কৃষক আন্দোলনের জেরে অফিস যেতে লাগছে ১০ গুণ সময়, সমাধান চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে সিঙ্গল প্যারেন্ট মনিকা

শুনানির সময় মনিকা ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নি শীর্ষ আদালতকে জানান, এর পূর্বে পথ অবরোধ সম্পর্কিত আদালত অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি হয়েছে, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

কৃষক আন্দোলনের জেরে অফিস যেতে লাগছে ১০ গুণ সময়, সমাধান চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে সিঙ্গল প্যারেন্ট মনিকা
সুপ্রিম কোর্টের কাছে কড়া ভাষায় ধমক খেল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ
Follow Us:
| Updated on: Mar 30, 2021 | 9:42 PM

জ্যোতির্ময় রায়: নিত্য যানজট, অতিষ্ঠ জীবন! করোনা কালে অফিস-কাছারি, কলকারখানা বন্ধ হওয়ায় চাকরি বজায় রাখা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি যানজটের জন্য চাকরি যায় তাহলে কী করার থাকতে পারে। যানজটের জন্য নয়ডা থেকে দিল্লির ২০ মিনিটের যাত্রা পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ২ ঘণ্টা। বিরক্ত হয়ে অবশেষে দেশের শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হলেন নয়ডা নিবাসিনী মনিকা আগরওয়াল।

কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদে গত ৪ মাস ধরে দিল্লির বিভিন্ন সীমান্ত অবরোধ করে বসে আছেন কৃষকরা। দিল্লি আসার রাস্তা প্রায় বন্ধ। এর পূর্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে শাহিনবাগে ধরনায় কয়েক মাস দিল্লি-নয়ডা রাস্তা বন্ধ ছিল। মনিকা আগরওয়াল শীর্ষ আদালতে একটি আবেদন করে নয়ডা থেকে দিল্লি পর্যন্ত ট্র্যাফিক জ্যামের সমস্যা মেটানোর জন্য কেন্দ্র এবং দিল্লি পুলিশকে উপযুক্ত নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

গত ২৬ শে মার্চ, বিচারপতি সঞ্জয় কিশন কৌলের বেঞ্চ একটি ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মামলার শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে পথের অন্তরায়গুলি সরিয়ে এবং লোকজনদের যাতায়াতের মসৃণ করার একটি নোটিস জারি করে। আদালতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২ এপ্রিল।

বিপণন পেশার সঙ্গে জড়িত নয়ডার বাসিন্দা মনিকা আগারওয়াল একটি রিট পিটিশনে জানান, তিনি তাঁর সন্তানের একক অভিভাবক (সিঙ্গেল প্যারেন্ট) এবং প্রায় পেশার কাজে এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে তাঁদের দিল্লি যেতে হয়। যানজটের জন্য বর্তমানে দিল্লি যাওয়া এখন তাঁদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ মাত্র ২০ মিনিটের যাত্রাপথ অতিক্রম করতে এখন ২ ঘণ্টা সময় লাগছে।

শুনানির সময় মনিকা ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নি শীর্ষ আদালতকে জানান, এর পূর্বে পথ অবরোধ সম্পর্কিত আদালত অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি হয়েছে, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। মহিলার আবেদনের শুনে শীর্ষ আদালত জানায়, এটি যদি হয় তবে এটি স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা। আদালত এই নির্দেশকে অনুসরণ করতে এবং এখন পর্যন্ত নেওয়া সমস্ত পদক্ষেপের বিষয়ে তথ্য এবং উত্তর দেওয়ার জন্য ৯ই এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের উদ্দেশে একটি নোটিস জারি করে।

উল্লেখ্য, বিচারপতি সঞ্জয় কিশন কৌল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে শাহিনবাগ ধরনা মামলায় একটি জনস্বার্থ মামলায় রায় দিয়েছিলেন। সেই রায়ে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছিল, শান্তিপূর্ণ ধরনা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার তবে জনসাধারণের জায়গায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধা দেওয়া যায় না। আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এবং সমস্যা মেটানো প্রশাসনের দায়বদ্ধতা। কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদে, কৃষকরা গত ৪ মাস ধরে দিল্লির বিভিন্ন সীমান্তে ধরনায় বসেছেন। অধিকারের জন্য প্রতিবাদের হাতিয়ার যদি ধর্মঘট হয় তাহলে তার বারবার প্রয়োগ শাসকদলের পতনের কারণ হয়ে ওঠে! এটা পশ্চিমবঙ্গে বামদল ছাড়া আর কে ভালো বুঝবে। এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: ‘চিনের কাছে এক ইঞ্চিও জমি হারায়নি ভারত’, সাফ জানালেন সেনাপ্রধান