নতুন প্রজাতি রুখতে টিকাকরণের ব্যবধান কমানো প্রয়োজন, চাঞ্চল্যকর দাবি ল্যানসেট গবেষণায়

ল্যানসেটের গবেষণায় দুটি ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান কমালে বেশি কার্যকারিতা পাওয়া বলে দাবি করা হলেও ভারতে সম্পূর্ণ বিপরীত নীতিতেই টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলছে। সম্প্রতিই প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান ছয় থেকে আট সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করা হয়েছে।

নতুন প্রজাতি রুখতে টিকাকরণের ব্যবধান কমানো প্রয়োজন, চাঞ্চল্যকর দাবি ল্যানসেট গবেষণায়
ফাইল চিত্র। ছবি:PTI
Follow Us:
| Updated on: Jun 05, 2021 | 7:06 AM

নয়া দিল্লি: টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা ফাইজ়ার ভারতে প্রথম খোঁজ মেলা ডেল্টা প্রজাতি রুখতে কার্যকর বলে দাবি করলেও গবেষণায় সম্পূর্ণ বিপরীত তথ্যই সামনে এল। ল্যানসেট জার্নালের একটি নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ফাইজ়ারের ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের আসল স্ট্রেনের তুলনায় অভিযোজিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট রুখতে তুলনামূলকভাবে কম কার্যকর।

এক টিকাতেই দেহে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি নিয়েও যে দাবি করা হয়েছে, তা ভুল বলেই দাবি করা হয়েছে ল্যানসেটের গবেষণায়। সেখানে দেখা গিয়েছে, যে সমস্ত ব্যক্তিরা করোনা টিকার কেবলমাত্র একচি ডোজ় নিয়েছেন, তাদের দেহে নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম তৈরি হয়েছে।

ল্যানসেটের গবেষকদের দাবি, ফাইজ়ারের একটি ডোজ় নেওয়াকর পর ৭৯ শতাংশ মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের আসল স্ট্রেনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও, বি.১.১.৭ বা আলফা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে মাত্র ৫০ শতাংশের দেহেই অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। ভারতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে তা ৩২ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম খোঁজ মেলা বি.১.৩৫১ ভ্যারিয়েট, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিভাষায় বেটা ভ্যারিয়েন্ট নামে পরিচিত, তার বিরুদ্ধে কেবল ২৫ শতাংশ মানুষের দেহেই অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম।

সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়তে যেমন দ্রুত টিকাকরণের প্রয়োজন, তেমনই ভাল কার্যকারিতা পেতে দুটি টিকার মধ্যে ব্যবধান কমানোর প্রয়োজন বলেও জানানো হয়েছে ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে। এই বিষয়ে এক গবেষক বলেন, “আমাদের গবেষণার ফলাফলে দেখা গিয়েছে, দ্রুত করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ় দিয়ে দেওয়াই উচিত। এরফলে যাদের দেহে নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারাও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকবে।”

উল্লেখ্য, ল্যানসেটের গবেষণায় দুটি ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান কমালে বেশি কার্যকারিতা পাওয়া বলে দাবি করা হলেও ভারতে সম্পূর্ণ বিপরীত নীতিতেই টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলছে। সম্প্রতিই প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান ছয় থেকে আট সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম ডোজ় প্রয়োগের পর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ার সময় দিতেই এই ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘টিকা নষ্টের হার এখনও বেশি’, রিভিউ বৈঠকে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর