পদ্মশিবিরের একই চালে মাত অসমও, শাহ সফরের পরই বিজেপিতে যোগ ২ কংগ্রেস বিধায়কের
গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েই অজন্তা নিয়োগ বলেন, "কংগ্রেসে দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে দলীয়স্তরে নেতা কর্মীদের মধ্যে বিরাট ফারারক রয়েছে। সেই কারণেই আমরা দল ছাড়লাম। জাতীয় স্তরের নেতারা দলীয়কর্মীদের চিন্তাভাবনাকে গুরুত্বই দেন না।"
গুয়াহাটি: রাজ্য বদলালেও চাল একই। বাংলার পর অসমেও নির্বাচনের আগেই জয়ের রাস্তা প্রস্তত করার কাজে নামল বিজেপি (BJP)। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যসফরে গিয়েছিলেন। সেখানে শাসকদল থেকে একাধিক বিধায়ক-কর্মী ভাঙিয়ে নিজের ঝুলি ভরান। একই পন্থা নিয়েই অসমেও দুদিনের রাজ্য সফরে যান তিনি। অসমেও দল ভাঙিয়ে বিজেপির শক্তি বাড়াতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছিল তখনই। সেই জল্পনাই সত্যি হল আজ, কংগ্রেস (Congress) ছেড়ে পদ্মশিবিরে যোগ দিলেন দুই বিধায়ক।
অসমের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sharma) ও বিজেপি সভাপতি রঞ্জিৎ দাস (Ranjit Das)-র উপস্থিতিতে প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী তথা বিধায়ক অজন্তা নিয়োগ (Ajanta Neog) এবং রাজদীপ গোয়ালা (Rajdeep Gowala) বিজেপিতে যোগদান করলেন। একইসঙ্গে বোড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্টের প্রাক্তন বিধায়ক বনেন্দ্র মুশাহারি (Banendra Mushahari)-ও গেরুয়া শিবিরে নিজের নাম লেখান।
এদিকে, দুই বিধায়ক খুইয়ে অসমে বিরোধী দলের তকমাও হারাল কংগ্রেস। ১২৬ সদস্যের বিধানসভায় বিরোধী আসন পাওয়ার জন্য নূন্যতম ২১জন বিধায়কের প্রয়োজন। সেখানে কংগ্রেসের হাতে রয়েছে কেবল ২০ জন বিধায়ক।
আরও পড়ুন: মমতার ‘মস্তিষ্কপ্রসূত’ ফ্রেট করিডরের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর, সমালোচনায় মুখর তৃণমূল
গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েই অজন্তা নিয়োগ বলেন, “কংগ্রেসে দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে দলীয়স্তরে নেতা কর্মীদের মধ্যে বিরাট ফারারক রয়েছে। সেই কারণেই আমরা দল ছাড়লাম। জাতীয় স্তরের নেতারা দলীয়কর্মীদের চিন্তাভাবনাকে গুরুত্বই দেন না।” অন্যদিকে লখিমপুরের বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা বলেন, “দলে কোনও নিয়মশৃঙ্খলা নেই। কংগ্রেস এমন একটা দল যার কোনও ভবিষ্যৎ নেই, দৃষ্টিভঙ্গি নেই। সম্পূর্ণরূপে দিশাহীন একটা দল। কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়েও সংকট রয়েছে এবং তারা মানুষের ভালর জন্য কিছুই করতে পারে না।”
কংগ্রেসে ভাঙন ধরলেও তিন নেতৃত্বের বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় অত্যন্ত খুশি হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে এটা একটা বড় জয়। আগামী নির্বাচনে ১০০টি আসনে জয়লাভের লক্ষ্যপূরণের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে দল।”
২০২১ সালে যে রাজ্যগুলিতে নির্বাচন রয়েছে, সেখানেই দলের মুখ্য নেতৃত্বের সফর নির্বাচনী পরিকল্পনার অঙ্গ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পশ্চিমবঙ্গে যেমন অমিত শাহের সফরে তৃণমূলের অন্যতম প্রধান মুখ শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করেই অসমেও কংগ্রেস ভাঙিয়ে দল ভরছে বিজেপি। আগামী দিনেও রাজ্য রাজনীতির দিকে চোখ রেখেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বরা সফরে যাবেন বলেই মত বিশ্লেষকদের।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা প্রতিষেধকের সফল ‘ড্রাই রান’! কয়েক দিনের মধ্যেই টিকাকরণ?