আত্মনির্ভরতার দিকে আরও এক কদম, দেশীয় অস্ত্র কিনতে অনুমোদন ৭৬,৩৯০ কোটি টাকা
Agni-IV missile: সোমবার (৬ জুন), সামরিক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার দিকে আরও এক কদম এগিয়ে গেল দেশ। দেশীয় সামরিক অস্ত্রনির্মাতাদের থেকে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য ৭৬,৩৯০ কোটি টাকার অনুমোদন দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
নয়া দিল্লি: কোভিড-১৯ মহামারির বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডাক দিয়েছিলেন ‘আত্মনির্ভর ভারতের’। সোমবার (৬ জুন), সামরিক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার দিকে আরও এক কদম এগিয়ে গেল দেশ। এদিন, দেশীয় সামরিক অস্ত্রনির্মাতাদের থেকে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য ৭৬,৩৯০ কোটি টাকার অনুমোদন দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাদীন প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ পরিষদ বা ডিএসি এই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে।
এই ৭৬,৩৯০ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৩৬,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য। এই টাকায় পরবর্তী প্রজন্মের করভেট বা রণতরী কিনবে নৌবাহিনী। এই রণতরীগুলি নজরদারি অভিযান, এসকর্ট অভিযান, প্রতিরোধ, সারফেস অ্যাকশন গ্রুপের অভিযান, অনুসন্ধান অভিযান, হামলা করা কিংবা উপকূলীয় প্রতিরক্ষার মতো বিভিন্ন বহুমুখী ভূমিকায় ব্যবহার করা হবে। এই রণতরীগুলিতে জাহাজ নির্মাণের সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এগুলির অভ্যন্তরীণ নকশাও হবে একেবারে নতুন।
এছাড়াও হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড বা হ্যালকে ডর্নিয়ার বিমান এবং সুখোই-৩০ এমকেআই এরো-ইঞ্জিন তৈরির অনুমোদনও দিয়েছে প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ পরিষদ। নয়া যুদ্ধবিমান ও এরো-ইঞ্জিনগুলির দেশীয়করণের উপর মনোযোগ দেওয়াই এর লক্ষ্য। পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও, একাধিক সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, রুক্ষ ভূপৃষ্ঠে চলার মতো রাফ টেরেইন ফর্ক লিফ্ট ট্রাক, ব্রিজ লেয়িং ট্যাঙ্ক, ট্যাঙ্ক ধ্বংসকারী অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল, আর্মার্ড ফাইটিং ভেহিকেল, দেশীয় নকশায় তৈরি অস্ত্র সনাক্তকারী রাডার এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র।
নৌসেনা, বায়ুসেনা এবং সেনাবাহিনীর পাশাপাশি, এদিন উপকূল প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য়ও এক ঐতিহাসিক প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। প্রতিরক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তর আনার লক্ষ্য নিয়েছে মোদী সরকার। আর সেই লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল কোস্ট গার্ড’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ পরিষদ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, ‘এই প্রকল্পের অধীনে, কোস্ট গার্ডের ভূপৃষ্ঠে এবং আকাশে হওয়া বিভিন্ন অভিযান, লজিস্টিক, অর্থ এবং মানবসম্পদ প্রক্রিয়া ডিজিটাইজ করার জন্য ভারতব্যাপী একটি সুরক্ষিত নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হবে’।
গত এপ্রিল মাসে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অংশ হিসাবে ১০৮টি সামরিক অস্ত্রশস্ত্র দেশীয়ভাবে উৎপাদন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। এর আগে অবধি বিভিন্ন সামরিক সাজ-সরঞ্জামের জন্য বিদেশের মুখাপেক্ষী ছিল ভারত। এখনও বিশ্বের মধ্যে ভারতেই সবথেকে বেশি সামরিক সরঞ্জামের আমদানী করা হয়। তবে, এই ছবিটা পাল্টে ফেলতে চাইছে মোদী সরকার। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে, দেশীয় উৎপাদনকে প্রোৎসাহ দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। প্রসঙ্গত, তার আগেই ২০২১ সালের শেষ দিকে প্রায় ৪৯টি সামরিক সরঞ্জাম আমদানী নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র। দেশী উৎপাদন বাড়লে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৫৯টি সামরিক সরঞ্জাম আমদানী নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন রাজনাথ সিং।