8 years of Modi Govt: বেড়েছে ৪৬৯%, পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে মোদী সরকার
মোদী সরকারের ৮ বছরে 'রিনিউয়েবল এনার্জি' বা পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে বিরাট সাফল্য পেয়েছে, ভারত। উৎপাদন ৪৬৯ শতাংশ বেড়েছে।
নয়া দিল্লি: ২৬ মে মোদী সরকারের ৮ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই ৮ বছরে সরকার যে যে ক্ষেত্রে বড় সাফল্য পেয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল ‘রিনিউয়েবল এনার্জি’ বা পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি। বর্তমান সময়ে বিশ্বের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হল জলবায়ু পরিবর্তন। আর এই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যতটা সম্ভব কম করতে, চিরাচরিত শক্তির উৎসগুলি ছেড়ে গোটা বিশ্বই ঝুঁকছে বিকল্প শক্তি বা পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তির দিকে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। বরং বলা যেতে পারে, এই ক্ষেত্রে গত ৮ বছরে গোটা বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে মোদী সরকার।
২০১৫ সাল পর্যন্ত, পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তির সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে বিশেষ মনোযোগ ছিল না ভারতের। ১৯৮০ সালে ভারতের পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তির উৎপাদন ছিল ০ মেগাওয়াট। সেখান থেকে খুব ধীর গতিতে বেড়ে ২০১৩ সালে দেশের পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তির ক্ষমতা হয়েছিল ২৭,৫৪২ মেগাওয়াট। কিন্তু, গত ৮ বছরে এই ক্ষেত্রে কার্যত বিপ্লব এনেছে মোদী সরকার। এই সময়কালে ভারতের পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ১,৫৬,৬০৮ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, ৮ বছরে এই ক্ষেত্রে ভারতের ক্ষমতা বেড়েছে ৪৬৯ শতাংশেরও বেশি!
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এর আগে পর্যন্ত শক্তির চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের দেশ বিদেশের মুখাপেক্ষী ছিল। বর্তমানে, ভারত কিন্তু, নিজেদের মাটিতেই পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি উত্পাদনের সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করেছে। এর শুরুটা হয়েছিল ২০১৫ সালে। ওই বছর প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পর, ‘ভারতের ন্যাশনাল ইলেক্ট্রিসিটি প্ল্যান’ পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা শুরু করেছিল। ওই বছরই, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের জন্য জাতীয় সৌর মিশনের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ১ লক্ষ মেগাওয়াটে করা হয়েছিল। আগে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল মাত্র ২০ হাজার মেগাওয়াটের। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পাঁচগুণ বাড়ান হয়েছিল।
Bravo, India Rail ??! Eco-friendly achievement unlocked! Andhra Pradesh’s Vijayawada station has become India’s first railway station to be covered with solar panels that will produce 130 kWp, the highest solar power capacity across the Indian Railway network.@RailMinIndia pic.twitter.com/yRXy7sM4B9
— Erik Solheim (@ErikSolheim) February 17, 2022
এই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে ‘পিএম-কুসুম’, সোলার-পিভি ইনস্টলেশনের জন্য অনলাইন পোর্টালের মতো বহু প্রকল্প শুরু করেছে মোদী সরকার। পিএম-কুসুম যোজনায় যেমন, কৃষকদের সৌরশক্তি চালিত পাম্প দেওয়ার পাশাপাশি বন্ধা জমিতে সৌরশক্তি উৎপাদনের জন্য তাদের সহায়তা করা হয়। অতিরিক্ত শক্তি কৃষকরা সরকারের কাছে বিক্রি করতেও পারেন। এরকম বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনে প্রণোদনা দিয়েছে সরকার।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে, ভারত অঙ্গীকার করেছিল, ২০৩০ সালের মধ্যেই দেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ আসবে অ-জীবাশ্মভিত্তিক শক্তি, অর্থাৎ, পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তির উত্সগুলি থেকে। কার্যক্ষেত্রে সময়সীমার নয় বছর আগে, ২০২১ সালের মধ্যেই এই লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়েছে মোদী সরকার। বস্তুত, বিশ্বের সমস্ত বড় অর্থনীতির দেশগুলির মধ্যে গত ৮ বছরে পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তির সক্ষমতা সবথেকে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতেই।
ভারতে সারা বছরই সূর্যালোক পাওয়া যায়। তাই, অ-জীবাশ্মভিত্তিক শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের দেশের স্বাভাবিক পছন্দ ছিল সৌর শক্তি। ২০১৫ সালে ভারতের মোটৎপাদিত সৌর শক্তির পরিমাণ ছিল মোট শক্তি উৎপাদন ক্ষমতার ১৩.৮ শতাংশ, ৫৫,০০০ মেগাওয়াট। গত ৮ বছরে ভারতের সৌর শক্তি উৎপাদনের ক্ষমতা ১৭ গুণ বেড়েছে। আর বড়মাপের জলপ্রকল্পগুলি সহ, মোট পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের ক্ষমতা বেড়েছে ১.৯৭ গুণ। বর্তমানে, দেশের বিদ্যুতের চাহিদার ৩৯.২ শতাংশ পূরণ করে পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তির উত্সগুলি।
India’s largest floating solar power plant with a capacity of 100MW, being set up by the NTPC in Telangana is expected to become operational next month at Ramagundam, Peddapalli district. The project has been set up at a cost of ₹423 crore. The NTPC plans solar power plants with pic.twitter.com/enEbcF6b1T
— Amiet R. Kashyap (@Amitraaz) April 3, 2021
ভারত সরকারের এই সাফল্যকে কুর্নিশ জানিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কও। ২০২১ সালের জুলাই মাসে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে এক নিবন্ধে বলা হয়েছিল, কীভাবে পরিশ্রুত শক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, তা ভারতের সৌরশক্তির সম্প্রসারণ দেখে শিখতে পারে গোটা বিশ্ব। ওই নিবন্ধে আরও বলা হয়, ভারত তার পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করার দিকে এগোচ্ছে। এটা, ভারতীয় নাগরিকদের জন্য তো বটেই, সেইসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার জন্য বিশ্বব্যাপী উদ্যোগের ক্ষেত্রেও ‘গেমচেঞ্জার’ হয়ে উঠতে পারে।
‘আন্তর্জাতিক পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সংস্থা’ বা ‘ইরেনা’ (IRENA) ডিরেক্টর জেনারেল ফ্রান্সেসকো লা ক্যামেরা দিল্লি সফরে এসে জানিয়েছিলেন, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎপাদন বাড়াতে মোদী সরকার যে কৌশলগুলি নিয়েছে, তার ফলে ২০৭০ সালের আগেই ভারত কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন করতে পারে। অর্থাৎ, ভারতে কার্বন নিঃসরণ এবং বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন শোষণের (গাছ, সমুদ্র, মাটি বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন শোষণ করতে পারে) মধ্যে ভারসাম্য চলে আসবে। প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণের পর, ভারত ২০৩০ সালের জন্য নতুন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। মোদী সরকারের লক্ষ্য ওই সময়ের মধ্যে দেশের পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের ক্ষমতা ৫০০ গিগাওয়াটে নিয়ে যাওয়া। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পূরণে দেশ যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে সেই কাজটা সহজেই করা যাবে বলেই আশা করা হচ্ছে। আর, ফ্রান্সেসকো লা ক্যামেরার অনুমানও সত্যি হবে।