Lahaul-Spiti Trekkers: ‘ফ্রস্টবাইটে’র শিকার ২, স্পিতিতে আটকে পড়া বাঙালি অভিযাত্রী দলকে ফিরিয়ে আনলেন জওয়ানরা
ITBP Rescue operation: অভিযাত্রী দলের ১১ জনকে উদ্ধার করে কাজ়ায় নিয়ে এসেছেন আইটিবিপির জওয়ানরা। কাজ়া হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। দু'জনের মধ্যে ফ্রস্টবাইটের মৃদু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে কাজ়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
নয়াদিল্লি : স্পিতিতে ট্রেক করতে গিয়ে ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় আটকে পড়েছিল বাঙালি অভিযাত্রী দল। মাউন্টেন সিকনেসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন দলের দুই অভিযাত্রী। একজনের বাড়ি ব্যারাকপুরে, অন্যজনের বাড়ি বেলঘড়িয়ায়। বাকি অভিযাত্রী দলের ১১ জনকে উদ্ধার করে কাজ়ায় নিয়ে এসেছেন আইটিবিপির জওয়ানরা। কাজ়া হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। দু’জনের মধ্যে ফ্রস্টবাইটের মৃদু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে কাজ়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
ধর থাঙ্গো থেকে ৪ জন অভিযাত্রী এবং ৭ জন পোর্টারকে উদ্ধার করে প্রথমে কা গ্রামে নিয়ে আসেন আইটিবিপির জওয়ানরা। পরে সেখান থেকে তাঁদের কাজ়ায় নিয়ে আসা হয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁদের কাজ়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়। একজন অভিযাত্রী এবং একজন পোর্টারের শরীরে ফ্রস্টবাইটের লক্ষণ দেখা গিয়েছে। কাজ়া হাসপাতালে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এছাড়া দুই মৃত অভিযাত্রীর দেহ এবং চার জন পোর্টারকে হিমবাহের কাছে থেকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদেরকেও বেস ক্যাম্প পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। দুই অভিযাত্রীর দেহ নিয়ে এই দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটেই নিচে নেমে আসেন আইটিবিপির অভিযাত্রীরা। হিমবাহের কাছে যেখানে দুই অভিযাত্রীর দেহ পাওয়া গিয়েছে, সেখান থেকে আইটিবিপির বেস ক্যাম্পের দূরত্ব ২৭ কিলোমিটার।
অভিযাত্রী দলে মোট ১৭ জন সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন অভিযাত্রী, ১ জন শেরপা এবং ১০ জন স্থানীয় পোর্টার ছিলেন। অভিযাত্রী দলের ডেপুটি লিডার অন্য এক অভিযাত্রীর সঙ্গে উদ্ধারের সাহায্য চাইতে ২৭ সেপ্টেম্বর আইটিবিপি ক্যাম্পে পৌঁছেছিলেন। তাঁরাই জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর মানালি থেকে অভিযান শুরু হয়েছিল। ২৫ সেপ্টেম্বর, যখন অভিযাত্রী দলটি খামেঞ্জার পাস থেকে নামছিল, তখন তাঁদের দলের ২ জন সদস্য- সন্দীপ কুমার ঠাকুরতা (৪৮) এবং ভাস্কর দেব মুখোপাধ্যায় (৬১) মাউন্টেন সিকনেসের কারণে মারা যান। দুজনেই উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘড়িয়ায় বাসিন্দা।
আইটিবিপি জওয়ান, কাজ়ার স্থানীয় প্রশাসন এবং ওই এলাকায় মোতায়েন সেনাবাহিনীর জওয়ানরা যৌথভাবে একটি উদ্ধারকারী দল গঠন করেন। একটি উদ্ধার অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল ভোর ৩ টের থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন তাঁরা। উদ্ধারকারী দলে ছিলেন আইটিবিপির ১৭ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা, সেনার জওয়ানরা, স্থানীয় পোর্টার এবং স্থানীয় পুলিশের প্রতিনিধিরা।
পিন ভ্যালির কা গ্রাম থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। বেলঘড়িয়ার দুই অভিযাত্রীর দেহ এবং আটকে পড়া অন্যান্য অভিযাত্রী ও কুলিদের উদ্ধার করতে কয়েক দিন সময় লাগবে। উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে ছিল সমস্ত প্রয়োজনীয় পর্বতারোহণ সরঞ্জাম, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং অন্যান্য উদ্ধার সরঞ্জাম।
উদ্ধার অভিযানের প্রথম ধাপে কা গ্রাম থেকে চক ধর পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ধাপ চক ধর থেকে ধর থাঙ্গো পর্যন্ত করা হয়। তৃতীয় পর্যায়টি হবে ধর থাঙ্গো থেকে স্পট ৫৩৫৪ পর্যন্ত। এই স্পট ৫৩৫৪-এই অভিযাত্রী দলটি আটকে ছিল বলে প্রথমে অনুমান করা হচ্ছিল। পরে অবশ্য আজ তাঁদের ধর থাঙ্গো থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Belghoria: মায়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার আগেই পাহাড়ে প্রাণ হারালেন বেলঘড়িয়ার সন্দীপ!