নতুন ডিরেক্টর পেল সিবিআই, প্রধানের পদে এলেন সুবোধ কুমার জয়সওয়াল
১৯৮৫ সালের ব্যাচের এই আইপিএস মহারাষ্ট্রের ক্যাডার। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে।
নয়া দিল্লি: কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর পরবর্তী পূর্ণ সময়ের ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োজিত হলেন সিআইএসএফ-এর ডিরেক্টর আইপিএস সুবোধ কুমার জয়সওয়াল। আগামী দুই বছরের জন্য স্থায়ীভাবে এই পদে নিয়োগ পেলেন মহারাষ্ট্রের এই প্রাক্তন ডিজিপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি কমিটি সুবোধ কুমারকে পরবর্তী সিবিআই প্রধান হিসেবে নিয়োগ করে। ১৯৮৫ সালের ব্যাচের এই আইপিএস মহারাষ্ট্রের ক্যাডার। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে।
যদিও সোমবার যখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি এক বৈঠক করে তখন পরবর্তী সিবিআই প্রধান হওয়ার দৌড়ে অন্য বেশ কয়েকটি নাম উঠে এসেছিল। ১৯৮৫ সালের ব্যাচের আইপিএস অফিসার তথা উত্তর প্রদেশের পুলিশ প্রধান এইচসি অবস্থির নাম ছিল দৌড়ে। এ বাদেও এসএসবি-র ডিজি কেআর চন্দ্র এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের বিশেষ সচিব ভিএসকে কাউমুদির নামও ছিল সম্ভাব্য সিবিআই প্রধানের তালিকায়। এ বাদেও দুটি বিতর্কিত নাম ছিল সেই তালিকায়। বিএসএফ প্রধান রাকেশ আস্থানা ও এনআইএ প্রধান ওয়াইসি মোদীর নাম ছিল সম্ভাব্য তালিকায়। কিন্তু তিন সদস্যের কমিটিতে থাকা প্রধান বিচারপতির ‘৬ মাস নিয়মে’ বাদ পড়তে হয় ওই দু’জনকে। প্রধান বিচারপতি এনভি রামন শীর্ষ আদালতের একটি পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গ টেনে জানান, কোনও পদাধিকারীর যদি ৬ মাস মেয়াদ থাকে তাহলে তাঁকে কোনও সর্বোচ্চ পদে আসীন করা যায় না।
তারপরই মোটামুটি পরবর্তী সিবিআই প্রধান হিসেবে সুবোধ জয়সওয়ালের নাম একপ্রকার নিশ্চিত ধরে নেওয়া হয়। মঙ্গলবারে রাতেই এই নামে সিলমোহর দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও নাম বাছাই করার প্রক্রিয়া নিয়ে গতকালই আপত্তি তোলেন বাছাই কমিটির তৃতীয় সদস্য তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলতেনা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। কংগ্রেস নেতার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দেশের অন্যতম প্রথম সারির এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর বেছে নেওয়ার সময়ও ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অধীরের দাবি, “যে পদ্ধতিতে গোটা বিষয়টা করা হয়েছে, তা কমিটির নির্দেশের পরিপন্থী। গত ১ মে আমার কাছে ১০৯ টি নাম পাঠানো হয়েছিল। আজ দুপুর একটার মধ্যে ১০ টি নাম বেছে নেওয়া হল, বিকেল ৪ টের মধ্যে তালিকায় ছিল ৬ টি নাম। এই ধরনের গা-ছাড়া মনোভাব অত্যন্ত আপত্তিকর।”
আরও পড়ুন: বাধ সাধলেন প্রধান বিচারপতি, সিবিআই প্রধানের দৌড় থেকে বাদ ‘বিতর্কিত’ মোদী-আস্থানা
উল্লেখ্য, রাকেশ আস্থানা ও ওয়াইসি মোদীকে নিয়ে একাধিকবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সিবিআই-এর বিশেষ অধিকর্তা থাকাকালীন সিবিআই প্রধান আলোক বর্মার সঙ্গে তরজা চরমে উঠেছিল আস্থানার। সে সময় আলোক বর্মাকে অপসারণ করেছিল কেন্দ্র। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন ওয়াইসি মোদী। পরবর্তীকালে গুজরাটের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হরেন পাণ্ড্য খুনের দায়িত্বেও ছিলেন ওয়াইসি মোদী। হরেন পাণ্ড্য গুজরাট দাঙ্গার তদন্তে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছিলেন। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিবার অভিযোগ করেছিল রাজনৈতিক কারণেই খুন হতে হয়েছিল তাঁকে। ওয়াইসি মোদীর বিরুদ্ধেও তদন্ত সঠিক ভাবে না করার অভিযোগ উঠেছিল।