COVID-19 booster dose: এখন বুস্টার ডোজ নিলে উপকারের থেকে ক্ষতিই বেশি: এইমস-এর চিকিৎসক
COVID-19 booster dose:
নয়া দিল্লি: ভারতে ফের বাড়ছে কোভিডের দাপট। সোমবার সকালে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০,৭৫৩ টি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সাধারণ মানুষকে সর্বোত্তম সুরক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন। অনেকেই বলছেন বুস্টার ডোজ নেওয়ার জন্য। তবে, নয়া দিল্লির এইমস হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিনের অধ্য়াপক, ডাক্তার সঞ্জয় রাইয়ের মতে, এই সময়ে কোভিড-১৯ টিকার বুস্টার ডোজ নিলে লাভের থেকে ক্ষতি হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “আরএনএ ভাইরাসের মিউটেশনের কারণে, সংক্রমণের সংখ্যা কখনও বাড়বে, কখনও কমবে। আগামী দিনেও পরিস্থিতি এমনই থাকবে। এই নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যাঁরা কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রামিত হবে, তাদের দেহে নতুন করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে। তবে, সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, সংক্রমণের তীব্রতা, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বা মৃত্যুর হার কি বাড়ছে?
এইমস-এর এই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, কোভিড মহামারির প্রাথমিক পর্যায়ে, খুব অল্প সংখ্যক মানুষই কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন। ভারতীয়দের মধ্যে গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা তৈরি হয়নি। তাই, সেই সময় প্রয়োজন ছিল যত বেশি সম্ভব ভ্যাকসিন দেওয়া। কিন্তু, কোভিড মহামারির তিনটি তরঙ্গের পর, বর্তমানে ভারতের অধিকাংশ মানুষই একবার না একবার কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। তাই অধিকাংশ ভারতীয়র দেহেই কোভিড-১৯-এর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। যেকোনও ভাইরাসের ক্ষেত্রেই স্বাভাভিক অনাক্রম্যতা ভ্যাকসিনের থেকে অনেক বেশি কার্যকর। ডাক্তার সঞ্জয় রাই বলেছেন, “আমরা টিকা দিয়ে কোভিডের কোন নতুন তরঙ্গ বন্ধ করতে পারি না। এতে শুধুমাত্র মৃত্যু এবং রোগের তীব্রতা কম হয়। সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য আরও স্টেরয়েড দিলে আপনার উপকারের থেকে ক্ষতিই বেশি হতে পারে।”
বর্তমানে করোনা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা দুই ভাইরাসঘটিত রোগই মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে। এই অবস্থায় কোভিড-১৯ টিকার বুস্টার ডোজের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন এইমসের কমিউনিটি মেডিসিনের এই অধ্যাপক। তিনি বলেছেন, বুস্টার ডোজের কার্যকারিতা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণা হয়নি। শুধুমাত্র সম্ভাবনার ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি না যে এই সময়ে বুস্টার ডোজ নিয়ে মানুষের উপকার হবে।” চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া – এই সমস্ত দেশে বর্চমানে কোভিড ব্যাপক হারে বাড়ছে। এই দেশগুলিতে অনেক বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে। জাপানে ৪টি করে ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া হয়েছে। তবুও সেখানে ফের করোনা সংক্রমণ খুব দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে। এই দেশগুলিতে টিকা দেওয়ার পরও কোভিড-১৯ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণ, তারা শূন্য কোভিড-১৯ নীতি নিয়েছিল। ফলে, এই দেশগুলির নাগরিকদের প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণ হয়নি। এর ফলে, টিকা দেওয়ার পরও মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন।”
তাহলে কি বুস্টার ডোজ বা টিকা নেওয়া উচিত নয়? ডাক্তার সঞ্জয় রাই জানিয়েছেন, প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণের পর যে সুরক্ষা পাওয়া যায়, তা ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও পাওয়া যায় না। তবে যদি কোনও ব্যক্তি এখনও পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত না হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে ভ্যাকসিন নিতেই হবে। তিনি বলেন, “আপনি যদি ইতিমধ্যে সংক্রামিত হয়ে থাকেন, তবে বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকর হবে তা জানার উপায় নেই। এই সম্পর্কে কোনও গবেষণা নেই। প্রাকৃতিক অনাক্রম্যতা যদি করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টকে আটকাতে না পারে, তাহলে ভ্যাকসিন নিয়েও তাকে আটকানো যাবে না। টিকা নিয়েও আপনি আক্রান্ত হতে পারেন। আমরা যদি পরীক্ষা চালিয়ে যাই, তাহলে সক্রমণের সংখ্যাও বাড়বে। তবে, সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু এবং রোগের তীব্রতা যেন না বাড়ে সেদিকে নজর রাখা।”