Gujarat: বিয়ের ছয়মাস পর ফাঁস বউয়ের ‘ভয়ঙ্কর গোপন কথা’, পথে বসালো বৈবাহিক সাইট
Gujarat man marries Assam wanted criminal: ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইট দেখে অসমের মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন গুজরাটের এক ব্যক্তি। ছয়মাস পরই জানতে পারলেন স্ত্রীর আসল পরিচয়!
আহমেদাবাদ: বর্তমানে ভারতে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইট বা বৈবাহিক সাইটগুলি। সারা দেশের বহু যুবক-যুবতী এই সাইটগুলির মাধ্যমে তাঁদের ভবিষ্যত জীবনের সঙ্গী বা সঙ্গিনীদের খুঁজে নেন। গুজরাটের পোরবন্দরের বাসিন্দা বিমল কারিয়াও এরকমই এক ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে খুঁজে পেয়েছিলেন রীতা দাসকে। অসমের গুয়াহাটির বাসিন্দা সেই মহিলাকেই তিনি তাঁর স্বপ্নের জীবনসঙ্গিনী বলে মনে করেছিলেন। ধূমধাম করে বিয়েও হয়েছিল। কিন্তু, বিয়ের মাত্র ছয় মাস পরই স্বপ্নভগ্ন হয়েছে তাঁর। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। তিনি মুখোমুখি হয়েছেন এক অত্যন্ত অপ্রিয় এবং বিস্ময়কর সত্যের – তাঁর স্ত্রী একজন দাগী অপরাধী! এই পরিস্থিতিতে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা ভাবছেন ওই বিমল।
বৈবাহিক সাইটে আলাপ হওয়ার পরই রীতা দাসকে মনে ধরেছিল বিমলের। ইন্টারনেটে দুজনেরই মধ্যে অনেক গল্প হয়। গুয়াহাটিতে গিয়ে রীতার সঙ্গে সামনাসামনি দেখাও করেছিলেন সুবিমল। এরপরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই যুগল। তবে, ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে রীতা বিবাহবিচ্ছেদের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তাই বিয়ের আগে তাঁকে বিবাহবিচ্ছেদের শংসাপত্র তৈরি করতে বলেছিলেন। কিন্তু কৌশলে রীতা এই প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বিমলকে জানান, যে তাঁর প্রথম বিয়ে হয়েছিল পঞ্চায়েতের আওতায়। বিয়েরই কোনও শংসাপত্র নেই। রীতার এই যুক্তি মেনে নিয়েছিলেন বিমল।
এরপর, আহমেদাবাদে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে গাঁটছড়া বাঁধেন রীতা ও বিমল। তারপর থেকে ছয় মাস অত্যন্ত সুখে মসৃণভাবে কেটেছিল তাদের জীবন। কিন্তু, ছয়মাসে পরই একটি ফোন আসায় তাল কেটেছিল। বিমলকে রীতা জানান, অসম থেকে তাঁর মা ফোন করেছিলেন। জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যার সমাধানের জন্য তাঁকে অবিলম্বে অসমে যেতে হবে। সেই সময়ও বিমলের কোনও সন্দেহ হয়নি। কিন্তু, রীতা সেই যে গিয়েছিলেন, আর গুজরাটে ফেরেননি। বদলে, রীতার আইনজীবীর কাছ থেকে একটি ফোন এসেছিল বিমলের কাছে। তিনি বিমলকে জানান, রীতার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জামিনের জন্য ১ লক্ষ টাকা লাগবে। তবে, মামলাটি গুরুতর নয় বলে আশ্বস্ত করেছিলেন সেই আইনজীবী।
বিমল তখনও ভেবেছিলেন, জমি সংক্রান্ত মামলার কারণেই পুলিশ তাঁর স্ত্রীকে হেফাজতে নিয়েছে। জামিনের ১ লক্ষ টাকাও দিতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই টাকা জোগার করে রীতার অ্যাকাউন্টে পাঠানোর সহব ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন। কিন্তু, সেই টাকা পাঠানোর জন্য তাঁর আদালতের কাগজপত্র দরকার হয়েছিল। রীতার আইনজীবী ইন্টারনেটে তাঁকে সেইসব নথি দেখান। বিমল আবিষ্কার করেছিলেন, তাঁর স্ত্রীয়ের নাম রীতা দাস নয়, রীতা চৌহান! শুধু তাই নয় তিনি আরও জানতে পেরেছিলেন, এক জামিন অযোগ্য মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে আত্মগোপন করে আছেন রীতা। তাঁর নাম নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে সরাসরি ফোনে রীতাকে প্রশ্ন করেছিলেন তিনি। কিন্তু এরপর থেকেই রীতা তাঁর ফোন ধরা বন্ধ করে দেন এবং বিমলের ফোন নম্বর ব্লক করে দিয়েছিলেন।
নিরুপায় হয়ে গুগলের উপর বরসা করেন বিমল। গুগলে রীতা চৌহান লিখে সার্চ করতেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাঁর সামনে যে ফল এসেছিল, তাতে তো তাঁর চক্ষু চড়কগাছ! তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী একজন দাগী অপরাধী। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুরি, ডাকাতি, হত্যা এবং গন্ডার শিকারের চোরাশিকারের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে অনিল চৌহান নামে এক গাড়ি চোরকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তেজপুরের বাসিন্দা অনিলের বিরুদ্ধে ২৪ বছরে ৫০০০-এরও বেশি গাড়ি চুরির অভিযোগ রয়েছে। অনিল এবং রীতার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র সরবরাহে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। রীতার অবশ্য দাবি, “অনিলের সঙ্গে আমার ২০০৭ সালে বিয়ে হয়েছিল। ২০১৫ সালে ওর বিরুদ্ধে গাড়ি চুরির মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তারপর থেকে অনিলের সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। বর্তমানে ও কারাগারে আছে।”