খারিজ কেন্দ্রের প্রস্তাব, বৃহত্তর আন্দোলনের পথে কৃষকেরা

লিখিত প্রস্তাবে কেন্দ্র জানিয়েছিল, নূন্যতম সহায়ক মূল্য (Minimum Support Price) বজায় রাখার পাশাপাশি কৃষকদের দাবি মেনেই বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করা হবে। এছাড়া জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় কৃষকরা জেলাশাসকের বদলে সরাসরি আদালতেও যেতে পারবে।

খারিজ কেন্দ্রের প্রস্তাব, বৃহত্তর আন্দোলনের পথে কৃষকেরা
সিন্ধু সীমান্তে প্রতিবাদে সরব কৃষকেরা। ছবি: সংগৃহীত।
Follow Us:
| Updated on: Dec 09, 2020 | 8:46 PM

নয়া দিল্লি: কেন্দ্রের লিখিত প্রস্তাব খারিজ করে দিল কৃষক সংগঠন (Farmers Association), একইসঙ্গে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাটার বার্তাও দিলেন তাঁরা। কেন্দ্রের তরফে কৃষকদের দেওয়া লিখিত প্রস্তাবে (Written Offer) নূন্যতম সহায়ক মূল্য (MSP) বজায় রাখা ও মান্ডি প্রথা তুলে না দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনটি কৃষি আইন (Farm Law) প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। লিখিত প্রস্তাব হাতে পাওয়ার পরই আলোচনায় বসে কৃষকরা, বৈঠক শেষে জানায়, কেন্দ্রের প্রস্তাব মানতে নারাজ তাঁরা। দেশজুড়ে আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোদমে আন্দোলন শুরু করার ঘোষণাও করেন তাঁরা।

গতকাল বিকেলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) আন্দোলনকারী কৃষকদের বৈঠকে আহ্বান জানান। সেই বৈঠকে নতুন কৃষি আইনের সুবিধা সম্পর্কে কৃষকদের বোঝান তিনি। কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী আইন সংশোধনের প্রস্তাবও দেন অমিত শাহ, কিন্তু শেষমেষ সেই বৈঠকও বিফল হয়। কৃষকেরা তাঁদের দাবিতেই অনড় থাকে। আজ কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার (Narendra Singh Tomar)-র সঙ্গে ষষ্ঠ দফার বৈঠকও বাতিল করে দেন কৃষকরা।

আগের বৈঠকে কৃষকেরা জানিয়েছিল, কোন কোন বিষয়ে রাজি কেন্দ্র, তার একটি লিখিত বিবৃতি দেওয়া হোক। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজ কেন্দ্রের তরফে লিখিত প্রস্তাব দিল্লি-হরিয়ানা সিন্ধু সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে কৃষকেরা একজোট হয়ে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয় ও বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ঘোষণা করে। কৃষক সংগঠনগুলির আলোচনা শেষে কৃষক নেতা ডঃ দর্শনপাল বলেন,”আমরা আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে দিল্লি-জয়পুর জাতীয় সড়ক আটক করব। সেইদিন থেকেই দেশের সমস্ত টোলপ্লাজায় কৃষকেরা ধরনায় বসবে। ১৪ ডিসেম্বর দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক দেব আমরা। এছাড়াও বিজেপির সকল সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার আবেদন জানানো হয়েছে সকলকে।”

আরও পড়ুন:‘অপর্যাপ্ত তথ্যে’র কারণে ছাড়পত্র পেল না ভারত বায়োটেক-সিরাম ইন্সটিটিউটের করোনা টিকা

লিখিত প্রস্তাবে কেন্দ্র জানিয়েছিল, নূন্যতম সহায়ক মূল্য (Minimum Support Price) বজায় রাখার পাশাপাশি কৃষকদের দাবি মেনেই বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করা হবে। এছাড়া জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় কৃষকরা জেলাশাসকের বদলে সরাসরি আদালতেও যেতে পারবে। কৃষকদের মনে জমি কেড়ে নেওয়ার যে ভয় রয়েছে, সেই বিষয়ে আশ্বস্ত করে কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, কোনও ক্রেতাই জমির বদলে ঋণ নিতে পারবে না। কৃষকদেরও কেউ জোর করে জমি দিতে বাধ্য করবে না।

কেন্দ্র সমঝোতার প্রস্তাব দিলেও কৃষকেরা কেন্দ্রের এই প্রস্তাব খারিজ করে দেয় এবং জানায়, আইন প্রত্যাহার না হওয়া অবধি তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কৃষক সংগঠনের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা আইনের সংশোধন চাই না, আইনগুলি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হোক, এটাই আমাদের দাবি।”

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভেরকর (Prakash Javadekar) কৃষকদের সঙ্গে বৈঠককে ‘ওয়ার্ক ইন প্রগ্রেস’ (work in Progess) বলে অ্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, “যখন দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, তখন তার লাগাতার ধারাভাষ্য দেওয়া যায় না। দুই পক্ষই যাতে সম্মতিতে আসে, তার প্রচেষ্টাই চলছে।”

অন্যদিকে আজ রাজস্থান পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি (BJP)-র জয়কে দলের প্রেসিডেন্ট জে পি নাড্ডা (J P Nadda) ‘কৃষকদের আস্থা’ বলেই অ্যাখ্যা দেন। প্রকাশ জাভেরকরও বলেন, “কৃষি আইন নিয়ে বিরোধী দলগুলি ক্রমাগত আক্রমণ করলেও সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপিকেই সমর্থন করছে।”

আরও পড়ুন: রাজস্থানে গেরুয়া ঝড় , পঞ্চায়েতে জয়জয়কার গেরুয়া শিবিরের