‘সুপ্রিম কোর্ট ইজ় আ সুপ্রিম জোক’বেঁফাস মন্তব্য করে আদালত অবমাননার মুখে কমেডিয়ান কুণাল কামরা
বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কুণালের কটাক্ষ, “যে আইনজীবীরা এতদিন সুপ্রিম কোর্ট ও তার বিচারক বা বিচারপতিদের সম্মানীয় বলে সম্বোধন করতেন, তাঁদের কারোর যদি পিঠের শিরদাঁড়া সোজা হয় তবে সম্মানীয় কথাটা বর্জন করুন।”
TV9 বাংলা ডিজিটাল : সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামীর ( Arnab Goswami) অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশকে কটাক্ষ করায় আদালত অবমাননা মুখে পড়লেন কমেডিয়ান কুণাল কামরা (Kunal Kamra)। একাধিক টুইটে সুপ্রিম কোর্টের(Supreme Court) নির্দেশের বিরুদ্ধে বাঁকা মন্তব্য করেন কুণাল। টুইটে তিনি লেখেন, “দেশের সুপ্রিম কোর্ট আসলে সুপ্রিম জোকে পরিণত হয়েছে।”
The Supreme Court of this country is the the most Supreme joke of this country…
— Kunal Kamra (@kunalkamra88) November 11, 2020
এখানেই ক্ষান্ত হননি বছর বত্রিশের ওই কমেডিয়ান। অর্ণবের (Arnab)জামিনের পক্ষে সওয়াল করা বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ( Dhananjaya Y. Chandrachud) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক কুণালের মন্তব্য , “ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় একজন এমন বিমান পরিচারক যিনি কেবল প্রথম শ্রেণির আরোহীদের শ্যাম্পেন সার্ভ করেন। বাকি যাত্রীরা বুঝতেই পারেন না তাঁরা আদৌ বিমানে আছেন কি না! বিচার!”
DY Chandrachud is a flight attendant serving champagne to first class passengers after they’re fast tracked through, while commoners don’t know if they’ll ever be boarded or seated, let alone served. *Justice*
— Kunal Kamra (@kunalkamra88) November 11, 2020
উল্লেখ্য, অন্বয় নায়েক (Anvay Naik) ও কুমুদ নায়েকের আত্মহত্যা মামলায় গতকাল জামিন পান অর্ণব, ফিরোজ শেখ ও নীতীশ সারদা। ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান অর্ণব। তারপরই সুপ্রিমকোর্টের ( Supreme Court) এই সিদ্ধান্তকে নিশানা করেন কুণাল ।
বুধবার বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জির বেঞ্চের প্রশ্ন, “পাওনা টাকা না দেওয়া মানেই কি আত্মহত্যায় প্ররোচনা? এই মামলায় যদি কাউকে জামিন না দেওয়া হয় তাহলে কি তা বিচারের নামে কৌতুকে পরিণত হবে।” অর্ণবের জামিনের প্রসঙ্গে বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও বলেছিলেন, আপনার যদি কোনও চ্যানেল ভাল না লাগে দেখবেন না। আমিও তো দেখি না। ” তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি এই মামলায় হস্তক্ষেপ না করি , তবে আমরা ধ্বংসের পথে হাঁটব। মতাদর্শের পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু সাংবিধানিক অধিকার সকলের জন্যেই সমান।”
বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কুণালের কটাক্ষ, “যে আইনজীবীরা এতদিন সুপ্রিম কোর্ট ও তার বিচারক বা বিচারপতিদের সম্মানীয় বলে সম্বোধন করতেন, তাঁদের কারোর যদি পিঠের শিরদাঁড়া সোজা হয় তবে সম্মানীয় কথাটা বর্জন করুন।”
All lawyers with a spine must stop the use of the prefix “Hon’ble” while referring to the Supreme Court or its judges. Honour has left the building long back…
— Kunal Kamra (@kunalkamra88) November 11, 2020
এরপরই কুণালের বিরুদ্ধে একাধিক আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের কাছে আদালত অবমাননার মামলা করার আর্জি জানান। স্কন্দ বাজপেয়ী নামে এক ব্যক্তির চিঠির উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল ( K. K. Venugopal) বলেন, ‘নীচে যে টুইটগুলি দেওয়া হয়েছে, তা শুধু বাজে মনোবৃত্তির নয়, তা মজা এবং আদালত অবমাননার মধ্যে যে সীমা আছে, তা স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে।’দুটি টুইটের উল্লেখ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের একটি বিকৃত ছবিরও উল্লেখ করেছেন।
Contempt of court it seems ??? pic.twitter.com/QOJ7fE11Fy
— Kunal Kamra (@kunalkamra88) November 11, 2020
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অন্য টুইটগুলি অত্যন্ত আপত্তিকর এবং এটা সম্ভবত আদালত সিদ্ধান্ত নেবে যে সেই টুইটগুলি সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালত অবমাননা শুরু হবে কিনা।’ একইসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমার মনে হয়, বর্তমানে মানুষ মনে করেন, বাক স্বাধীনতার ক্ষমতা প্রয়োগ করে খোলাখুলি এবং নির্লজ্জভাবে সুপ্রিম কোর্ট এবং বিচারপতিদের নিন্দা করতে পারেন। কিন্তু সংবিধানে বাকস্বাধীনতার অবমাননার বিষয়টিও আছে এবং আমার মতে, এটাই মানুষের বোঝার সময় অযাচিত এবং নির্লজ্জভাবে সুপ্রিম কোর্টকে আক্রমণ করলে ১৯৭২ সালে আদালত অবমাননার আইনে শাস্তি মিলতে পারে।’
উল্লেখ্য , কুণাল-অর্ণব বিদ্বেষ নতুন নয়। এর আগেও বিমানে এক সঙ্গে সফর করতে গিয়ে অর্ণবের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন কুণাল। বিতর্কিত সেই ভিডিয়ো ঝড় তুলেছিল দেশে। কুণালের বিমানযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল একাধিক উড়ান সংস্থা।
??? pic.twitter.com/MzBrjPDDYv
— Kunal Kamra (@kunalkamra88) September 17, 2020
গতকাল, অর্ণবের জামিনের পর মহারাষ্ট্র সরকার যে খানিকটা কোণঠাসা হয়েছে তা বুঝতে সময় নেয়নি রাজনৈতিক মহল। জামিন পেয়েই খোলাখুলি উদ্ধব ঠাকরেকে চ্যালেঞ্জ করেন অর্ণব গোস্বামী। কার্যত, বিজেপি-শিবসেনা সংঘাতের আগুনে এবার ঘি ঢাললেন কুণাল কামরা।