Parashnath Temple: মন্দিরকে পর্যটনকেন্দ্র তকমা! জৈনদের আপত্তিতে বড় ঘোষণা কেন্দ্রের

সম্প্রতি পারশনাথ পাহাড়ের উপর অবস্থিত ওই মন্দিরটিকে কেন্দ্র করে ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে ঝাড়খণ্ড সরকার। যা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে জৈন সম্প্রদায়।

Parashnath Temple: মন্দিরকে পর্যটনকেন্দ্র তকমা! জৈনদের আপত্তিতে বড় ঘোষণা কেন্দ্রের
পরেশনাথ মন্দির
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 06, 2023 | 12:39 AM

নয়া দিল্লি: পরেশনাথ পাহাড়ে পিকনিক করতে যাওয়ার দিন শেষ! ঝাড়খণ্ডের পারশনাথ পাহাড়ে পর্যটকদের উপর বিধি-নিষেধ জারি করল কেন্দ্র। পরেশনাথ পাহাড়কে ঘিরে ঝাড়খণ্ড সরকারের ইকো-ট্যুরিজম গড়ে তোলার উপরেও স্থগিতাদেশ জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মূলত, জৈন ধর্মাবলম্বীদের বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরেই পরেশনাথ পাহাড়ে পর্যটকদের গতিবিধির উপর এবং পরেশনাথ পাহাড়কে কেন্দ্র করে ঝাড়খণ্ড সরকারের ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলার উপর বিধি-নিষেধ জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার এই বিধি-নিষেধের কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী জি. কিষাণ রেড্ডি বলেন, “কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে, এমন কোনও কাজ আমরা করব না।”

জানা গিয়েছে, এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ঝাড়খণ্ডের জৈন প্রতিনিধিরা। মূলত পারশনাথ পাহাড়কে ঘিরে ঝাড়খণ্ড সরকার যে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে এবং জৈনদের ওই তীর্থস্থানে পর্যটকদের যেভাবে আনাগোনা বাড়তে শুরু করেছে তা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানান তাঁরা। কেন্দ্রের প্রতি তাঁরা পাল্টা প্রশ্ন ছোড়েন, “মন্দির কি বেড়ানোর জায়গা?”

মন্দির চত্বরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কারণ হিসাবে এদিন জৈন প্রতিনিধিরা যে যুক্তি দেখান, তারপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। ঝাড়খণ্ডের জৈন প্রতিনিধিদের দেখা করার ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই পারশনাথ পাহাড়কে ঘিরে ইকো-পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ আপাতত স্থগিত রাখার ব্যাপারে ঝাড়খণ্ড সরকারকে নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। একইসঙ্গে মন্দির চত্বরে মদ্যপান বা মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হওয়ার মতো কোনও কাজ যাতে না হয়, সে ব্যাপারে ঝাড়খণ্ড সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে বলে নির্দেশ দেন তিনি। এরপর কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে, এমন কোনও কাজ আমরা করব না।”

প্রসঙ্গত, জৈনদের অন্যতম পবিত্র তীর্থক্ষেত্র হল ঝাড়খণ্ডের গিরিডি জেলায় পরেশনাথ পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত মন্দিরটি। শ্বেতাম্বর এবং দিগম্বর-জৈনদের উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই এই মন্দির বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের বিশ্বাস, ২৪ জন তীর্থঙ্করের ২০ জনই এখানে মোক্ষলাভ করেছিলেন।

সম্প্রতি পারশনাথ পাহাড়ের উপর অবস্থিত ওই মন্দিরটিকে কেন্দ্র করে ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে ঝাড়খণ্ড সরকার। ইতিমধ্যে সরকারের বদান্যতায় পরেশনাথ পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড়ও বাড়তে শুরু করেছে। যা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে জৈন সম্প্রদায়। তাদের অভিযোগ, পর্যটকদের অত্যধিক ভিড় বাড়ায় মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে। ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে উঠলে মন্দিরের পবিত্রতা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হবে। প্রতিবাদে আন্দোলনেও নামে জৈন সম্প্রদায়ের মানুষজন। ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি মুম্বই, আহমেদাবাদ, ভোপালেও এর প্রভাব পড়ে। রাস্তায় নেমে মিছিল করে জৈন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। যদিও এই আন্দোলনেও পিছু হটেনি ঝাড়খণ্ড সরকার।

অবশেষে এদিন ঝাড়খণ্ড জৈন সম্প্রদায়ের এক প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এবং প্রশ্ন তোলে, মন্দির কি বেড়ানোর জায়গা! এরপরই পরেশনাথ পাহাড় এবং সেখানকার মন্দিরের পবিত্রতা বজায় রাখার ব্যাপারে ঝাড়খণ্ড সরকারকে কড়া নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার।