BJP: ‘তৃণমূলের মুখোশ খুলে দেব’, রিপোর্ট কার্ড বের করলেন সুকান্ত
BJP Press Conference: সুকান্ত মজুমদার বলেন, "জেসিবি দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। তারপর ভুয়ো তথ্য পেশ করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। জয়ন্ত রায়ও লোকসভায় প্রমাণ সহ বলেছিলেন যে কারোর অ্যাকাউন্টে ১ টাকা, কারোর অ্যাকাউন্টে ১০ টাকা পাঠানো হয়েছে।"
নয়া দিল্লি: ১০০ দিনের বকেয়া অর্থ আদায়ের দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লিতে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। তৃণমূলের এই কর্মসূচির পাল্টা জবাবে এ দিন দিল্লি থেকেই সাংবাদিক বৈঠক রাজ্য বিজেপির। সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ ও জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার বলেন-
- গ্রাম পঞ্চায়েতে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে এনআরইজিএ, পিএমএওয়াই-তে দুর্নীতি হয়েছে। নীচু স্তর থেকে অভিযোগ এসেছে। যেমন মাটির কাজে স্ক্রুটিনি থেকে বাঁচতে বড় কাজকে ছোট ছোট স্তরে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য় কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি। অনেক টাকা আদায় করা হয়েছে এইভাবে। সেচ বিভাগের সঙ্গে কথাও বলা হয়নি। আমাদের কাছে ছবিও আছে।
- জেসিবি দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। তারপর ভুয়ো তথ্য পেশ করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। জয়ন্ত রায়ও লোকসভায় প্রমাণ সহ বলেছিলেন যে কারোর অ্যাকাউন্টে ১ টাকা, কারোর অ্যাকাউন্টে ১০ টাকা পাঠানো হয়েছে। জমির মাপ না করে, কাজের মান না দেখেই টাকা দেওয়া হয়েছে। আগেই হয়ে যাওয়া কাজ-কে এমজিএনআরইজিএ-র অধীনে কাজ বলে দেখানো হয়েছে। এমজিএনআরইজিএ-র অধীনে যে কাজগুলি নয়, সেগুলিকেও দেখানো হয়েছে। অন্যায়ভাবে টাকা নেওয়া হয়েছে। টেন্ডার ইস্যুর ১৫ দিনের মধ্যে দেখানো হচ্ছে কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।
- বর্ধমান, হুগলিতে অনিয়মিত কাজের প্রমাণ মিলেছে। ওই টাকাগুলি উদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জয়েন্ট সেক্রেটারির অধীনে একটি টিম গিয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট রাজ্য সরকারকে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকার সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছিল। তাও দেওয়া হয়। তারপরও তারা এটিআর দেননি।
- কেন্দ্রীয় দল যা তথ্য প্রমাণ পেয়েছে, তা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। রাজ্য সরকারের কাছে যে ইস্যু তোলা হয়েছিল তার উত্তর দেয়নি। কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। কেন্দ্রের রিপোর্টে ১৫টি পয়েন্ট তোলা হয়েছিল। একটারও জবাব দেওয়া হয়নি।
- অভিষেক-মমতা বলছেন, আমরা রাজ্যবাসীকে বঞ্চিত করছি। আমি রাজ্যকে কেন্দ্রের বরাদ্দের অঙ্ক বলছি। ইউপিএ জমানায় এমজিএনআরইজিএ-তে ১৪ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেখানে এনডিএ সরকার ৫৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। পিএমএওয়াই-তে ইউপিএ সরকার ৪ হাজার ৪০০ কোটি বরাদ্দ করেছিল। আমাদের সরকার ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
- কেউ অন্যায় করলে কে সাজা দেবে? তোমাদের দায়িত্ব ব্যবস্থা নেওয়ার। নিজেরা স্বীকার করছে চুরি হয়েছে। এখন বলছে, চোর ধরব না। ড্রামাবাজি চলছে। মোদীজি বিমান চালান না। আবেদন ঠিক করে করেননি, তাই ট্রেন পায়নি।
- কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “সরকার নিজের ইচ্ছায় টাকা বন্ধ করেনি। দুর্নীতি হয়েছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে হয়েছে।”
- কেন্দ্রের আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়নি। দেওয়াল ধসে তিনজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই তিন শিশুর জন্য দায়ী রাজ্য সরকার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাটক বাংলার মানুষ বোঝেন।
- বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ” আমি তো তাজ্জব হচ্ছি যে বাংলায় এতকিছু হচ্ছে। বাংলার মহিলার প্রতিদিন অত্যাচারিত হচ্ছে। রাজ্যে চাকরি নেই। তদের জন্য তো কোনও বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হচ্ছে না। এত লোক এনে দিল্লিতে এসে সার্কাস করছে। দিল্লিতে এনে কী হবে?”
- কেন্দ্র টাকা দিচ্ছ না, এই কথা দিল্লিবাসী বিশ্বাস করবে? দিল্লি ছাড়ুন, বাংলার মানুষ বিশ্বাস করবে? কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে টাকা নেই। যে টাকা আছে, তা তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী, ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধানদের ফ্ল্যাট-বাড়িতে লুকানো রয়েছে। এটা সকলে জানেন।
- দিল্লিতে আসা নিয়ে ওরা বলছে কেন্দ্রীয় সরকার ভয় পেয়ে ট্রেন আটকে দিয়েছে। আমাদের কর্মসূচির সময় তো স্টেশনেই মারধর করা হয়েছে। কাউকে ট্রেনে উঠতে দেওয়া হয়নি। কলকাতায় আসতে দেওয়া হয়নি বিজেপি কর্মীদের।
- বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে যে শিশু মারা গিয়েছে, তাঁর বাবা আসতে চাননি। রোজ করে আনা হয়েছে তাঁকে।
- তৃণমূল বলছিল উত্তর প্রদেশে নাকি বিজেপি বাস আটকে দেবে। কিন্তু কেউ আটকায়নি। বরং যোগীজিকে বাংলায় আটকে দেওয়া হয়েছিল।