Kerala: কেরলে মুসলিম মেয়েদের বিয়ে নিয়ে ষড়যন্ত্র? বামেদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

Kerala Nasar Faizy: সম্প্রতি, কোঝিকোড় এক সভায়, সুন্নি যুবজন সংঘমের সম্পাদক, নাসর ফৈজি অভিযোগ করেছেন, পিনারাই বিজয়নের বাম জোট সরকার রাজ্যে আন্তঃধর্ম বিয়েকে উৎসাহ দিচ্ছে। বাম দলের সঙ্গে যুক্ত ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলি ক্রমাগত এই ধরণের বিয়ের প্রচার করছে। এমনকি, মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করে অমুসলিমদের সঙ্গে বিয়ে দিয় দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

Kerala: কেরলে মুসলিম মেয়েদের বিয়ে নিয়ে ষড়যন্ত্র? বামেদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
প্রতীকী ছবিImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 07, 2023 | 8:28 PM

কোঝিকোড়: দীর্ঘদিন ধরেই কেরলে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ‘লাভ জেহাদ’-এর অভিযোগ করে সেখানকার হিন্দু ও খ্রীষ্টান সংগঠনগুলি। এবার যেন উলট পুরান। মুসলিম মেয়েদের আন্তঃধর্ম বিয়েতে উৎসাহ দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠল রাজ্যের সিপিএম সরকারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি, কোঝিকোড় এক সভায়, সুন্নি যুবজন সংঘমের সম্পাদক, নাসর ফৈজি অভিযোগ করেছেন, পিনারাই বিজয়নের বাম জোট সরকার রাজ্যে আন্তঃধর্ম বিয়েকে উৎসাহ দিচ্ছে। বাম দলের সঙ্গে যুক্ত ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলি ক্রমাগত এই ধরণের বিয়ের প্রচার করছে। এমনকি, মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করে অমুসলিমদের সঙ্গে বিয়ে দিয় দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

কেরলের মুসলিম সংগঠন, সমস্ত কেরল জাম-আইয়াতুল উলেমার যুব শাখা হল সুন্নি যুবজন সংঘম। নাসর বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে সিপিএম মুসলমান মেয়েদের অন্য ধর্মের পুরুষদের সঙ্গে বিয়ে করতে উৎসাহ দিচ্ছে। তিনি বলে, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে তারা আর কী কী করছে, তা রাজ্যের মুসলমান সম্প্রদায়ের জানা দরকার। এই প্রথম সুন্নি মুসলমানদের কোনো প্রভাবশালী সংগঠন, প্রকাশ্যে আন্তঃধর্ম বিয়ের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিল। এতদিন মুসলমানদেরহ বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করত কেরলের হিন্দু ও খ্রিস্টান সংগঠনগুলি, এবার সেই একই অভিযোগই এল মুসলমানদের পক্ষ থেকে। সমস্ত কেরল জাম-আইয়াতুল উলেমা, কেরলের অন্যতম প্রভাবশালী সংগঠন। ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তারা। কেরলে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের সঙ্গে জোটে রয়েছে কংগ্রেস।

কেরলে লাভ জিহাদের অভিযোগ নিয়ে চলতি বছরেই একটি চলচ্চিত্রও তৈরি হয়েছে, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। ছবিটি অবশ্য মুক্তি পাওযার আগে থেকেই এই চলচ্চিত্র নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ছবিটিতে মূলত কেরলের তিন হিন্দু মেয়েকে কীভাবে প্রেমের ফাঁদে ফেলে, ধর্মান্তরিত করিয়ে বিদেশে নিয়ে গিয়ে আইএসআইএস-এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগদান করানো হচ্ছে, তাই দেখানো হয়েছিল। ওই তিন মেয়ের কাহিনি সত্য হলেও, সিনেমায় দাবি করা হয়েছিল কেরলের ৩২,০০০ মহিলার এই একই পরিণতি হয়েছে। তবে, পরে আদালতের নির্দেশে এই মিথ্যা দাবি থেকে সরে আসতে বাধ্য হন সিনেমার নির্মাতারা।

আসলে কেরলে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্ম পরিবর্তনের এই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের পিছনে রয়েছে এই রাজ্যের জনসংখ্যাগত চরিত্র। কেরলে হিন্দুরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় হলেও, সংখ্যালঘুদের জনসংখ্যাও নেহাত কম নয়। কেরলের মোট জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ হল হিন্দু, আর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় ৪৬ শতাংশ। এর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ২৬ শতাংশের কিছু বেশি। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা ১৮ শতাংশের কিছু বেশি। বাকি জনসংখ্যার অর্ধেক জৈন সম্প্রদায়ের এবং বাকিরা অন্যান্য সম্প্রদায়ের। জনসংখ্যার দিক থেকে সম্প্রদায়গুলির মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই বলেই, ধর্ম পরিবর্তনের বিষয়টি এখানে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এই পরিস্থিতিতে নাসর ফৈজির বক্তব্য নিয়ে, রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।