CPIM: ‘যাদের রাম ডাকবেন শুধু তাঁরাই…’, অযোধ্যার আমন্ত্রণ ফিরিয়ে বিতর্কে সীতারাম
CPIM declines Ayodhya invite: তিনি বলেছেন, এই অনুষ্ঠানে 'ধর্মীয় বিশ্বাসের রাজনীতিকরণ' করা হচ্ছে। আর তার প্রতিবাদেই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। সিপিআইএম-এর এই রাম মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করা নিয়ে, বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
নয়া দিল্লি: ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পেলেও যোগ দিচ্ছে না সিপিআইএম। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর), সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে রাম মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই অনুষ্ঠানে ‘ধর্মীয় বিশ্বাসের রাজনীতিকরণ’ করা হচ্ছে। আর তার প্রতিবাদেই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। সিপিআইএম-এর এই রাম মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করা নিয়ে, বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি থেকে শুরু করে ভিএইচপি নেতারা নিন্দা করেছেন কমিউনিস্ট পার্টির।
এদিন, সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি বলেন, “আমি এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে মুখ খুলিনি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক নেতাকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন রাম মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারপার্সন নৃপেন্দ্র মিশ্র। ধর্ম প্রত্যেক ব্যক্তির ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। প্রত্যেক ব্যক্তির তার নিজ ধর্ম বেছে নেওয়ার অধিকার আছে। আমরা তাকে সম্মান করি। ভারতীয় সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টও স্পষ্টভাবে বলেছে, রাষ্ট্র কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব থাকা বা কোনও ধর্মীয় অনুষঙ্গ তাকা উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রী, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত অন্যান্যদের নিয়ে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে একটি রাষ্ট্রীয় মদতপ্রাপ্ত অনুষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের ধর্ম-বিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। এটা সংবিধানের সঙ্গে মানানসই নয়। তাই, এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, এই অনুষ্ঠানে আমি যোগ দিতে পারছি না।”
দলের বিশিষ্ট নেত্রী বৃন্দা কারাতও জানিয়েছেন, সিপিআইএম সকল ধর্মীয় বিশ্বাসকে সম্মান করে, কিন্তু ধর্মের রাজনীতিকে সমর্থন করে না। তিনি বলেন, “আমাদের দল অযোধ্যায় রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিস্থা অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না। আমরা সকল ধর্মীয় বিশ্বাসকে সম্মান করি। কিন্তু, তারা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাজনীতির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। এটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের রাজনীতিকরণ। এটা ঠিক নয়।”
তবে, সিপিআইএম-এর এই অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করতে ছাড়েনি বিজেপি এবং ভিএইচপি নেতারা। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি বলেছেন, “সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে, শুধুমাত্র যাদের ভগবান রাম ডাকবেন, তাঁরাই অযোধ্যায় আসতে পারবেন।” বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) জাতীয় মুখপাত্র বিনোদ বনসল বলেছেন, “যাঁর নাম সীতারাম, তিনিই অযোধ্যাধামে যাচ্ছেন না! রাজনৈতিক বিরোধিতা জায়গাটা বোঝা যায়, কিন্তু একমাত্র কমিউনিস্টদেরই নিজের নামের প্রতি এত ঘৃণা থাকে।” তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, ‘হিন্দু, হিন্দুত্ব এবং হিন্দু মূল্যবোধ’কে অপমান করছে সিপিআইএম। তিনি বলেন, “বাবর চলে গিয়েছে, বাবরি ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে, দলের মর্যাদা অতল গহ্বরে পৌঁছে গিয়েছে কিন্তু এখনও তাদের মানসিকতা বাবরের সন্তানদের মতো।”
তবে, শুধু সিপিআইএমই নয়, রাম মন্দির উদ্বোধনকে ঘিরে পুরো বিষয়টি আসলে ‘শো-অফ’ বলেছেন রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিবালও। তিনি বলেছেন, “আমার হৃদয়ে রাম আছে। তা আমার কাউকে দেখানোর দরকার নেই। রাম আমার হৃদয়ে থেকে আমাকে পথ দেখিয়েছেন। অর্থাৎ, আমি যা করছি সব কিছু ঠিকই করেছি। আমি আর কারও পরোয়া করি না।” কংগ্রেস অবশ্য জানিয়েছে, তারা রাম মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবে। সনিয়া গান্ধী নিজেই যেতে পারেন, না-হলে, প্রতিনিধি দলকে পাঠাবেন এই অনুষ্ঠানে।