ট্রাক্টর মিছিলে ‘ইন্ধনে’ ইমরানের দেশ! পাক টুইটার ইউজারদের তালিকা বানাল দিল্লি পুলিস

দীপেন্দ্র পাঠক বলেন, "পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন ট্রাক্টর মিছিলের উপর নজর রাখছে। প্রায় ৩০৮টি পাকিস্তানি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে এই মিছিলের উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কৃষকদের সুরক্ষা দিতে আমরা যাবতীয় ব্যবস্থা নেব।"

ট্রাক্টর মিছিলে 'ইন্ধনে' ইমরানের দেশ! পাক টুইটার ইউজারদের তালিকা বানাল দিল্লি পুলিস
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jan 24, 2021 | 8:44 PM

নয়া দিল্লি: প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্রাক্টর মিছিল নিয়ে গতকালই মিলেছিল সবুজ সংকেত, অপেক্ষা ছিল কেবল নির্দিষ্ট রুটের। রবিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে সেই রুটেরও ঘোষণা করল দিল্লি পুলিস (Delhi police)। একইসঙ্গে জানানো হল, এই ট্রাক্টর মিছিলের উপর পাকিস্তান (Pakistan) থেকেও নজরদারি করা হচ্ছে বিভিন্ন টুইটার হ্যান্ডেলের মাধ্যমে। সেই কারণেই মিছিল ঘিরে কড়া পুলিসি পাহারার ব্যবস্থা করা হবে, এমনটাই জানালেন দিল্লি পুলিসের গোয়েন্দা শাখার স্পেশাল কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক।

আজ কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার পর তিনি বলেন, “সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে এবং মিছিল ঘিরে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও জানানো হয়েছে। আমরা কৃষকদের বাবার বলেছি যে মিছিলের কারণে প্রজাতন্ত্র দিবসের যেন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। কারণ এটি আমাদের দেশের সম্মানের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। তবে কৃষক ভাইদের উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।”

কৃষকদের অনুষ্ঠানসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, “আলোচনায় আমরা সহমত হয়েছি যে নিয়ম মেনেই শান্তিপূর্ণভাবে কৃষকরা মিছিল করবে। তিকরি সীমান্ত থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে দেওয়া হবে এবং সেখান থেকে ৫২ থেকে ৬৩ কিলোমিটার রাস্তা কৃষকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। অন্যদিকে, সিংঘু সীমান্ত থেকে ৬০ কিলোমিটার ও গাজিপুর সীমান্ত থেকে ৪৬ কিলোমিটার রাস্তা কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যানজটের কারণে দিল্লির আউটার রিং রোডে মিছিল করার অনুমতি দেওয়া সম্ভব হয়নি।”

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘রামায়ণ’ উপহার মধ্য প্রদেশের স্পিকারের

দিল্লি পুলিসের তরফে জানানো হয়েছে, মোট তিনটি রুট ঠিক করা হয়েছে ট্রাক্টর মিছিল (Trator Rally)-র জন্য। প্রথম রুটটি সিংঘু সীমান্ত থেকে শুরু হয়ে সঞ্জয় গান্ধী নগর হয়ে বাওয়ানা অবধি যাবে। দ্বিতীয় রুটে কৃষকরা তিকরি সীমান্ত থেকে যাত্রা শুরু করে নাঙ্গলোই-নজফগড় হয়ে যাবে। তৃতীয় রুটটি গাজিপুর থেকে শুরু হয়ে অপ্সরা সীমান্ত ও হাপুর অবধি যাবে। প্রতিটি মিছিলই কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এগিয়ে যাবে। এই বিষয়ে হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ পুলিসের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে।

২৬ জানুয়ারির সরকারি প্যারেড শেষ হওয়ার পরই কৃষাণ গণতন্ত্র প্যারেড শুরু করা যাবে বলে জানান পুলিস আধিকারিকেরা। তাঁরা জানান, ইতিমধ্যেই তিকরি সীমান্তে প্রায় সাত-আট হাজার কৃষক ট্রাক্টর নিয়ে জমা হয়েছেন। গাজিপুর ও সিংঘু সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকদের সংখ্যা যথাক্রমে এক হাজার ও পাঁচ হাজার। এখনও অবধি মোট ১২-১৩ হাজার ট্রাক্টরের জমায়েত হয়েছে সীমান্তে, আগামিকাল এই সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে। কেবল পঞ্জাব-হরিয়ানাই নয়, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগঢ়, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা থেকেও কৃষকরা আন্দোলনে যোগদান করার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। মিছিলে যাতে কোনও সমস্যা বা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিজেদের ঘাড়ে তুলে নিয়েছেন বলেই জানান দিল্লি পুলিসের গোয়েন্দা শাখার স্পেশাল কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক।

একইসঙ্গে তিনি জানান, কৃষকদের উপর সম্পূর্ণ আস্থা থাকলেও ১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে গোপন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা হতে পারে। দীপেন্দ্র পাঠক বলেন, “পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন ট্রাক্টর মিছিলের উপর নজর রাখছে। প্রায় ৩০৮টি পাকিস্তানি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে এই মিছিলের উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কৃষকদের সুরক্ষা দিতে আমাদের তরফ থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”

অন্যদিকে, দিল্লি পুলিসের কাছ থেকে মিছিলের ছাড়পত্র পাওয়ার পর স্বরাজ ইন্ডিয়ার যোগেন্দ্র যাদব বলেন, “আমি আগেই জানিয়েছিলাম ২৬ তারিখ শান্তিপূর্ণভাবেই কিষাণ গণতন্ত্র প্যারেডের আয়োজন করা হবে। আজ দিল্লি পুলিসের আধিকারিকদের সঙ্গে ছোট একটি বৈঠক হয়েছে। ট্রাক্টর মিছিলের জন্য আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছি।” তবে আরেক কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত বলেন, “মিছিল করার জন্য পর্যাপ্ত ডিজেল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে ট্রাক্টর চালানোয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি ডিজেলের অভাবে মাঝরাস্তায় ট্রাক্টর দাঁড়িয়ে যায়, তবে যানজটের সৃষ্টি হবে। সেক্ষেত্রে কৃষকরা দায়ী থাকবে না।”

আরও পড়ুন: বাংলায় আইনের শাসন নেই, সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঠুকল বিজেপি