Kashmiri teacher: গোলা-বারুদের উপত্যকায় ‘ভারতের ইলন মাস্ক’, ১১ বছরের সাধনায় দিলেন এই অভিনব উপহার

সৌরশক্তি চালিত স্বয়ংক্রিয় এক গাড়ি তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিলেন শ্রীনগরের এক স্কুলের গণিতের শিক্ষক বিলাল আহমেদ। তাঁর দাবি, একটু সহায়তা পেলে তিনি ভারতের ইলন মাস্ক হতে পারেন।

Kashmiri teacher: গোলা-বারুদের উপত্যকায় 'ভারতের ইলন মাস্ক', ১১ বছরের সাধনায় দিলেন এই অভিনব উপহার
সৌরশক্তি চালিত সম্পূর্ণ স্বংয়ক্রিয় এই গাড়ি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2022 | 3:32 PM

শ্রীনগর: ক্রমে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। তার উপর জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্কটের সামনে চাহিদা বাড়ছে অপ্রচলতিত শক্তিরও। সকলেই এখন বিকল্প পরিবহনের মাধ্যম খুঁজছেন। বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ইলেকট্রিত গাড়ির। কিন্তু, কাশ্মীরে বসে এরকম কোনও গাড়ি তৈরি করা যায় কি? যে কাশ্মীর উপত্যকা প্রতিদিনের খবরে থাকে নাশকতা এবং জঙ্গি নিধনের জন্য? বিস্ময়কর হলেও, প্রায় এক দশকের প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ সৌর শক্তি চালিত স্বয়ংক্রিয় এক গাড়ি তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিলেন এক কাশ্মীরি স্কুল শিক্ষক।

শ্রীনগরের এক স্কুলে গণিতের শিক্ষা দেন বিলাল আহমেদ। তবে, এখন তিনি তাঁর তৈরি গাড়ির দৌলতে ইন্টারনেট সেনসেশন। অনলাইনে তিনি তাঁর তৈরি গাড়ির ছবি ও ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন। সেই ছবি ও ভিডিয়োগুলিতে দেখা যাচ্ছে, বনেট থেকে শুরু করে পিছনের উইন্ডশিল্ড পর্যন্ত – যেখানে যেখানে জায়গা রয়েছে সেখানেই তিনি সৌর প্যানেল লাগিয়েছেন। বিলাল জানিয়েছেন এগুলি মনোক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল। এগুলি সূর্যের আলো কম থাকলেও সর্বাধিক শক্তি উৎপাদন করে। গাড়িটির দরজাগুলিও সাধারণ গাড়ির মতো নয়, বরং মনে করায় যে কোনও বিলাসবহুল স্পোর্টসকারকে। বনেট, দরজা – সবই খোলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। বেশিরভাগ স্পোর্টস কারে যেখানে মাত্র দুটি আসন থাকে, সেখানে বিলালের তৈরি এই অভিনব গাড়িতে চারজন আরাম করে বসতে পারবেন। আসলে, গাড়িটি তৈরির সময়, একই সঙ্গে তিলি কার্যকারিতার কথা মাথায় রেখেছেন, সেই সঙ্গে শৈলীর ও উদ্ভাবনের এক অদ্ভুত মিশ্রন ঘটিয়েছেন।

রাইজিং কাশ্মীর পত্রিকাকে বিলাল জানিয়েছেন, মার্সিডিজ, ফেরারি বা বিএমডব্লিউ সংস্থার গাড়ি কেনা অধিকাংশ মানুষের কাছে শুধুই স্বপ্ন। মুষ্টিমেয় সংখ্যক মানুষই এই ধরণের বিলাসবহুল গাড়ি কিনতে পারেন। তিনি এমন একটি গাড়ি তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যার দাম হবে সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার মধ্যে। কিন্তু, একই সময়ে তাঁরা মার্সিডিজ-ফেরারির বিলাসকে অনুভব করতে পারবেন। তবে, তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্যটা ছিল অন্য। প্রতিবন্ধীদের চলাফেরার জন্য একটি সৌরশক্তি চালিত যান তৈরি করতে চয়েছিলেন তিনি। তবে, অর্থের অভাবে, তাঁর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে, সেটা হয়নি বলেই এই অভিনব গাড়িটি তৈরি হয়েছে। জ্বালানীর দাম বাড়া নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ লক্ষ্য করেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি, আজ থেকে প্রায় ১১ বছর আগে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম এবং গবেষণার পর, অবশেষে তাঁর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

ভারতে এই মুহূর্তে বৈদ্যুতিক যানকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্সাহ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ইলন মাস্কের টেসলা সংস্থা কবে ভারতে তাদের কাজকর্ম শুরু করবে, সেই আশায় দিন গুনছেন অনেকেই। স্বাভাবিকভাবেই বিলালের তৈরি এই গাড়িটি তাদের নজর কেড়েছে। অনেকেরই মনে পড়েছে মাস্কের কথা। তবে, বিলালের আক্ষেপ, তিনি তাঁর প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনও সাহায্য পাননি। তিনি বলেছেন, ‘প্রকল্পের শুরুতে বটেই, গাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হওয়ার পরও, কেউ আমাকে কোনও আর্থিক সহায়তা দেয়নি। যদি প্রয়োজনীয় সমর্থন পেতাম, তাহলে হয়তো আমি ভারতের ইলন মাস্ক হতাম’। এখনও পর্যন্ত গাড়িটি তৈরি করতে তিনি নিজের পকেট থেকে ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি ব্যয় করেছেন। তবে, তাঁর আশা শীঘ্রই কেউ তাঁর পাশে দাঁড়াবেন। গাড়ি তৈরির একটি নয়া সংস্থা শুরু করতে চান এই কাশ্মীরি শিক্ষক।