Cardiac Arrest: কেন শীতেই বাড়ে হার্ট অ্যার্টাকের ঝুঁকি ? জানুন যা বলছেন চিকিৎসকরা

শীতকালে অ্যাজমা, বাতের সমস্যা বাড়ার মতোই বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পারদ নামতে থাকার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি

Cardiac Arrest: কেন শীতেই বাড়ে হার্ট অ্যার্টাকের ঝুঁকি ? জানুন যা বলছেন চিকিৎসকরা
যে কারণে শীতে বাড়ে হার্ট অ্যার্টাকের ঝুঁকি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 19, 2022 | 4:07 PM

হার্ট অ্যার্টাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট- শব্দটি বরাবরই আমাদের মনে ভয় ধরায়। অনেক বেশি বিভ্রান্ত করে তোলে। সেই সময়ে ঠিক কী করা উচিত তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। সম্প্রতি মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট এবং ইলেকট্রোফিজিওলজিস্ট ডাঃ ভেঙ্কট ডি নাগরাজন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং সার্ডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মধ্যে পার্থক্য বোঝান। হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে বেশিরভাগই কিন্তু মারা যান।

সার্ডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (SCA) শব্দটি এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়, অর্থাৎ হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ কমে যায়। চেতনা হারিয়ে যায় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এটি হৃৎপিণ্ডের নীচের প্রকোষ্ঠে বৈদ্যুতিক অস্থিরতার কারণে ঘটে যাকে ভেন্ট্রিকল বলা হয়। এর ফলে দ্রুত এবং বিশৃঙ্খলভাবে হৃদস্পন্দন শুরু হয় যা, ভেন্ট্রিকুলার ফাইব্রিলেশন নামেই পরিচিত। এই সময়ে হৃদস্পন্দন প্রতি মিনিটে ৩০০-এরও বেশি হয়। এটি একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। যদি এই সময় কোনও সঠিক পদক্ষেপ না হয় বা চিকিৎসা না শুরু হয় তবে কিন্তু তখনই রোগীর মৃত্যু হয়।

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের নানা কারণ হতে পারে। রক্তে যখন অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় বা পেশির সংকোচন-প্রসারণ ঠিক মতো হয় না তখনই কিন্তু সার্ডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এই সময় রক্তে ম্যাগনেসিয়াম-পটাসিয়ামের মাত্রাও ওঠানামা করে। তাই এই লক্ষণ ঠিক সময়ে ঠিকমত বোঝা না গেলেই তখন সমস্যা বাড়ে। মৃত্যুর সম্ভাবনাও বেড়ে যায় ৯০ শতাংশ। আর প্রথমেই যদি কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে তা ধরা যায়, তাহলে প্রতি মিনিটে ১০০- ১২০ বার সংকোচন-প্রসারণ হয়। এই প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে যদি কার্ডিয়াক শক দেওয়া যায় তাহলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। হার্ট অ্যার্টাকের প্রথম ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি।

অল্পবয়সীদের মধ্যে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সম্ভাবনা কম। কিন্তু আজকের দিনে অবশ্য সেই পরিস্থিতি আর নেই। যে কোনও বয়সের যে কোনও মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে। ডায়াবিটিস, উচ্চরক্তচাপ, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন এবং ওবেসিটির সমস্যা থাকলে বাড়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সম্ভাবনা। এছাড়াও যাঁদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, পরিবারে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ইতিহাস রয়েছে. দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া রয়েছে শরীরে পটাশিয়াম-ম্যাগনেশিয়ামের ভারসাম্যে সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যেই কিন্তু বেশি থাকে হার্ট অ্যার্টাকের ঝুঁকি।

শীতকালে অ্যাজমা, বাতের সমস্যা বাড়ার মতোই বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পারদ নামতে থাকার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। তাই গরমকালের তুলনায় শীতকালে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাপমাত্রা, হাওয়ার গতিবেগ, আপেক্ষিক আর্দ্রতা বাড়তে থাকলেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। প্রতি মরসুমেই তাই কম, বেশি বাড়তে-কমতে থাকা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। তাই গরম কালের তুলনায় বর্ষাকালে হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বাড়ে শীতকালে।

শীতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শরীরের রক্তনালী সঙ্কুচিত হয়। যা ত্বকের তাপমাত্রা কমিয়ে ধমনীতে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে কাঁপুনি, মেটাবলিক রেট বেড়ে যাওয়া, এমনকী হার্ট অ্যাটাকের সমস্যাও হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শীতকালে আবহাওয়া পরিবর্তনের জেরে আমাদের শরীরেও নানা পরিববর্তন হয়। তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনের চাহিদা ও রক্ত সংবহনের বিষয়টিতেও পরিবর্তন হয়। অনেকসময় আমাদের হৃদযন্ত্র পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। এর পাশাপাশি রক্তচাপ, কোলেস্টেরল সহ একাধিক সমস্যাও মাথাচাড়া দেয়।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।