রাজনীতির মতো বলিউড সিনেমাও এখন ডানপন্থায় ঝুঁকে? কবির খান বলছেন ‘বিষাক্ত জাতীয়তাবাদ’

Bollywood cinema shifted to the right-wing: গত কয়েক বছর ধরে ভারতের রাজনীতি যে পুরোপুরি ডানদিকে ঝুঁকে রয়েছে, তা নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির দেশ জোড়া সাফল্যেই প্রমাণিত। কিন্তু, রাজনীতির মতো কি বলিউডও এখন 'ডানপন্থী'?

রাজনীতির মতো বলিউড সিনেমাও এখন ডানপন্থায় ঝুঁকে? কবির খান বলছেন 'বিষাক্ত জাতীয়তাবাদ'
(প্রতীকী ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 17, 2022 | 12:31 AM

নয়া দিল্লি: গত কয়েক বছর ধরে ভারতের রাজনীতি যে পুরোপুরি ডানদিকে ঝুঁকে রয়েছে, তা নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির দেশ জোড়া সাফল্যেই প্রমাণিত। কিন্তু, রাজনীতির মতো বলিউডও কি এখন ‘ডানপন্থী’? এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতে। বিশ্বব্যাপী ‘ডানপন্থা’ একটি বিস্তৃত দর্শন হলেও, ভারতে মূলত জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম এবং ধর্মের ধারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। আর, ২০১৬ সাল থেকে বলিউডে দেশপ্রেমের থিমে ফিল্মের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই দুইয়ের সমাপতন থেকেই ‘ডানপন্থী বলিউড’ বিতর্কের জন্ম।

বলিউড হাঙ্গামা ডট কমের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে এখনও পর্যন্ত ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এবং বিগস্ক্রিন মিলিয়ে মোট ২২টি দেশপ্রেমে বা জাতীয়তাবাদে গদগদ থিমের সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। প্রত্যেকটিই সুপার ডুপার হিটও বটে। সবথেকে বেশি ব্যবসা করেছে ‘দঙ্গল’, ৩৮৭ কোটি। সবথেকে কম, ‘পরমাণু’, ৬৫.৮ কোটি। সব ক্ষেত্রে ডানপন্থা যে খুব প্রকট, তা নয়। ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’কে যেমন প্রচলিত দেশপ্রেমের চলচ্চিত্র বলা যাবে না। তবে, এই সিনেমায় সূক্ষ্মভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযানের’ প্রচার করা হয়েছে।

আগে কি দেশাত্মবোধক সিনেমা হয়নি? প্রযোজক এবং চলচ্চিত্র ব্যবসা বিশেষজ্ঞ গিরিশ জোহর জানিয়েছেন, মনোজ কুমারের সময় থেকে বক্স অফিসের হিট মশলা হল দেশাত্মবোধক সিনেমা। ‘মাদার ইন্ডিয়া’, ‘গদর: এক প্রেম কথা’র মতো ছবি তো দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে। তবে, বর্তমানে এই সিনেমাগুলি যে বিপুল পরিমাণ ব্যবসায়িক সাফল্য পাচ্ছে, সেটি একটি নতুন বিষয় বলেই মনে করছেন তিনি। সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা হিন্দি সিনেমার প্রখ্যাত লেখক-গীতিকার প্রসূন জোশির মতে, ভারতের ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাসের কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশাত্মবোধক চলচ্চিত্রগুলি এতটা সাফল্য পেয়েছে। দেশপ্রেমিক চলচ্চিত্রগুলি আরও বেশি করে এই আত্মবিশ্বাসের প্রচার করছে। সেই কারণেই তারা দর্শকও পাচ্ছে।

এই ধরণের কিছু কিছু চলচ্চিত্রে, কেশরী বা সর্দার উধম সিংয়ের মতো চরিত্রদের অতীতের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে, সিনেমার কাহিনি বলতে গিয়ে অনেকসময় চলচ্চিত্রে সত্যকে ছাপিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক তথা লেখিকা কাবেরি বামজাই। তিনি বলেছেন, ‘ভারতের ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে উদযাপন করে এমন চলচ্চিত্রগুলি তৈরি করা খুবই ভাল। তবে সেগুলি নির্ভুল হওয়া উচিত। আমাদের অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে, যা দেখানো হচ্ছে তা ঘটনাগতভাবে সঠিক কিনা। গল্প বলার ক্ষেত্রে আমাদের সত্য হারিয়ে ফেলা উচিত নয়।’ শীর্ষস্থানীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা কবির খান বলেছেন, ‘আসলে, আজ আমরা যা দেখছি তা দেশপ্রেম নয়, জাতীয়তাবাদ। আমি মনে করি জাতীয়তাবাদে আপনার একটি শত্রুপক্ষ প্রয়োজন। আজ, এমনকি চলচ্চিত্রেও দেশপ্রেম ক্রমশ বিষাক্ত জাতীয়তাবাদে পরিণত হচ্ছে।’