Baby deliver on road: অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি ফুরিয়ে গিয়েছিল! রাস্তাতেই সন্তানের জন্ম দিলেন আদিবাসী মহিলা
Telangana: জেলা কালেক্টর বলেন, "গত বছরের বন্যায় গ্রামের একমাত্র ব্রিজ ভেসে গিয়েছে। নতুন ব্রিজ করার জন্য আমরা টেন্ডার ডেকেছি। কিন্তু, এখনও কেউ সাড়া দেয়নি।" তাহলে কী এভাবেই দিন গুজরান করবে থুলাসিপেত গ্রামের বাসিন্দারা? এখন এমন প্রশ্নই উঠছে।
হায়দরাবাদ: হঠাৎ করেই প্রসব বেদনা উঠেছিল। পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্সও ডেকেছিলেন। কিন্তু, মাঝপথে অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি (Ambulance fuel) ফুরিয়ে যায়। জ্বালানি ভরার জন্য গুগল পে-তে টাকাও পাঠান প্রসব বেদনায় কাতর ওই মহিলার স্বামী। কিন্তু, তারপরেও সেই সময় নির্দিষ্ট স্থানে আসেনি অ্যাম্বুলেন্স। যার ফলে রাস্তাতেই সন্তানের জন্ম দিলেন ওই মহিলা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে তেলঙ্গানার (Telangana) নির্মল জেলায়। এভাবে জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছতে না পারার ঘটনায় প্রশাসনের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার ধারে সন্তানের জন্ম দেওয়া ওই মহিলার নাম গঙ্গামণি। নির্মল জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থুলাসিপেতের বাসিন্দা গঙ্গামণি বৃহস্পতিবার সকালে রাস্তাতেই পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বর্তমানে অবশ্য তাঁরা স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি। মা ও সন্তান- দুজনেই সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্মল জেলার কালেক্টর বরুণ রেড্ডি।
ঘটনার বৃত্তান্ত দিয়ে গঙ্গামণির স্বামী জানান, হঠাৎ করে স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে তিনি ১০৮ ডায়াল করে অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন। কিন্তু, খুব খারাপ রাস্তার জন্য অ্যাম্বুলেন্স গ্রামে পৌঁছতে পারেনি। তখন গ্রামবাসীর সহায়তায় থুলাসিপেতের সঙ্গে জেলার অন্যতম সংযোগস্থল ধোথি নদী পার করান। তারপরেও অ্যাম্বুলেন্স সেখানে পৌঁছয়নি। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার জন্যই অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছতে পারেনি বলে চালক জানান। গঙ্গামণির স্বামীর কথায়, “জ্বালানি ভরার জন্য গুগল পে-তে ৫০০ টাকা আমরা পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু, তারপরেও অ্যাম্বুলেন্স আসেনি। রাস্তাতেই সন্তানের জন্ম হয়।” এরপর আবার তিনি ১০৮ ডায়াল করে আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন এবং স্ত্রী ও সদ্যজাতকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। অ্যাম্বুলেন্স সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছলে গঙ্গামণিকে রাস্তায় সন্তান প্রসব করতে হত না বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন নির্মল জেলার কালেক্টর বরুণ রেড্ডি। অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছনোর আগেই গঙ্গামণি প্রসব করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রত্যন্ত এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলেও জানিয়েছেন জেলা কালেক্টর। তিনি বলেন, “সাধারণত প্রত্যন্ত এলাকায় সহজে যাওয়া যায় না। তাই আমরা প্রত্যন্ত এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের প্রসবের সম্ভাব্য দিনের কয়েকদিন আগেই সেখান থেকে নিয়ে আসি। কিন্তু, এই মহিলা সম্ভাব্য দিনের প্রায় চার সপ্তাহ আগে প্রসব করেছেন।” বর্তমানে মা ও শিশু খানাপুর কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন এবং দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
কিন্তু, প্রত্যন্ত এলাকার রাস্তাঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা কি ঠিক হবে না? থুলাসিপেত গ্রামের রাস্তাঘাটের খারাপ অবস্থার কথা স্বীকার করে জেলা কালেক্টর বলেন, “গত বছরের বন্যায় গ্রামের একমাত্র ব্রিজ ভেসে গিয়েছে। নতুন ব্রিজ করার জন্য আমরা টেন্ডার ডেকেছি। কিন্তু, এখনও কেউ সাড়া দেয়নি।” তাহলে কী এভাবেই দিন গুজরান করবে থুলাসিপেত গ্রামের বাসিন্দারা? এখন এমন প্রশ্নই উঠছে। জবাব মেলেনি জেলা প্রশাসনের।