Article 370: অস্থায়ী বিধান কীকরে স্থায়ী হল? অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের
supreme court on article 370: আদালত প্রশ্ন করে, ১৯৫৭ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের গণপরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। তারপর সেই অস্থায়ী বিধান কীকরে স্থায়ী বিধানে পরিণত হল? পাশাপাশি, গণ পরিষদের অস্তিত্বই যেখানে নেই, সেখানে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের সুপারিশ কীভাবে করা যেতে পারে?
নয়া দিল্লি: অনুচ্ছেদ ৩৭০-কে সংবিধানে একটি অস্থায়ী বিধান হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৫৭ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের গণপরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। তারপর সেই অস্থায়ী বিধান কীকরে স্থায়ী বিধানে পরিণত হল? পাশাপাশি, গণ পরিষদের অস্তিত্বই যেখানে নেই, সেখানে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের সুপারিশ কীভাবে করা যেতে পারে? প্রশ্ন ছুড়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৯-এর ৫ অগস্ট অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করেছিল কেন্দ্র। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসান ঘটানো হয়েছিল। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একগুচ্ছ আবেদনজমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এদিন, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কওল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের সাংবিধানিক বেঞ্চে, বৃহস্পতিবার (৩ অগস্ট) থেকে সেই আবেদনগুলির শুনানি শুরু হল।
আবেদনকারীদের পক্ষে এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী কপিল সিবল। অনুচ্ছেদ ৩৭০-এর ৩ নম্বর ধারার উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত জানায়, এই অনুচ্ছেদ কার্যকর হবে কি হবে না তা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাতে পারেন রাষ্ট্রপতি। অনুচ্ছেদের বিধানে কোনও ব্যতিক্রম রাখা হবে কিনা, কিংবা কোনও পরিবর্তন করা হবে কিনা, তাও ঠিক করতে পারেন রাষ্ট্রপতি। কত তারিখ থেকে কত তারিখ পর্যন্ত এই অনুচ্ছেদ কার্যকর থাকবে, তাও ঠিক করতে পারেন তিনি। তবে শর্ত অনুযায়ী, এই ধরনের বিজ্ঞপ্তিগুলি জারি করার আগে গণপরিষদের সুপারিশ নিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। কিন্তু, গণপরিষদের মেয়াদ ফুরোলে কী করা হবে, তার কোনও নির্দেশ নেই। কোনও গণপরিষদই অনির্দিষ্টকাল ধরে সক্রিয় থাকতে পারে না। গণপরিষদের অস্তিত্ব যেখানে নেই, সেখাানে তাদের সুপারিশ গ্রহণ করে এই অনুচ্ছেদ বাতিলের বিজ্ঞপ্তি কীকরে করবেন রাষ্ট্রপতি? বিচারপতি গাভাই জিজ্ঞেস করেন ১৯৫৭ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের গণপরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কি অনুচ্ছেদ ৩৭০ সম্পর্কে কিছু করা যেত না?
কপিল সিবল জানান, তাঁদের মূল যুক্তিই হচ্ছে, গণপরিষদের সুপরিশ ছাড়া রাষ্ট্রপতি অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের সুপারিশ করতে পারেন না। অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা হয়েছে এক রাজনৈতিক আইনের মাধ্যমে। এটি কোনও সাংবিধানিক আইন নয় বলে দাবি করেন কপিল সিবল। তিনি বলেন, “সংসদ নিজেই গণপরিষদের ভূমিকা নিয়েছিল এবং অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার করে বলেছিল, এটা নাকি জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের ইচ্ছায় করা হচ্ছে।” যেভাবে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা হয়েছে, সেই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছেন তাঁরা। কপিল সিবল আরো জানান, ১৯৫৭ সালের পর এই বিষয়ে কিছু করা যেত কিনা, সেটা বর্তমান আদালতের আলোচ্য বিষয় নয়। তিনি বলেন, “বর্তমানে আদালতে একটি সাংবিধানিক বিধানের ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।”
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৮ অগস্ট) ফের এই মামলার শুনানি হবে। এই বিষয়ে প্রতিদিনই শুনানি চলবে। শুধুমাত্র সোম ও শুক্রবার এই মামলার শুনানির কাজ বন্ধ থাকবে। সপ্তাহের এই দুইদিন সাধারণত সুপ্রিম কোর্টে বিবিধ বিষয়ে শুনানি হয়। বিশেষ করে নতুন মামলার শুনানি শুরু করা হয় এই দিনগুলিতে, নিয়মিত বিষয়গুলি শুনানি হয় না।
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯ প্রবর্তন করেছিল কেন্দ্র। এই আইনের জোরে ওই বছরের ৫ অগস্ট অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য তার আগে পর্যন্ত যে বিশেষ মর্যাদা পেত, তার অবসান ঘটেছিল। শুধু তাই নয়, জম্মু ও কাশ্মীর (বিধানসভা-সহ) এবং লাদাখ (বিধানসভা ছাড়া) এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছিল রাজ্যটিকে।