায়নিক বিপিএ সহ আরও বহু উপাদান। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই ধরনের রাসায়নিকগুলি প্রাণীদেহে ক্যান্সার, নানাবিধ জটিল অসুখ ও প্রজননতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমনকী আসতে পারে ইনফার্টিলিটির সমস্যাও। তাই এখনই সাবধান হন। বিশেষ করে প্লাস্টিকের পাত্রে গরম খাবার কখনওই খাবেন না, কারণ সেক্ষেত্রে প্লাস্টিক থেকে দ্রুত ক্ষতিকর রাসায়নিক উষ্ণ পানীয় বা খাদ্যে মেশে ও শরীরে প্রবেশ করে।