Child Health: মায়ের হাতের রান্নার উপর জোর দিতে পরামর্শ হাইকোর্টের, এ প্রসঙ্গে কী যুক্তি দিয়েছেন পুষ্টিবিদ?
Home-Cooked Food for Kids: আজকাল ৫ বছরের বাচ্চাও ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হচ্ছে। নেপথ্যে রয়েছে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার। ছোট বয়সেই যদি এই ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়, তার জেরে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেবে।

মেঘা মণ্ডল
গোপনে পর্ণগ্রাফি বা অশ্লীল ভিডিয়ো দেখা অপরাধ নয়—একটি মামলার শুনানিতে সম্প্রতি এমনই রায় দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট। তার সঙ্গে আরও একটি পরামর্শ দিয়েছেন কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণা। ওই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বলেছেন, “সুইগি, জ়োম্যাটো নয়, বাচ্চাদের মায়ের হাতে তৈরি খাবার খাওয়ান।” বাচ্চাদের বাইরে খেলতে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথাও বলেছেন বিচারপতি।
ফুড অ্যাপের দরুন, আজকাল বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করা অনেক সহজ। যে খাবার যখন খাওয়ার ইচ্ছে হল, হাতে স্মার্টফোন তুলে নিয়ে বাড়িতে অতি সহজেই তা আনিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু রোজ-রোজ বাইরের খাবার খাওয়া যে, মোটেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়—বিশেষত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। বয়স কম। এ সময় থেকেই যদি বাইরের খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়ে, তাহলে কী প্রভাব পড়ে শিশুদের শরীরে? আর এই মায়ের হাতে তৈরি কিংবা বাড়িতে তৈরি খাবার বাচ্চাদের জন্য কতটা উপযোগী? এ বিষয়ে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট এবং কনসালট্য়ান্ট ডায়েটিশিয়ান অরিজিৎ দে-র সঙ্গে।
অরিজিতের কথায়, “বাইরে (এক্ষেত্রে ফুড ডেলিভারি অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার করা খাবার) যে সব মুখরোচক খাবার পাওয়া যায়, সেগুলো মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। বিশেষত চাইনিজ খাবারে আজিনামটো থাকে। এটা মূলত মোনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। খাবারে স্বাদ ও গন্ধ নিয়ে আসার জন্য এই উপাদান ব্যবহার করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য এই আজিনামটো এতটুকুও উপকারী নয়।” অরিজিৎ জানান, এই আজিনামটো আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। যেখানে বাচ্চাদের এখন বিকাশের সময়, সেখানে আজিনামটোর মতো ক্ষতিকারক উপাদান না খাওয়াই শ্রেয়। ছোট বয়সেই যদি এই ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়, তার জেরে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেবে।
অরিজিৎ জানিয়েছেন, আজকাল ৫ বছরের বাচ্চাও ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হচ্ছে। নেপথ্যে রয়েছে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার। আজিনামটোই একমাত্র ক্ষতিকারক উপাদান নয়। বাইরের খাবারে যে তেল ব্যবহার করা হয়, সেটাও বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি নয়। অরিজিৎ বলেন, “রাস্তার তৈরি খাবারে কড়াইয়ে একবার তেল ঢেলে তাতে দু’-তিনবার রান্না হচ্ছে। তেল বারবার ফোটানোর ফলে এর গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি তেলে ফ্যাটের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাচ্ছে।” সপ্তাহে একদিন বাইরের খাবার খাওয়াতে খুব বেশি ক্ষতি নেই। মা-বাবার উদ্দেশে অরিজিতের সতর্কবার্তা: এটাই যদি সপ্তাহে দু’-তিন দিনে গিয়ে দাঁড়ায়, তাহলে মারাত্মক ক্ষতি করছেন সন্তানের।
বাচ্চাদের মধ্যে মুখরোচক খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেশি। তাহলে কীভাবে সামাল দেবেন পরিস্থিতি? সেই টিপসও TV9 বাংলার সঙ্গে শেয়ার করেছেন পুষ্টিবিদ। অরিজিৎ বলেন, “বাচ্চার বিরিয়ানি, ফিশ ফ্রাই খেতে ইচ্ছে গিয়েছে, সেটা বাড়িতেই বানিয়ে দিন। যেটুকু পরিমাণ তেল দরকার, সেটাই ব্যবহার করুন রান্নায়। এটা বাইরের তৈরি খাবারের থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।” অরিজিতের বক্তব্য অনুযায়ী, বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও ব্যালান্স ডায়েট মেনে চলা উচিত। অর্থাৎ, সবই খাবে কিন্তু অল্প পরিমাণ। তবে, বর্তমানে অনেক বাচ্চা সবজি খেতে চায় না। মাছ-মাংস, মশলাদার খাবারের প্রতি তাদের ঝোঁক বেশি। এতে বাড়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। সেক্ষেত্রে গাজর, বিনস, কড়াইশুঁটি সবজি দিয়ে উপমা, পোহা, ফ্রায়েড রাইস, পোলাওয়ের মতো মুখরোচক খাবার বানিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অরিজিৎ।





